▆ হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এর হাকীকত কি জাতীতে মানব ▆
প্রশ্ন: আমাদের
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ‘জাতীতে মানব’ বলা যাবে কি?
প্রশ্ন: হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাকীকত কি মানব জাতীর অন্তর্ভূক্ত?
প্রশ্ন: জনৈক আলেম ওয়াজ করতে এসে নবীজীকে জাতীতে মানুষ বলেছেন। এ ব্যাপারে কুরআন শরীফের সূরা তাওবার ১২৮ নং আয়াত এবং তাফসীরে রুহুল বায়ান থেকে দলীল দিয়েছেন। কিন্তু আমরা সুন্নী আলেমদের থেকে শুনেছি যে, নবীজী মূলতঃ নূর এবং তিনি মানব ছুরতে এসেছেন। এ বিষয়ে সঠিক ফায়সালা কি? কুরআন-হাদীস থেকে দলীলসহ জানালে কৃতজ্ঞ হব।
(এ ব্যাপারে আরো অনেকভাবে প্রশ্ন এসে থাকে। সবগুলোর মূলকথা উল্লেখিত প্রশ্নতেই রয়েছে বিধায় তা উল্লেখ করা হয়নি।)
জবাবঃ
প্রশ্ন: হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাকীকত কি মানব জাতীর অন্তর্ভূক্ত?
প্রশ্ন: জনৈক আলেম ওয়াজ করতে এসে নবীজীকে জাতীতে মানুষ বলেছেন। এ ব্যাপারে কুরআন শরীফের সূরা তাওবার ১২৮ নং আয়াত এবং তাফসীরে রুহুল বায়ান থেকে দলীল দিয়েছেন। কিন্তু আমরা সুন্নী আলেমদের থেকে শুনেছি যে, নবীজী মূলতঃ নূর এবং তিনি মানব ছুরতে এসেছেন। এ বিষয়ে সঠিক ফায়সালা কি? কুরআন-হাদীস থেকে দলীলসহ জানালে কৃতজ্ঞ হব।
(এ ব্যাপারে আরো অনেকভাবে প্রশ্ন এসে থাকে। সবগুলোর মূলকথা উল্লেখিত প্রশ্নতেই রয়েছে বিধায় তা উল্লেখ করা হয়নি।)
জবাবঃ
بسم
الله الرحمن الرحيم
نحمده
ونصلى ونسلم على رسوله الكريم
সকল সৃষ্টির অস্তিত্ব লাভের ওসিলা সৃষ্টির মূল রাসূল মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম এর পবিত্র সত্ত্বা আল্লাহ পাকের এমন সৃষ্টি যা মহান রবের গর্বের চাঁদর। স্রষ্টা হিসেবে আল্লাহ অতুলনীয় আর তাঁরই সৃষ্টি হিসেবে তুলনাহীন নবীয়ে কায়েনাত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অতুলনীয় সৃষ্টি সে মহান সত্ত্বার পবিত্র জাত (জিনস) প্রকৃতই কি মানব (বাশার)? তাঁকে কি বাশার বা মানব বলে সম্বোধন করা যাবে? এক্ষেত্রে আকল (বিবেক)-কে প্রাধান্য না দিয়ে নকল (কুরআন-সুন্নাহর ইবারত)-কে প্রাধান্য দিতে হবে। কারন ইসলাম-আক্বীদা শুধু মাত্র আকল দিয়ে অনুধাবনের বিষয় নয় বরং তা ওহীর উপর নির্ভরশীল। অতএব বিষয়টি আলেকপাত করার প্রয়াস পাচ্ছি এ কঠিন বাস্তবতাটিকে মাথায় রেখেই। আল্লাহর নিকট তাওফীক কামনা করছি এবং পানাহ্ চাচ্ছি স্বীয় নফসের প্ররোচনা থেকে।
অনাদি-অনন্ত মহান সত্ত্বা রব তা‘আলা একাই ছিলেন, ছিলেন গুপ্ত। ইচ্ছা করলেন নিজেকে প্রকাশ করার, সে অনুযায়ী সৃষ্টি করলেন গোটা সৃষ্টি জগত। আর এ সকল সৃষ্টির কেন্দ্র বানিয়েছেন যাকে, যাকে করেছেন সকল সৃষ্টি অস্তিত্বে আসার মাধ্যম তিনি হুযুর সাইয়্যেদে আলম সরকারে কায়েনাত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন- وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالأِنْسَ إِلاَّ لِيَعْبُدُونِ ‘আমি জ্বীন এবং মানবকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদাতের জন্য।’
[সূরা যারিয়াত: ৫৬]
সকল সৃষ্টির অস্তিত্ব লাভের ওসিলা সৃষ্টির মূল রাসূল মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম এর পবিত্র সত্ত্বা আল্লাহ পাকের এমন সৃষ্টি যা মহান রবের গর্বের চাঁদর। স্রষ্টা হিসেবে আল্লাহ অতুলনীয় আর তাঁরই সৃষ্টি হিসেবে তুলনাহীন নবীয়ে কায়েনাত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। অতুলনীয় সৃষ্টি সে মহান সত্ত্বার পবিত্র জাত (জিনস) প্রকৃতই কি মানব (বাশার)? তাঁকে কি বাশার বা মানব বলে সম্বোধন করা যাবে? এক্ষেত্রে আকল (বিবেক)-কে প্রাধান্য না দিয়ে নকল (কুরআন-সুন্নাহর ইবারত)-কে প্রাধান্য দিতে হবে। কারন ইসলাম-আক্বীদা শুধু মাত্র আকল দিয়ে অনুধাবনের বিষয় নয় বরং তা ওহীর উপর নির্ভরশীল। অতএব বিষয়টি আলেকপাত করার প্রয়াস পাচ্ছি এ কঠিন বাস্তবতাটিকে মাথায় রেখেই। আল্লাহর নিকট তাওফীক কামনা করছি এবং পানাহ্ চাচ্ছি স্বীয় নফসের প্ররোচনা থেকে।
