Friday, October 16, 2020

আল্লাহ এর মারেফত তথ্য (সংগহে সংকলিত) সুরা নাজিয়াত-২১. বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম ওয়াফী আনফুসিকুম আফালা তুবস্বিরুন। তাফসীর-ই-ওয়াজীহ (কাব্যিক তাফসীর) আমি আহকার!! শামছুদ্দীন হাসেমী ******************** ১. ও যার আপন খবর আপনার হয়না ও যার আপন খবর আপনার হয়না একবার আপনারে চিনতে পারলে রে... যাবে অচেনারে চেনা যাবে অচেনারে চেনা ও সাঁ ই নিকট থেকে দূরে দেখা.... যেমন কেশের আড়ে পাহাড় লুকায় দেখ্না আমি ঘুরে এলাম সারা জগত রে .. তবু মনের গোল তো যায়না। ২. কে কথা কয় রে দেখা দেয় না? নড়ে চড়ে হাতের কাছে খুঁজলে জনমভর মেলে না।। খুঁজি তারে আসমান জমিন আমারে চিনি না আমি, এ বিষম ভ্রমের ভ্রমি আমি কোন্‌ জন, সে কোন্‌ জনা।। হাতের কাছে হয় না খবর, কি দেখতে যাও দিল্লির শহর! সিরাজ সাঁই কয়, লালন রে তোর সদাই মনের ঘোর গেল না।। ৩. আল্লাহ্ কে বোঝে তোমার অপার লীলা কে বোঝে তোমার অপার লীলে। তুমি আপনি আল্লাহ ডাকো আল্লাহ বলে। নিরাকারের তরে তুমি নুরী ছিলে ডিম্ব অবতরী। সাকারে সৃজন গড়লে ত্রিভুবন আকারে চমৎকার ভাব দেখালে। নিরাকার নিগম ধ্বনি তাও তো সত্য সবাই জানি।। তুমি আগমের ফুল নিগমে রসুল আদমের ধড়ে জান হইলে। আত্ম তত্ত্ব জানে যাঁরা শাঁইর নিগূঢ় লীলা দেখছে তাঁরা।। নীড় নিরঞ্জন অকৈথ্য সাধন ।। লালন খুঁজে বেড়ায় বনজঙ্গলে। ৪. অনেক ভাগ্যের ফলে সে চাঁদ কেউ দেখিতে পায়। অমাবস্যে নাইরে চাঁদে দ্বি-দলে তার কিরণ উদয়।। বিন্দু মাঝে সিন্ধু-বারি মাঝখানে তার স্বর্ণগিরি অধর চাঁদের শূন্যপুরী সেহি তো তিল-প্রমাণ জায়গায়।। যেথা রে সে চন্দ্র ভুবন দিবারাত্রির নাই অম্বেষণ কোটি চন্দ্র জিনি কিরণ বিজলি সঞ্চারে সদায়।। দরশনে দুঃখ হরে পরশনে পরশ করে এমনি সে চান্দের মহিমে লালন ডুবে ডোবে না তায়।। অনেক ভাগ্যের ফলে সে চাঁদ কেউ দেখিতে পায় অনেক ভাগ্যের ফলে চাঁদ কেউ দেখিতে পায়। অমাবস্যা নেই সে চাঁদে দ্বিদলে তার বারাম উদয়।। যেথা রে সে চন্দ্র-ভুবন দিবারাত্রি নাই আলাপন কোটি চন্দ্র জিনি কিরণ বিজলি চঞ্চলা সদায়।। বিন্দুনালে সিন্ধু-বারি মাঝখানে তার স্বর্ণগিরি অধর চাঁদের স্বর্গপুরী সেহি তো তিনি প্রমাণ জায়গায়।। দরশনে দুঃখ হরে পরশনে সোনা করে এমনি মহিমা সে চাঁদের লালন ডুবে ডোবে না তায়।। ৫. আমি কোথায় পাব তারে আমার মনের মানুষ যে রে – হারায়ে সেই মানুষে তার উদ্দেশে দেশ বিদেশে বেড়াই ঘুরে। লাগি সেই হৃদয়শশী সদা প্রাণ হয় উদাসী পেলে মন হত খুশি দেখতাম নয়ন ভরে। আমি প্রেমানলে মরছি জ্বলে নিভাই অনল কেমন করে মরি হায় হায় রে ও তার বিচ্ছেদে প্রাণ কেমন করে ওরে দেখ না তোরা