অনাদি-অনন্ত মহান সত্ত্বা রব তা‘আলা একাই ছিলেন, ছিলেন গুপ্ত। ইচ্ছা করলেন নিজেকে প্রকাশ করার, সে অনুযায়ী সৃষ্টি করলেন গোটা সৃষ্টি জগত। আর এ সকল সৃষ্টির কেন্দ্র বানিয়েছেন যাকে, যাকে করেছেন সকল সৃষ্টি অস্তিত্বে আসার মাধ্যম তিনি হুযুর সাইয়্যেদে আলম সরকারে কায়েনাত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন- وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالأِنْسَ إِلاَّ لِيَعْبُدُونِ ‘আমি জ্বীন এবং মানবকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদাতের জন্য।’
[সূরা যারিয়াত: ৫৬]
তাফসীরঃ
এ আয়াতের তাফসীরে আল্লামা মাহমুদ আলুসী বাগদাদী একটি হাদিসে কুদছীর উদৃতি দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
এ আয়াতের তাফসীরে আল্লামা মাহমুদ আলুসী বাগদাদী একটি হাদিসে কুদছীর উদৃতি দিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
كنت
كنزا مخفيا فأحببت أن أعرف فخلقت الخلق لاعرف
অর্থাৎঃ ‘আমি ছিলাম সুপ্ত গুপ্ত ভান্ডার,
পছন্দ করলাম
পরিচিত হতে। এতএব পরিচয়ের জন্য সৃষ্টি করলাম এক সৃষ্টিকে।’
[তাফসীর সূত্র সমূহঃ আল্লামা আলুসী, রুহুল মা‘আনী: ২৭ পারা, ২২ পৃষ্ঠা; শায়খ ইবনু আরাবী, ফুতুহাতে মাক্কিয়া: ১৪২; আল্লামা আবু সাউদ উমাদি, আবু সাউদ: ২/১৩০।]
আর সে সৃষ্টি ধারার সর্ব প্রথম সৃষ্টি যিনি, যাকে আবর্তন করে অন্যান্য সকল সৃষ্টি, তিনি কে- এ বিষয়ে প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ এবং হাদীস যাচাই-বাছাইয়ে অত্যন্ত কঠোরনীতি অবলম্বনকারী ইমাম ইবনু জাওযী বিশিষ্ট তাবেয়ী কা‘ব আহবার থেকে একটি হাদীস নকল করেছেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
[তাফসীর সূত্র সমূহঃ আল্লামা আলুসী, রুহুল মা‘আনী: ২৭ পারা, ২২ পৃষ্ঠা; শায়খ ইবনু আরাবী, ফুতুহাতে মাক্কিয়া: ১৪২; আল্লামা আবু সাউদ উমাদি, আবু সাউদ: ২/১৩০।]
আর সে সৃষ্টি ধারার সর্ব প্রথম সৃষ্টি যিনি, যাকে আবর্তন করে অন্যান্য সকল সৃষ্টি, তিনি কে- এ বিষয়ে প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ এবং হাদীস যাচাই-বাছাইয়ে অত্যন্ত কঠোরনীতি অবলম্বনকারী ইমাম ইবনু জাওযী বিশিষ্ট তাবেয়ী কা‘ব আহবার থেকে একটি হাদীস নকল করেছেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
عن
كعب الأحبار رضى الله عنه أنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لما أراد
الله سبحانه وتعالى خلق المخلوقات وخفض الأرضين ورفع السموات قبض قبضةً من نوره
سبحانه وتعالى وقال لها كونى محمداً صلى الله عليه وسلم فصارت تلك القبضة عموداً
من نور فسجد ورفع راسه وقال : الحمدلله فقال الله تعالى لأجل هذا خلقتك وسميتك
محمداً فبك أبدأ المخلوقات وبك أختم الرسل
অর্থাৎঃ ‘আল্লাহ তা‘আলা যখন সকল সৃষ্টিকে সৃষ্টি করতে ইচ্ছা
করলেন এবং জমিনকে নিচে ও আসমানকে উপরস্থ করতে, (তখন) তিনি নিজ নূর হতে মুষ্ঠি নূর নিলেন এবং এর উদ্দেশ্যে বললেন (স্বীয় নূরের বিচ্ছুরনকে সম্বোধন করলেন)- তুমি মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হয়ে যাও। অতঃপর ঐ নূরের বিচ্ছুরন এক নূরানী সত্ত্বায় সৃষ্টি হয়ে সিজদায় পতিত
হয়ে গেলেন। অনন্তর সিজদা হতে তাঁর
মাথা মুবারক
উত্তোলন করতঃ বললেন আলহামদুলিল্লাহ (সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর)। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা ঘোষণা করলেন, এজন্যইতো আপনাকে সৃষ্টি করলাম এবং নাম
রাখলাম মুহাম্মদ
(সর্বাধিক প্রশংসিত)। আপনার মাধ্যমে সৃষ্টি রাজির সুচনা করব এবং আপনার দ্বারাই রিসালাতের সমাপ্তি ঘটাবো।’
[সূত্রঃ ইমাম ইবনু জাওযী, আল মাওলিদুল আরুস: ১৬; ইমাম আবদুর রহমান ছাফুরী শাফেয়ী, নুজহাতুল মাজালিস: ১/২৫২, ইবনে আব্বাস হতে।]
অনুরূপ মারফূ‘-মুত্তাসিল সূত্রে হুযুর পাকের একনিষ্ঠ খাদেম ও মদীনার ৬ষ্ঠ সাহাবী হযরত জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত-
[সূত্রঃ ইমাম ইবনু জাওযী, আল মাওলিদুল আরুস: ১৬; ইমাম আবদুর রহমান ছাফুরী শাফেয়ী, নুজহাতুল মাজালিস: ১/২৫২, ইবনে আব্বাস হতে।]
অনুরূপ মারফূ‘-মুত্তাসিল সূত্রে হুযুর পাকের একনিষ্ঠ খাদেম ও মদীনার ৬ষ্ঠ সাহাবী হযরত জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত-
قال
سألت رسول الله صلى الله عليه وسلم عن اول شئ خلقه الله تعالى فقال هو نور نبيك يا
جابر خلقه الله
অর্থাৎঃ
‘হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট আরয করলাম যে, আল্লাহ্ তা‘আলা সবকিছুর পূর্বে সর্বপ্রথম কি সৃষ্টি করেছেন? জবাবে আল্লাহ’র রাসূল বললেন- হে জাবের, আল্লাহ্ সর্বপ্রথম তোমার নবীর নূরকে সৃষ্টি করেছেন।’
[সূত্রঃ ইমাম আবদুর রাযযাক, আল-মুসান্নাফ, আল-জুযউল মাফকুদ মিনাল জুযইল আওয়াল: ০১/৬৩, ছাপা: দুবাই থেকে ড. ঈসা বিন আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মদ বিন মানে‘ আল হিমইয়ারী’র তাহক্বীক্ব সম্বলিত, ২০০৫ইং।]
উক্ত হাদীসটি ‘আল মুসান্নাফ’ কিতাবে ইমাম আবদুর রাযযাক মুত্তাসিল ও মারফূ‘ সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি স্বয়ং ইমাম বুখারীর দাদা উস্তাদ এবং ইমাম মালেকের ছাত্র। পরবর্তীতে এ হাদীসখানা উক্ত মুসান্নাফ এর সূত্রে কিছু শব্দগত পার্থক্যসহ প্রায় পঞ্চাশোর্ধ হাদীস বিশারদগণ তাঁদের স্ব-স্ব গ্রন্থেও সন্নিবেশিত করেন। তন্মধ্যে কয়েকটি হল-
১) শারেহে বুখারী ইমাম কাসতালানী’র আল মাওয়াহেবুল লাদুনিয়াহ্: ১/৭২।
২) আল্লামা ইউসুফ নাব্হানী রচিত আনোয়ারে মুহাম্মদীয়াহ্: ৯।
৩) ইমাম যারকানী এর শারহুল মাওয়াহেব: ১/৮৯।
৪) ইমাম বায়হাকী রচিত দালায়েলুন্ নবূয়াত: ১৩/৬৩।
৫) আল্লামা আযলুনীর কাশফুল খফা: ১/৩১১।
৬) ইমাম বুরহানুদ্দীন হালাবীর ইনসানুল উয়ূন: ১/৩৭।
৭) ইমাম ইবনু হাজার হাইতামীর ফাতাওয়ায়ে হাদীছিয়্যাহ: ৪৪।
৮) আল্লামা ফাসী এর মাতালিউল মাসরাত: ২১।
৯) আল্লামা আব্দুল হক মুহাদ্দেসে দেহলবী কৃত মাদারেজুন্নবুয়াত।
১০) আ‘লা হযরত ইমাম আহমাদ রেযা খান রচিত সালাতুস্ সফা ফী নূরিল মুস্তফা: ৫।
১১) নূর অস্বীকারকারীদের মান্যবর আশরাফ আলী থানবী এর নশরুত্বীব: ৯, প্রভৃতি।
আল্লামা ইমাম কাসতালানী আল মাওয়াহেবুল লাদুনিয়ায় ‘মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক’ এর সূত্রেই উক্ত হাদীস শরীফটি নিম্নোক্ত শব্দে বর্ণনা করেন- নূর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে সম্বোধন করে বলেন-
‘হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট আরয করলাম যে, আল্লাহ্ তা‘আলা সবকিছুর পূর্বে সর্বপ্রথম কি সৃষ্টি করেছেন? জবাবে আল্লাহ’র রাসূল বললেন- হে জাবের, আল্লাহ্ সর্বপ্রথম তোমার নবীর নূরকে সৃষ্টি করেছেন।’
[সূত্রঃ ইমাম আবদুর রাযযাক, আল-মুসান্নাফ, আল-জুযউল মাফকুদ মিনাল জুযইল আওয়াল: ০১/৬৩, ছাপা: দুবাই থেকে ড. ঈসা বিন আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মদ বিন মানে‘ আল হিমইয়ারী’র তাহক্বীক্ব সম্বলিত, ২০০৫ইং।]
উক্ত হাদীসটি ‘আল মুসান্নাফ’ কিতাবে ইমাম আবদুর রাযযাক মুত্তাসিল ও মারফূ‘ সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি স্বয়ং ইমাম বুখারীর দাদা উস্তাদ এবং ইমাম মালেকের ছাত্র। পরবর্তীতে এ হাদীসখানা উক্ত মুসান্নাফ এর সূত্রে কিছু শব্দগত পার্থক্যসহ প্রায় পঞ্চাশোর্ধ হাদীস বিশারদগণ তাঁদের স্ব-স্ব গ্রন্থেও সন্নিবেশিত করেন। তন্মধ্যে কয়েকটি হল-
১) শারেহে বুখারী ইমাম কাসতালানী’র আল মাওয়াহেবুল লাদুনিয়াহ্: ১/৭২।
২) আল্লামা ইউসুফ নাব্হানী রচিত আনোয়ারে মুহাম্মদীয়াহ্: ৯।
৩) ইমাম যারকানী এর শারহুল মাওয়াহেব: ১/৮৯।
৪) ইমাম বায়হাকী রচিত দালায়েলুন্ নবূয়াত: ১৩/৬৩।
৫) আল্লামা আযলুনীর কাশফুল খফা: ১/৩১১।
৬) ইমাম বুরহানুদ্দীন হালাবীর ইনসানুল উয়ূন: ১/৩৭।
৭) ইমাম ইবনু হাজার হাইতামীর ফাতাওয়ায়ে হাদীছিয়্যাহ: ৪৪।
৮) আল্লামা ফাসী এর মাতালিউল মাসরাত: ২১।
৯) আল্লামা আব্দুল হক মুহাদ্দেসে দেহলবী কৃত মাদারেজুন্নবুয়াত।
১০) আ‘লা হযরত ইমাম আহমাদ রেযা খান রচিত সালাতুস্ সফা ফী নূরিল মুস্তফা: ৫।
১১) নূর অস্বীকারকারীদের মান্যবর আশরাফ আলী থানবী এর নশরুত্বীব: ৯, প্রভৃতি।