হৃদয় চিরে। দিব তার তুলনা কি যার প্রেমে জগৎ সুখী হেরিলে জুড়ায় আঁখি সামান্যে কি দেখিতে পারে তারে যে দেখেছে সেই মজেছে ছাই দিয়ে সংসারে। মরি হায় হায় রে – ও সে না জানি কি কুহক জানে অলক্ষ্যে মন চুরি করে। কুল মান সব গেল রে তবু না পেলাম তারে প্রেমের লেশ নাই অন্তরে – তাইতে মোরে দেয় না দেখা সে রে। ও তার বসত কোথায় না জেনে তায় গগন ভেবে মরে মরি হায় হায় রে – ও সে মানুষের উদ্দিশ যদি জানুস কৃপা করে আমার সুহৃদ হয়ে ব্যথায় ব্যথিত হয়ে আমায় বলে দে রে। ----------------গগন হরকরা ৬. গুরুর দয়া যারে হয় সেই জানে। যে রূপে সাঁই বিরাজ করে দেহ ভুবনে।। শহরে সহস্র পাড়া তিনটি পথ তার এক মহড়া। আলেক সওয়ার পবন ঘোড়া ফিরছে সেইখানে।। জলের বিম্ব আলের উপর আখন্ড প্রলয়ের মাঝার। যার বিন্দুতে হয় সিন্ধু তাহার ধারা বয় ত্রিগুণে।। হাতের কাছে আলেক শহর রঙবেরঙের উঠছে লহর। সিরাজ সাঁই কয় লালন রে তোর সদাই ঘোর মনে।। আমি ঐ চরণে দাসের যোগ্য নই। নইলে মোর দশা কি এমন হয়।। ভাব জানিনে প্রেম জানিনে দাসী হতে চাই চরণে। ভাব দিয়ে ভাব নিলে মনে সেই সে রাঙ্গা চরণ পায়।। নিজগুনে পদারবিন্দু দেন যদি সাঁই দীনবন্ধু তবে তরি ভবসিন্ধু নইলে না দেখি উপায়।। অহল্যা পাষানী ছিল প্রভুর চরণ ধূলায় মানব হলো। লালন পথে পড়ে র’লো যা করে সাঁই দয়াময়।। কে কথা কয় রে দেখা দেয় না? নড়ে চড়ে হাতের কাছে খুঁজলে জনমভর মেলে না।। খুঁজি তারে আসমান জমিন আমারে চিনি না আমি, এ বিষম ভ্রমের ভ্রমি আমি কোন্‌ জন, সে কোন্‌ জনা।। হাতের কাছে হয় না খবর, কি দেখতে যাও দিল্লির শহর! সিরাজ সাঁই কয়, লালন রে তোর সদাই মনের ঘোর গেল না।। ৭. আমার হয় না রে সে মনের মত মন ।। কিসে জানবো সেই রাগের কারণ আমি জানবো কি সে রাগের কারণ আমার হয় না রে সে মনের মত মন ।। পড়ে রিপু ইন্দ্রিয় ভোলে মন বেড়ায় রে ডালে আলে ।। দুই মনে এক মন হইলে ।। এড়াই শমন ।। হয় না রে সে মনের মত মন । আমার হয় না রে সে মনের মত মন । রসিক ভক্ত যারা মনে মন মিশালো তারা ।। শাসন করে তিনটি ধারা ।। পেল রতন তারা পেল রতন হয় না রে সে মনের মত মন । আমার হয় না রে সে মনের মত মন । কবে হবে নাগিনী বস সাধবো কবে অমৃত-রস ।। দরবেশ সিরাজ সাঁই কয়, বিষে বিনাশ ।। হলি লালন ।। হয় না রে সে মনের মত মন । আমার হয় না রে সে মনের মত মন । কিসে জানবো সেই রাগের কারণ ও কিসে জানবো সেই রাগের কারণ হয় না রে সে মনের মত মন । আমার হয় না রে সে মনের মত মন । ৮. আছেন কোথায় স্বর্গপুরে কেউ নাহি সন্ধান জানে কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে? আছেন কোথায় স্বর্গপুরে কেউ নাহি সন্ধান জানে কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে? জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে পৃথিবী গোলাকার শুনি-অহর্নিশি ঘোরে আপনি তাইতে হয়,তাইতে হয় দিন-রজনী, জ্ঞানী-গুনী তাই মানে কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে? জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে আরেকদিকে নিশি হলে অন্যদিকে দিবা বলে একদিকে নিশি হলে অন্যদিকে দিবা বলে আকাশতো দেখে সকলে,খোদা দেখে কয়জনে? কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে? জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে। আপন ঘরে কে কথা কয় না জেনে আসমানে তাকায় লালন বলে লালন বলে কেবা কোথায় বুঝিবে দিব্যজ্ঞানে কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে? আছেন কোথায় স্বর্গপুরে কেউ নাহি সন্ধান জানে কেন জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে? জিজ্ঞাসিলে খোদার কথা দেখায় আসমানে। ৯. শুনিলে প্রাণ চমকে উঠে দেখতে যেমন ভুজঙ্গনা ।। যেখানে সাঁইর বারামখানা যা ছুঁইলে প্রাণে মরি এ জগতে তাইতে তরী বুঝেও তা বুঝতে নারী কীর্তিকর্মার কি কারখানা । আত্নতত্ত্ব যে জেনেছে দিব্যজ্ঞানী সেই হয়েছে কুবৃক্ষে সুফল পেয়েছে আমার মনের ঘোর গেল না ।। যে ধনে উৎপত্তি প্রাণধন সে ধনের হল না যতন অকালের ফল পাকায় লালন দেখে শুনে জ্ঞান হল না ।। ১০. ধন্য ধন্য বলি তারে বেঁধেছে এমন ঘর শূন্যের উপর ফটকা করে।। সবে মাত্র একটি খুঁটি খুঁটির গোড়ায় নাইকো মাটি, কিসে ঘর রবে খাঁটি ঝড়ি-তুফান এলে পরে।। মূলাধার কুঠরি নয় টা তার উপরে চিলে-কোঠা তাহে এক পাগলা বেটা বসে একা একেশ্বরে।। উপর নীচে সারি সারি সাড়ে নয় দরজা তারি লালন কয় যেতে পারি কোন্‌ দরজা খুলে ঘরে।। ১১. খাঁচার ভিতর অচিন পাখি কেমনে আসে যায় তারে ধরতে পারলে মন বেড়ি দিতাম পাখির পায়ে। আট কুঠুরী নয় দরজা আটা মধ্যে মধ্যে ঝরকা কাঁটা তার উপরে সদর কোঠা আয়না মহল তায়ে। কপালের ফের নইলে কি আর পাখিটির এমন ব্যবহার খাঁচা ভেঙ্গে পাখিয়ামার কোন খানে পালায়। মন তুই রইলি খাঁচার আসে খাঁচা যে তোর কাঁচা বাঁশের কোন দিন খাঁচা পড়বে খসে ফকির লালন কেঁদে কয়। ১২. আমি অপার হয়ে বসে আছি ও হে দয়াময়, পারে লয়ে যাও আমায়।। আমি একা রইলাম ঘাটে ভানু সে বসিল পাটে- (আমি) তোমা বিনে ঘোর সংকটে না দেখি উপায়।। নাই আমার ভজন-সাধন চিরদিন কুপথে গমন- নাম শুনেছি পতিত-পাবন তাইতে দিই দোহাই।। অগতির না দিলে গতি ঐ নামে রবে অখ্যাতি- লালন কয়, অকুলের পতি কে বলবে তোমায়।। ১৩. মিলন হবে কত দিনে আমার মনের মানুষের সনে।। চাতক প্রায় অহর্নিশি চেয়ে আছি কালো শশী হব বলে চরণ-দাসী, ও তা