আল্লামা ইমাম কাসতালানী আল মাওয়াহেবুল লাদুনিয়ায় ‘মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক’ এর সূত্রেই উক্ত হাদীস শরীফটি নিম্নোক্ত শব্দে বর্ণনা করেন- নূর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত জাবির রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে সম্বোধন করে বলেন-
يا
جابر ان الله تعالى قد خلق قبل الاشياء نور نبيك من نوره
অর্থাৎঃ
‘হে জাবির! নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা সমুদয় বস্তুর পূর্বে তাঁর নূর থেকে তোমার নবীর নূর সৃষ্টি করেছেন।’
[সূত্রঃ ইমাম কাসতালানী, আল মাওয়াহেবুল লাদুনিয়াহ্: ১/৭২।]
আল্লামা যারকানী আলাইহির রাহমাহ এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন- ﻣﻦ ﻧﻮﺭﻩ ﺍﻯ ﻣﻦ ﻧﻮﺭ ﻫﻮ ﺫﺍﺗﻪ (আল্লাহ তা‘আলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঐ নূর থেকে সৃষ্টি করেছেন যা عين ذات الهى আল্লাহর প্রকৃত যাত অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় যাত থেকে কোন মাধ্যম ছাড়াই সৃষ্টি করেছেন)।
[সূত্রঃ ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ১/৮৯; আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা।]
অতএব, উল্লেখিত উদৃতিসমূহ হতে বুঝা গেল যে, হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই হলেন রবের সর্ব প্রথম সৃষ্টি আর সবকিছু মূলতঃ তাঁর থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা হলেন সত্ত্বাগত নূর (সৃষ্টি বা উপমাযোগ্য নয় বরং কাদীমী নূর)। আর সেই যাতী নূরের জ্যোতি হতেই নূরে মুহাম্মদী পয়দা। সাথে তাও বুঝাগেল যে, তখনও হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি বিশেষ আকৃতিতে ছিলেন। কারন হুযুর পাকের সিজদা করা এবং সিজদা থেকে মাথা মুবারক উঠানোর কথা স্পষ্ট এসেছে।
হযরত আদম আলাইহিস সালাম হলেন মানব জাতীর পিতা এবং সর্ব প্রথম মানুষ। আর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁরও অনেক পূর্বে সৃষ্টি। এ ব্যাপারে আরও একটি স্পষ্ট বর্ণনা পাওয়া যায় হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে মারফূ‘ সূত্রে। নবীজী ইরশাদ করেন-
‘হে জাবির! নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা সমুদয় বস্তুর পূর্বে তাঁর নূর থেকে তোমার নবীর নূর সৃষ্টি করেছেন।’
[সূত্রঃ ইমাম কাসতালানী, আল মাওয়াহেবুল লাদুনিয়াহ্: ১/৭২।]
আল্লামা যারকানী আলাইহির রাহমাহ এ হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন- ﻣﻦ ﻧﻮﺭﻩ ﺍﻯ ﻣﻦ ﻧﻮﺭ ﻫﻮ ﺫﺍﺗﻪ (আল্লাহ তা‘আলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ঐ নূর থেকে সৃষ্টি করেছেন যা عين ذات الهى আল্লাহর প্রকৃত যাত অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় যাত থেকে কোন মাধ্যম ছাড়াই সৃষ্টি করেছেন)।
[সূত্রঃ ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ১/৮৯; আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা।]
অতএব, উল্লেখিত উদৃতিসমূহ হতে বুঝা গেল যে, হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই হলেন রবের সর্ব প্রথম সৃষ্টি আর সবকিছু মূলতঃ তাঁর থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা হলেন সত্ত্বাগত নূর (সৃষ্টি বা উপমাযোগ্য নয় বরং কাদীমী নূর)। আর সেই যাতী নূরের জ্যোতি হতেই নূরে মুহাম্মদী পয়দা। সাথে তাও বুঝাগেল যে, তখনও হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি বিশেষ আকৃতিতে ছিলেন। কারন হুযুর পাকের সিজদা করা এবং সিজদা থেকে মাথা মুবারক উঠানোর কথা স্পষ্ট এসেছে।
হযরত আদম আলাইহিস সালাম হলেন মানব জাতীর পিতা এবং সর্ব প্রথম মানুষ। আর নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁরও অনেক পূর্বে সৃষ্টি। এ ব্যাপারে আরও একটি স্পষ্ট বর্ণনা পাওয়া যায় হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে মারফূ‘ সূত্রে। নবীজী ইরশাদ করেন-
عن
علي قال: قال رسول الله: كنت نورا بين يدي ربي عز وجل قبل ان يخلق آدم بأربعة عشر
ألف عام