হয় না কপাল-গুণে।। মেঘের বিদ্যুৎ মেঘেই যেমন লুকালে না পাই অন্বেষণ, কালারে হারায়ে তেমন ঐ রূপ হেরি এ দর্পণে।। যখন ও-রূপ স্মরণ হয়, থাকে না লোক-লজ্জার ভয়- লালন ফকির ভেবে বলে সদাই (ঐ) প্রেম যে করে সে জানে।। ১৪. সহজ মানুষ ভজে দেখনারে মন দিব্যজ্ঞানে পাবিরে অমূল্য নিধি বর্তমানে ভজ মানুষের চরণ দুটি নিত্য বস্তু হবে খাঁটি মরিলে সব হবে মাটি ত্বরায় এই ভেদ লও জেনে শুনি ম’লে পাবো বেহেস্তখানা তা শুনে তো মন মানে না বাকির লোভে নগদ পাওনা কে ছাড়ে এই ভুবনে আচ্ছালাতুল মেরাজুল মোমেনীনা জানতে হয় নামাজের বেনা বিশ্বাসীদের দেখাশুনা লালন কয় এই ভুবনে ১৫. সময় গেলে সাধন হবে না দিন থাকতে দ্বীনের সাধন কেন জানলে না তুমি কেন জানলে না সময় গেলে সাধন হবে না জানো না মন খালে বিলে থাকে না মিল জল শুকালে ।। কি হবে আর বাঁধা দিলে মোহনা শুকনা থাকে, মোহনা শুকনা থাকে, সময় গেলে সাধন হবে না সময় গেলে সাধন হবে না অসময়ে কৃষি কইরে মিছা মিছি খেইটে মরে গাছ যদি হয় বীজের জোরে ফল ধরে না তাতে ফল ধরে না, সময় গেলে সাধন হবে না ।। অমাবস্যায় পূর্নিমা হয় মহা জোগ সে দিনের উদয় ।। লালোন বলে তাহার সময় দনডোমো রয় না, দনডোমো রয় না,দনডোমো রয় না সময় গেলে সাধন হবে না দিন থাকতে দ্বীনের সাধন কেন জানলে না তুমি কেন জানলে না সময় গেলে সাধোন হবে না ১৬. অনায়াসে দেখতে পাবি কোনখানে সাঁইর বারামখানা। আপন ঘরের খবর লে না। অনায়াসে দেখতে পাবি কোনখানে সাঁইর বারামখানা।। আমি কোমল ফোটা কারে বলি কোন মোকাম তার কোথায় গলি ।। সেইখানে পইড়ে ফুলি মধু খায় সে অলি জনা।। সুখ্য জ্ঞান যার ঐক্য মুখ্য সাধক এর উপলক্ষ ।। অপরূপ তার বৃক্ষ দেখলে চক্ষের পাপ থাকে না।। শুষ্ক নদীর শুষ্ক সরোবর তিলে তিলে হয় গো সাঁতার ।। লালন কয়, কীর্তি-কর্মার কি কারখানা।। ১৭. নবী না চিনলে সেকি খোদার ভেদ পায় চিনিতে বলেছেন খোদে সেই দয়াময়।। কোন নবী হইল ওফাত কোন নবী বান্দার হায়াত নিহাজ করে জানলে নেহাত যাবে সংশয়।। যে নবী পারের কান্ডার জিন্দা সে চার যুগের উপর হায়াতুল মুরছালিন নাম তার সেই জন্য কয়।। যে নবী আজ সঙ্গে তোরো চিনে মন তার দাওন ধরো লালন বলে পারের কারো সাধ যদি রয়।। ১৮. জানতে হয় আদম ছফির আদ্য কথা না দেখে আজাজিল সেরূপ কীরূপ আদম গঠলেন সেথা আনিয়ে জেদ্দার মাটি … গঠলেন বোরখা পরিপাটি মিথ্যা নয় সে কথা খাঁটি কোন চিজে তার গঠলেন আত্মা সেই যে আদমের ধড়ে অনন্ত কুঠরি গড়ে মাঝখানে হাতনে কল জুড়ে কীর্তিকর্মা বসলেন সেথা আদমি হইলে আদম চেনে ঠিক নামায় সে দেল-কোরানে লালন কয় সিরাজ সাঁইর গুণে আদম অধর ধরার সুতা এ বড় আজব কুদরতি আঠার মোকামের মাঝে জ্বলছে একটি রূপের বাতি কিবা রে কুদরতি খেলা জলের মাঝে অগ্নি-জ্বালা খবর জানতে হয় নিরালা নীরে ক্ষীরে আছে জ্যোতি ফণিমনি লাল জহরে সে বাতি রেখেছে ঘিরে তিন সময় তিন যোগ সেই ঘরে যে জানে সে মহারতি থাকতে বাতি উজালাময় দেখতে যার বাসনা হৃদয় লালন কয়, কখন কোন সময় অন্ধকার হবে বসতি। ১৯. মনেরে আর বুঝাই কিসে ভবযাতনা আমার জ্ঞানচক্ষু আঁধার। ঘিরিলোরে যেমন রাহুতে এসে।। যেমন বনে আগুন লাগে দেখে সর্বলোকে। মন-আগুন কে দেখে মনকুঠো ফেঁসে।। এ সংসারে বিধি বড় বল ধরে কর্মফাঁসে বেন্ধে মারিল আমারে। কারে শুধাই এসব কথা কে ঘুচাবে ব্যথা। মনাগুনে মন দগ্ধ হতেছে।। ভবে আসা আমার মিথ্যা আসা হলো অসার ভাবিয়া সকলই ফুরালো। পূর্বে যে সুকৃতি ছিলো পেলাম তার ফল আর না জানি কি হয় অবশেষে।। গুনে আনি দেওয়া হয়ে যায়রে কুয়ো তেমনি মতো আমার সকল কার্য ভুয়ো লালন ফকির সদাই দিচ্ছে গুরুর দোহাই আর যেন না আসি এমন দেশে।। ২০. আর কি হবে এমন জনম !! বসব রে সাধু মিলে !! আর কি হবে এমন জনম... হেলায় হেলায় দিন বয়ে যায় !! হেলায় হেলায় দিন বয়ে যায়, ঘিরে নিলো কালে... আর কি হবে এমন জনম, বসব রে সাধু মিলে !! কত শত লক্ষ যনি, ভ্রমন করেছো জানি, মানব কুলে মন রে তুমি !! মানব কুলে মন রে তুমি, এসে কি করিলে... আর কি হবে এমন জনম, বসব রে সাধু মিলে !! মানব জনমের আশায়, দেব দেবতাগণ বাঞ্চিত হয় !! হেনো জনম দিন দয়াময় !! হেনো জনম দিন দয়াময়, দিয়েছো কোন ফলে... আর কি হবে এমন জনম, বসব রে সাধু মিলে !! ভুলো না রে মন রসনা, সমঝে কর বেচা কেনা !! লালওওওওওওওওওওওওওওওওওওওওন লালন বলে কুল পাবে না !! লালন বলে কুল পাবে, এবার ঠকে গেলে... আর কি হবে এমন জনম, বসব রে সাধু মিলে !! হেলায় হেলায় দিন বয়ে যায় !! হেলায় হেলায় দিন বয়ে যায়, ঘিরে নিলো কালে... আর কি হবে এমন জনম, বসব রে সাধু মিলে !! ২১. গুরুর দয়া যারে হয় সেই জানে। যে রূপে সাঁই বিরাজ করে দেহ ভুবনে।। শহরে সহস্র পাড়া তিনটি পথ তার এক মহড়া। আলেক সওয়ার পবন ঘোড়া ফিরছে সেইখানে।। জলের বিম্ব আলের উপর আখন্ড প্রলয়ের মাঝার। যার বিন্দুতে হয় সিন্ধু তাহার ধারা বয় ত্রিগুণে।। হাতের কাছে আলেক শহর রঙবেরঙের উঠছে লহর। সিরাজ সাঁই কয় লালন রে তোর সদাই ঘোর মনে।। ২২. সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে ।। লালন কয় জাতের কী রূপ আমি দেখলাম না দুই নজরে। সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে ।। কেউ মালা’য় কেউ তছবি গলায়, তাইতে যে জাত ভিন্ন বলায় যাওয়া কিম্বা আসার বেলায় জাতের চিহ্ন রয় কার রে সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে ।। যদি ছুন্নত দিলে হয় মুসলমান, নারীর