‘আমি আদম সৃষ্টির চৌদ্দ হাজার বছর পূর্বে আমার রবের নিকট নূর রূপে ছিলাম।’
[সূত্রঃ ইমাম কাসতালানী, আল-মাওয়াহেব: ১/৭৪; ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ১/৯৫; ইমাম বুরহানুদ্দীন হালাবী, সিরাতে হালবীয়া: ১/৩০; ইমাম আযলুনী, কাশফুল খফা: ১/২৩৭; ইবনু কাছির, আল-বেদায়া ওয়ান-নেহায়া: ২/৪০২।]
আল্লামা ইমাম ফাসী তাঁর ‘মাতালিউল মাসরাত’ কিতাবে বর্ণনা করেন, ইমামে আহলে সুন্নাত আবুল হাসান আশ‘আরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-
‘আমি আদম সৃষ্টির চৌদ্দ হাজার বছর পূর্বে আমার রবের নিকট নূর রূপে ছিলাম।’
[সূত্রঃ ইমাম কাসতালানী, আল-মাওয়াহেব: ১/৭৪; ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ১/৯৫; ইমাম বুরহানুদ্দীন হালাবী, সিরাতে হালবীয়া: ১/৩০; ইমাম আযলুনী, কাশফুল খফা: ১/২৩৭; ইবনু কাছির, আল-বেদায়া ওয়ান-নেহায়া: ২/৪০২।]
আল্লামা ইমাম ফাসী তাঁর ‘মাতালিউল মাসরাত’ কিতাবে বর্ণনা করেন, ইমামে আহলে সুন্নাত আবুল হাসান আশ‘আরী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-
انه
تعالى نور ليس كالانوار والروح القدسية لمعة من نوره والملائكة شرر تلك الانوار
وقال صلى الله عليه و سلم اول ما خلق الله نورى ومن نورى خلق كل شئ
অর্থাৎঃ আল্লাহ তা‘আলা নূর, তবে অন্য কোন নূরের মত নন। আর নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর
পবিত্র রূহ্ সে নূরেরই ফয়য বা
জ্যোতি। আর
ফেরেশ্তাগণ ঐ জ্যোতিরই ফুল। হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- “আল্লাহ সর্বপ্রথম আমার নূরকে সৃষ্টি করেছেন,
আর আমার নূর হতেই সবকিছু সৃষ্টি করেছেন”।
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, সালাতুচ্ছফা ফী নূরিল মুস্তফা: ০৩।]
আ‘লা হযরত শাহ ইমাম আহমাদ রেযা খান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, সালাতুচ্ছফা ফী নূরিল মুস্তফা: ০৩।]
আ‘লা হযরত শাহ ইমাম আহমাদ রেযা খান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-
ﻧﻮﺭ
ﻣﺤﻤﺪﯼ ﺟﺐ ﻗﺪﯾﻢ ﺍﻭﺭ ﺍﺯﻟﯽ ﻧﻮﺭ ﮐﯽ ﭘﮩﻠﯽ ﺗﺠﻠﯽ ﮨﮯ ﺗﻮ ﮐﺎﺋﻨﺎﺕ ﻣﯿﮟ ﺑﮭﯽ ﺍﻟﻠﮧ ﺗﻌﺎﻟﯽ ﮐﮯ ﻭﺟﻮﺩ
ﮐﺎ ﻭﮬﯽ ﺳﺐ ﺳﮯ ﭘﮩﻠﮧ ﻣﻈﮭﺮ ﮨﮯ
অর্থাৎঃ
‘নূরে মুহাম্মদী যখন নূরে কাদীম ও নূরে আযালী তথা আল্লাহর যাতের প্রথম তাজাল্লী। কাজেই সৃষ্টিসমূহের মধ্যেও তিনিই হলেন আল্লাহ তা‘আলার ওজুদ বা অস্তিত্বের প্রথম প্রকাশ।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা।]
আ‘লা হযরত শাহ ইমাম আহমাদ রেযা খান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু আরো বলেন-
‘নূরে মুহাম্মদী যখন নূরে কাদীম ও নূরে আযালী তথা আল্লাহর যাতের প্রথম তাজাল্লী। কাজেই সৃষ্টিসমূহের মধ্যেও তিনিই হলেন আল্লাহ তা‘আলার ওজুদ বা অস্তিত্বের প্রথম প্রকাশ।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা।]
আ‘লা হযরত শাহ ইমাম আহমাদ রেযা খান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু আরো বলেন-
حضور
پر نور سيد عالم صلي الله عليه وسلم بلاشبہ اللہ عز وجل کے نور ذاتی سے پیدا ہین
অর্থাৎঃ
‘হুযুর পুর নূর সাইয়্যেদে আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিঃসন্দেহে আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা এর যাতী নূর থেকে সৃষ্টি।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা।]
‘আল্লাহর প্রকৃত যাত (عين ذات الهى) থেকে সৃষ্টি’ এর দ্বারা কি উদ্দেশ্য- এ ব্যাপারে আ‘লা হযরত কিবলা বলেন-
‘হুযুর পুর নূর সাইয়্যেদে আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিঃসন্দেহে আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা এর যাতী নূর থেকে সৃষ্টি।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা।]
‘আল্লাহর প্রকৃত যাত (عين ذات الهى) থেকে সৃষ্টি’ এর দ্বারা কি উদ্দেশ্য- এ ব্যাপারে আ‘লা হযরত কিবলা বলেন-
ﮬﺎﮞ
ﻋﯿﻦ ﺫﺍﺕ ﺍﻟﮭﯽ ﺳﮯ ﭘﯿﺪﺍ ﮨﻮﻧﮯ ﮐﮯ ﯾﮧ ﻣﻌﻨﯽ ﻧﮩﯿﮟ ﮐﮧ ﻣﻌﺎﺫ ﺍﻟﻠﮧ ﺫﺍﺕ ﺍﻟﮭﯽ ﺫﺍﺕ ﺭﺳﺎﻟﺖ ﮐﮯ ﻟﮱ
ﻣﺎﺩﮦ ﮨﮯ ﺟﯿﺴﮯ ﻣﭩﯽ ﺳﮯ ﺍﻧﺴﺎﻥ ﭘﯿﺪﺍ ﮨﻮﺍ ﯾﺎ ﻋﯿﺎﺫ ﺑﺎﻟﻠﮧ ﺫﺍﺕ ﺍﻟﮭﯽ ﮐﺎ ﮐﻮئى ﺣﺼﮧ ﯾﺎ ﮐﻞ ﺫﺍﺕ