তবে কি হয় বিধান, বামণ চিনি পৈতা প্রমাণ, বামণি চিনে কিসে রে সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে ।। জগত্ বেড়ে জেতের কথা, লোকে গৌরব করে যথা তথা লালন সে জেতের ফাতা ঘুচিয়াছে সাধ বাজারে’ সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে ।। ২৩. বাড়ির কাছে আরশী নগর (একঘর) সেথা পড়শী বসত করে- আমি একদিনও না দেখিলাম তারে।। গেরাম বেড়ে অগাধ পানি নাই কিনারা নাই তরণী পারে, বাঞ্ছা করি দেখব তারে (আমি) কেমনে সেথা যাই রে।। কি বলব পড়শীর কথা, হস্ত পদ স্কন্ধ মাথা নাই-রে ক্ষণেক থাকে শূণ্যের উপর (ওসে) ক্ষণেক ভাসে নীরে।। পড়শী যদি আমায় ছুঁতো, যম যাতনা সকল যেতো দূরে। সে আর লালন একখানে রয়- (তবু) লক্ষ যোজন ফাঁক রে।। ২৪. জাত গেল জাত গেল বলে একি আজব কারখানা সত্য কাজে কেউ নয় রাজি সবি দেখি তা না-না-না।। আসবার কালে কি জাত ছিলে এসে তুমি কি জাত নিলে, কি জাত হবা যাবার কালে সে কথা ভেবে বল না।। ব্রাহ্মণ চন্ডাল চামার মুচি এক জলেই সব হয় গো শুচি, দেখে শুনে হয় না রুচি যমে তো কাকেও ছাড়বে না।। গোপনে যে বেশ্যার ভাত খায়, তাতে ধর্মের কি ক্ষতি হয়। লালন বলে জাত কারে কয় এ ভ্রম তো গেল না।। ২৫. সহজ মানুষ ভজে দেখনারে মন দিব্যজ্ঞানে পাবিরে অমূল্য নিধি বর্তমানে ভজ মানুষের চরণ দুটি নিত্য বস্তু হবে খাঁটি মরিলে সব হবে মাটি ত্বরায় এই ভেদ লও জেনে শুনি ম’লে পাবো বেহেস্তখানা তা শুনে তো মন মানে না বাকির লোভে নগদ পাওনা কে ছাড়ে এই ভুবনে আচ্ছালাতুল মেরাজুল মোমেনীনা জানতে হয় নামাজের বেনা বিশ্বাসীদের দেখাশুনা লালন কয় এই ভুবনে ২৬. তিন পাগলে হলো মেলা নদে এসে তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে ।। একটা পাগলামি করে জাত দেয় সে অজাতেরে দৌড়ে গিয়ে আবার হরি বলে পড়ছে ঢলে ধূলার মাঝে ।। একটা নারকেলের মালা তাতে জল তোলা ফেলা করঙ্গ সে পাগলের সঙ্গে যাবি পাগল হবি বুঝবি শেষে ।। পাগলের নামটি এমন বলিতে অধীন লালন হয় তরাসে চৈতে নিতে অদ্বৈ পাগল নাম ধরে সে ।। তোরা কেউ যাসনে ও পাগলের কাছে….. !! ২৭. পাবে সামান্যে কি তার দেখা (ওরে) বেদে নাই যার রূপ-রেখা।। কেউ বলে, পরম মিষ্টি কারো না হইল দৃষ্টি।। বরাতে দুনিয়া সৃষ্টি ।। তাই নিয়ে লেখাজোখা। (ওরে) তাই নিয়ে লেখাজোখা। নিরাকার ব্রহ্ম হয় সে সদাই ফেরে অচিন দেশে।। দোসর তাই নাইকো পাশে।। ফেরে সে একা একা। (ওরে) ফেরে সে একা একা। কিঞ্চিৎ ধ্যানে মহাদেব, সে তুলনা কি আর দেবো।। লালন বলে, গুরু ভাবো যাবে রে মনের ধোঁকা। (ওরে) যাবে রে মনের ধোঁকা।। ২৮. মিশবি যদি জাত ছেফাতে এদিন আখেরের দিনে কররে পিয়ালা কবুল শুদ্ধ ঈমানে।। পিলে নুরের পিয়ালা