ﻧﺒﯽ ﮨﻮﮔﯿﺎ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﺰ ﻭﺟﻞ ﺣﺼﮯ ﺍﻭﺭ ﭨﮑﺮﮮ ﺍﻭﺭ ﮐﺴﯽ ﮐﮯ ﺳﺎﺗﮧ ﻣﺘﺤﺪ ﮨﻮﺟﺎﻧﮯ ﯾﺎ ﮐﺴﯽ ﻣﯿﮟ ﺣﻠﻮﻝ
ﻓﺮﻣﺎﻧﮯ ﺳﮯ ﭘﺎﮎ ﻭﻣﻨﺰﮦ ﮨﮯ ﺣﻀﻮﺭ ﺳﯿﺪ ﻋﺎﻟﻢ ﺻﻠﯽ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﻠﯿﮧ ﻭﺳﻠﻢ ﺧﻮﺍﮦ ﮐﺴﯽ ﺷﺊ ﮐﻮ ﺟﺰﺀ ﺫﺍﺕ
ﺍﻟﮭﯽ ﺧﻮﺍﮦ ﮐﺴﯽ ﻣﺨﻠﻮﻕ ﮐﻮ ﻋﯿﻦ ﻭﻧﻔﺲ ﺫﺍﺕ ﺍﻟﮭﯽ ﻣﺎﻧﻨﺎ ﮐﻔﺮ ﮨﮯ
অর্থাৎঃ
‘আইনে যাতে এলাহী বা আল্লাহর প্রকৃত যাত থেকে সৃষ্টি হওয়ার অর্থ এ নয় যে, (আল্লাহর পানাহ!) আল্লাহর যাত রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যাত সৃষ্টির জন্য মাদ্দা বা মূল ধাতু, যেমন মাটি দ্বারা মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে। অথবা (নাউজুবিল্লাহ!) এর অর্থ এটাও নয় যে, আল্লাহর যাতের কোন অংশ বা আল্লাহর পূর্ণ যাত বা সত্ত্বা নবী হয়ে গিয়েছেন। মহান আল্লাহ অংশ, টুকরো এবং কোন কিছুর সাথে একাকার হয়ে যাওয়া অথবা কোন বস্তুর মধ্যে হুলুল (ভর করা বা একীভূত) হওয়া থেকে পবিত্র। হুযুর সাইয়্যেদে আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনকি কোন বস্তুকে আল্লাহর যাতের অংশ এমনকি কোন সৃষ্টিকে প্রকৃত যাত ও নফসে যাতে এলাহী মানা বা আক্বিদা রাখা কুফুরী।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা।]
সুতরাং আল্লাহর প্রকৃত যাত (عين ذات الهى) থেকে সৃষ্টি এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, কোন মাধ্যম ছাড়াই আল্লাহ তা‘আলার যাতের তাজাল্লী। এ ব্যাপারে আ‘লা হযরত কিবলা আরো বলেন-
‘আইনে যাতে এলাহী বা আল্লাহর প্রকৃত যাত থেকে সৃষ্টি হওয়ার অর্থ এ নয় যে, (আল্লাহর পানাহ!) আল্লাহর যাত রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যাত সৃষ্টির জন্য মাদ্দা বা মূল ধাতু, যেমন মাটি দ্বারা মানুষ সৃষ্টি করা হয়েছে। অথবা (নাউজুবিল্লাহ!) এর অর্থ এটাও নয় যে, আল্লাহর যাতের কোন অংশ বা আল্লাহর পূর্ণ যাত বা সত্ত্বা নবী হয়ে গিয়েছেন। মহান আল্লাহ অংশ, টুকরো এবং কোন কিছুর সাথে একাকার হয়ে যাওয়া অথবা কোন বস্তুর মধ্যে হুলুল (ভর করা বা একীভূত) হওয়া থেকে পবিত্র। হুযুর সাইয়্যেদে আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনকি কোন বস্তুকে আল্লাহর যাতের অংশ এমনকি কোন সৃষ্টিকে প্রকৃত যাত ও নফসে যাতে এলাহী মানা বা আক্বিদা রাখা কুফুরী।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা।]
সুতরাং আল্লাহর প্রকৃত যাত (عين ذات الهى) থেকে সৃষ্টি এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল, কোন মাধ্যম ছাড়াই আল্লাহ তা‘আলার যাতের তাজাল্লী। এ ব্যাপারে আ‘লা হযরত কিবলা আরো বলেন-
ﺍﻟﻠﮧ
ﺗﻌﺎﻟﯽ ﻧﮯ ﻣﺤﻤﺪ ﺻﻠﯽ ﺍﻟﻠﮧ ﻋﻠﯿﮧ ﻭﺳﻠﻢ ﮐﯽ ﺫﺍﺕ ﭘﺎﮎ ﮐﻮ ﺍﭘﻨﯽ ﺫﺍﺕ ﮐﺮﯾﻢ ﺳﮯ ﭘﯿﺪﺍﮐﯿﺎ ﯾﻌﻨﯽ
ﻋﯿﻦ ﺫﺍﺕ ﮐﯽ ﺗﺠﻠﯽ ﺑﻼ ﻭﺍﺳﻄﮧ ﮨﻤﺎﺭﮮ ﺣﻀﻮﺭ ﮨﯿﮟ ﺑﺎﻗﯽ ﺳﺐ ﮨﻤﺎﺭﮮ ﺣﻀﻮﺭ ﮐﮯ ﻧﻮﺭ ﻭﻇﮭﻮﺭ ﮨﯿﮟ
অর্থাৎঃ
‘আল্লাহ তা‘আলা হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র সত্বাকে স্বীয় যাতে করীম থেকে সৃষ্টি করেছেন, এর অর্থ হল- কোন মাধ্যম ছাড়াই আল্লাহ পাকের প্রকৃত যাতের তাজাল্লী আমাদের হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আর বাকী সব আমাদের হুযুরের নূরে প্রকাশ।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা।]
অতএব, হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিঃসন্দেহে আল্লাহ পাকের যাতী নূর থেকে সৃষ্টি তথা তিনি কোন মাধ্যম ছাড়াই আল্লাহর জাতী নূরের ফয়য বা জ্যোতি (বিচ্ছুরন) এবং তিনিই আল্লাহ পাকের প্রথম তাজাল্লী।
আবার ‘হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর নূর থেকে’ এ ইযাফত বা সম্বন্ধটি নবীজীর বিশেষ মর্যাদার প্রতিও নির্দেশ করে। তখন এ ইযাফতটিকে ইযাফতে তাশরীফী বা সম্মানসূচক সম্বন্ধ বলা হবে। যেমন আল্লামা ইমাম যারকানী লিখেন-
‘আল্লাহ তা‘আলা হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র সত্বাকে স্বীয় যাতে করীম থেকে সৃষ্টি করেছেন, এর অর্থ হল- কোন মাধ্যম ছাড়াই আল্লাহ পাকের প্রকৃত যাতের তাজাল্লী আমাদের হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আর বাকী সব আমাদের হুযুরের নূরে প্রকাশ।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা।]