খুলে যাবে রাগের তালা অচিন মানুষের খেলা দেখবিরে দুই নয়নে। ধর তরি যা পারি নুরি চিনরে সেই নুর জহরি এহি চার পিয়ালা ভারি আছে অতি গোপনে। ফানাফি শেখ ফানাফি রাসুল ফানাফিল্লা ফানা বাকাই কুল এহি চার মোকামে লালন ভজ মুর্শিদ নির্জনে।। ২৯. চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি ভেদ-পরিচয় দেয় না আমায় ঐ খেদে ঝরে আঁখি আমার ঐ খেদে ঝরে আঁখি।। পাখি বুলি বলে শুনতে পাই রূপ কেমন তা দেখিনা ভাই বিষম ঘোর দেখি। আমি বিষম ঘোর দেখি। কোন দিন জানি উড়ে যাবে ধুলো দিয়ে দুই চোখই।। পোষা পাখি চিনলাম না এ লজ্জা তো যাবে না উপায় কি করি আমি উপায় কি করি।। চিনাল পেলে চিনে নিতাম যেতো মনের ধুকধুকি।। আছে নয় দরজা খাঁচাতে যায় আসে পাখি কোন পথে চোখে দিয়ে রে ভেল্কি আমার দিয়ে রে ভেল্কি। সিরাজ সাঁই কয় বয় লালন বয় ফাঁদ পেতে রে সিঁদমুখী।। ৩০. কী সন্ধানে যাই সেখানে মনের মানুষ যেখানে । আঁধার ঘরে জ্বলছে বাতি দিবারাতি নাই সেখানে ।। যেতে পথে কামনদীতে পাড়ি দিতে ত্রিবিনে ।। কত ধনীর ভারা যাচ্ছে মারা ।। পইড়ে নদীর তোড় তুফানে । দেখো পইড়ে নদীর তোড় তুফানে । রসিক যাঁরা চতুর তাঁরা তাঁরাই নদীর ধারা চেনে ।। উজান তরী যাচ্ছে বেয়ে ।। তাঁরাই স্বরূপ সাধন জানে । ওরে তাঁরাই স্বরূপ সাধন জানে ।। লালন বলে ম’লাম জ্বইলে ম’লাম আমি নিশিদিনে ।। আমি মনি হারা ফনির মতন ।। হারা হলেম দিন নিধনে আমি হারা হলেম দিন নিধনে । আঁধার ঘরে জ্বলছে বাতি দিবারাতি নাই সেখানে ।। দেখো দিবারাতি নাই সেখানে ।। মনের মানুষ যেখানে । কী সন্ধানে যাই সেখানে মনের মানুষ যেখানে । ৩১. ভজ মুশিদের কদম এই বেলা চার পিয়ালা হৃদ কমলা ক্রমে হবে উজ্জ্বলা ।। নবীজির খানদানেতে পিয়ালা চারি মতে জেনে নাও দিন থাকিতে ওরে আমার মন ভোলা ।। কোথারে আবহায়াত নদী ধারা বয় নিরবধি সে ধারা ধরবি যদি দেখবিরে অটলের খেলা ।। ঔপারে কে আনিল ওপার কে নেবে বল লালন কয় তারে ভোল করে অবহেলা। ৩২. পরের জাগা পরের জমিন ঘর বানাইয়া আমি রয়, আমি তো সেই ঘরের মালিক নই। ঘরখানা যার জমিদারী, আমি পায় না তাহার হুকুম জারি, আমি পাই না জমিদারের দেখা, মনের দুঃখ কারে কয়? আমি তো সেই ঘরের মালিক নই। পরের জাগা পরের জমিন ঘর বানাইয়া আমি রয়, আমি তো সেয় ঘরের মালিক নই। জমিধারের ইচ্ছেমত দেই না জমি ধার, তাইতো ফসল ফলে না রে দুঃখ বারো মাস, আমি খাজনা-পাতি সবি দিলাম, তবু জমি আমার হইবে নিলাম, আমি চলি যে তার মন যুগায়া, যা খিলায় তা মিলে না সই, আমি তো সেই ঘরের মালিক নই। পরের জাগা পরের জমিন ঘর বানাইয়া আমি রয়, আমি তো সেয় ঘরের মালিক নই। – শ্রদ্ধেয় আব্দুল আলিমের গান

No comments:

Post a Comment