অতএব, হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিঃসন্দেহে আল্লাহ পাকের যাতী নূর থেকে সৃষ্টি তথা তিনি কোন মাধ্যম ছাড়াই আল্লাহর জাতী নূরের ফয়য বা জ্যোতি (বিচ্ছুরন) এবং তিনিই আল্লাহ পাকের প্রথম তাজাল্লী।
আবার ‘হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর নূর থেকে’ এ ইযাফত বা সম্বন্ধটি নবীজীর বিশেষ মর্যাদার প্রতিও নির্দেশ করে। তখন এ ইযাফতটিকে ইযাফতে তাশরীফী বা সম্মানসূচক সম্বন্ধ বলা হবে। যেমন আল্লামা ইমাম যারকানী লিখেন-
من
نوره اضافة تشريف واشعار بانه خلق عجيب وان له شانا مناسبة ما الى الحضرة الربوبية
على حد قوله تعالى ونفخ فيه من روحه
অর্থাৎঃ ‘মিন নূরিহী’ তথা ‘তাঁর (আল্লাহর) নূর হতে’ এটি ইযাফাতে তাশরীফিয়াহ বা সম্মানসূচক সম্বন্ধ। কাজেই
এর দ্বারা এটা বুঝিয়ে দেয়া
উদ্দেশ্য যে, নূরে মুহাম্মদী সৃষ্টি জগতের এক আশ্চর্য বস্তু। তাঁর একটি পৃথক মর্যাদা রয়েছে আল্লাহ পাকের দরবারে।
যেমনটি প্রমান করে আল্লাহর ঐ
বাণী- ونفخ فيه من روحه ‘আদম আলাইহিস সালামের দেহ মুবারকে তাঁর
(আল্লাহর) রূহ ফুঁকলেন’।
[সূত্রঃ ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ১/৮৯।]
এছাড়াও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘তারকা’র আকৃতিতে দীর্ঘকাল ছিলেন। যেমন হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে-
[সূত্রঃ ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ১/৮৯।]
এছাড়াও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘তারকা’র আকৃতিতে দীর্ঘকাল ছিলেন। যেমন হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত যে-
عن
أبي هريرة رضي الله تعالى عنه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم سأل جبريل عليه
الصلاة والسلام فقال يا جبريل كم عمرت من السنين؟ فقال يا رسول الله لست أعلم،
غير أن في الحجاب الرابع نجما يطلع في كل سبعين ألف سنة مرة، رأيته اثنين
وسبعين ألف مرة فقال: يا جبريل وعزة ربي جل جلاله أنا ذلك الكوكب
অর্থাৎঃ
‘নিশ্চয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক বার জিব্রাঈল আলাইহিস সালামকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার বয়স কত? জিব্রাঈল আরয করলেন, আল্লাহর কসম (আমার বয়সের ব্যাপারে) এটা ছাড়া আমি জানিনা যে, চতুর্থ পর্দায় (আসমানে) একটি তারকা প্রতি সত্তর হাজার বছর পর একবার উদিত হতো আর তা আমি বাহাত্তর হাজার বার দেখেছি। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- হে জিব্রাঈল, আমার রবের ইজ্জতের কসম আমি-ই ছিলাম সেই তারকা।’
[সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৩/৫৪৩; ইমাম বুরহানুদ্দীন হালাবী, সিরাতে হালবীয়া: ১/৪৯; আল্লামা ইউসূফ নাবহানী, জাওয়াহিরুল বিহার: ৭৭৬।]
আবার ইমাম গাযযালী সনদ বিহীন এবং ইমাম আবদুর রাযযাক হযরত সায়েব বিন ইয়াযীদ থেকে মাকতূ‘ সনদে (সাহাবীর বাণী হিসেবে) বর্ণনা করেছেন যে, “নূরে মুহাম্মদীকে আল্লাহ ময়ূরের আকৃতিতে সৃষ্টি করতঃ শ্বেত শুভ্রপাত্রে রেখে চার শাখা বিশিষ্ঠ সাজারাতুল ইয়াক্বিন নামক বৃক্ষে স্থাপন করলেন। এ অবস্থায় তিনি একাধারে সত্তর হাজার বছর আল্লাহর তাসবীহ-তাহলীলে মাশগুল থাকেন।”
[সূত্রঃ ইমাম গাযযালী, দাকায়েকুল আখবার: ৯; ইমাম আবদুর রাযযাক, আল মুসান্নাফ, আল জুযউল মাফকুদ মিনাল জুযইল আউয়াল: ৫১-৫২।]
অতঃপর যখন আল্লাহ তা‘আলা হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করলেন সেই নূরে মুহাম্মদীকে আদম আলাইহিস সালামের মধ্যে স্থাপন করলেন। তাফসীরে দুররে মানছূরে রয়েছে-
‘নিশ্চয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক বার জিব্রাঈল আলাইহিস সালামকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার বয়স কত? জিব্রাঈল আরয করলেন, আল্লাহর কসম (আমার বয়সের ব্যাপারে) এটা ছাড়া আমি জানিনা যে, চতুর্থ পর্দায় (আসমানে) একটি তারকা প্রতি সত্তর হাজার বছর পর একবার উদিত হতো আর তা আমি বাহাত্তর হাজার বার দেখেছি। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- হে জিব্রাঈল, আমার রবের ইজ্জতের কসম আমি-ই ছিলাম সেই তারকা।’
[সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৩/৫৪৩; ইমাম বুরহানুদ্দীন হালাবী, সিরাতে হালবীয়া: ১/৪৯; আল্লামা ইউসূফ নাবহানী, জাওয়াহিরুল বিহার: ৭৭৬।]
আবার ইমাম গাযযালী সনদ বিহীন এবং ইমাম আবদুর রাযযাক হযরত সায়েব বিন ইয়াযীদ থেকে মাকতূ‘ সনদে (সাহাবীর বাণী হিসেবে) বর্ণনা করেছেন যে, “নূরে মুহাম্মদীকে আল্লাহ ময়ূরের আকৃতিতে সৃষ্টি করতঃ শ্বেত শুভ্রপাত্রে রেখে চার শাখা বিশিষ্ঠ সাজারাতুল ইয়াক্বিন নামক বৃক্ষে স্থাপন করলেন। এ অবস্থায় তিনি একাধারে সত্তর হাজার বছর আল্লাহর তাসবীহ-তাহলীলে মাশগুল থাকেন।”
[সূত্রঃ ইমাম গাযযালী, দাকায়েকুল আখবার: ৯; ইমাম আবদুর রাযযাক, আল মুসান্নাফ, আল জুযউল মাফকুদ মিনাল জুযইল আউয়াল: ৫১-৫২।]
অতঃপর যখন আল্লাহ তা‘আলা হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করলেন সেই নূরে মুহাম্মদীকে আদম আলাইহিস সালামের মধ্যে স্থাপন করলেন। তাফসীরে দুররে মানছূরে রয়েছে-
اخرج
ابن ابى عمر العدنى عن ابن عباس ان قريشا كانت نورا بين يدى الله تعالى قبل ان
يخلق الخلق بالفى عام يسبح ذلك النور وتسبح الملائكة بتسبيحه- فلما خلق الله ادم
عليه السلام القى ذلك النور فى صلبه- قال رسول
الله صلى الله عليه وسلم: فاهبطنى الله الى الارض فى صلب ادم عليه السلام وجعلنى
فى صلب نوح وقذف بى فى صلب ابراهيم ثم لم يزل الله ينقلنى من الاصلاب الكريمة الى
الارحام الطاهرة حتى اخرجنى من بين ابوى لم يلتقيا على سفاح قط
অর্থাৎঃ ‘হযরত ইবনু আবী উমর আল-আদনী ইবনু আব্বাস
রাদ্বিয়াল্লাহু
আনহু হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন- নিশ্চয় কুরাইশী নবী (অর্থাৎ কুরাইশ বংশে আগমন করলেও মূলতঃ তিনি) মাখলুক তথা আদম আলাইহিস সালাম সৃষ্টির দু’ হাজার বৎসর পূর্বে আল্লাহর দরবারে নূর ছিলেন। সেই নূর তাসবীহ পাঠ করতো এবং তাঁর তাসবীর সাথে ফেরেশতাগণও তাসবীহ পাঠ করতো। অতঃপর যখন আল্লাহ তা‘আলা হযরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি
করলেন, তখন আদম আলাইহিস সালাম এর পৃষ্টদেশে সেই নূর মুবারক স্থাপন করলেন। রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- অতঃপর
আল্লাহ তা‘আলা আমাকে হযরত আদম আলাইহিস সালামের পৃষ্টদেশে থাকা অবস্থায় জমিনে পাঠালেন। অতঃপর হযরত নূহ আলাইহিস সালাম এর পৃষ্টদেশে আমাকে স্থাপন
করলেন। বংশ পরম্পরায় আমাকে হযরত
ইব্রাহীম আলাইহিস
সালামের পৃষ্ঠে থাকাকালীন নমরূদের তৈরি অগ্নিকুন্ডে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। এভাবে স্থানান্তরিত হতে হতে পবিত্র পৃষ্ঠদেশ থেকে পবিত্র রেহেমে স্থানান্তরিত হতে থাকি, এমনকি আমার পিতা-মাতা পর্যন্ত। আমার
পূর্ব পুরুষের
মধ্যে কখনোই যিনা সংঘটিত হয়নি।’
[তাফসীর সূত্রঃ ইমাম সুয়ূতী, আদ্ দুররুল মানছূর: ৪/৩২৯, لقد جاء كم رسول من انفسكم আয়াতের ব্যখ্যায়।]
পবিত্র থেকে পবিত্র ব্যক্তিগণের মাধ্যম হয়ে স্থানান্তর হতে হতে সে নূর সর্বশেষ হযরত আব্দুল্লাহর মাধ্যমে হযরত আমেনা এর রেহেম মুবারকে স্থানান্তর হয়। নবীজী নিজে ইরশাদ করেন-
[তাফসীর সূত্রঃ ইমাম সুয়ূতী, আদ্ দুররুল মানছূর: ৪/৩২৯, لقد جاء كم رسول من انفسكم আয়াতের ব্যখ্যায়।]
পবিত্র থেকে পবিত্র ব্যক্তিগণের মাধ্যম হয়ে স্থানান্তর হতে হতে সে নূর সর্বশেষ হযরত আব্দুল্লাহর মাধ্যমে হযরত আমেনা এর রেহেম মুবারকে স্থানান্তর হয়। নবীজী নিজে ইরশাদ করেন-
وإن
أمي رأت في بطنها نوراً قالت : فجعلت أتبع بصري النور فجعل النور يسبق بصري حتى
أضاء لي مشارق الأرض ومغاربها
অর্থাৎঃ
‘আমার আম্মাজান দেখলেন যে তাঁর পেটে নূর অবস্থান করছে। তিনি বলেন, অতঃপর নূরের দিকে আমি চক্ষু ফিরালাম, নূরের প্রখরতা আমার চোখের দৃষ্টিকে ম্লান করে দিচ্ছিল। এমনকি ঐ নূরের আলোতে পৃথিবীর পূর্ব-পশ্চিম তথা সারা দুনিয়া আমার নিকট আলোকিত ও প্রকাশিত হয়ে গেল।’
[সূত্রঃ ইমাম যায়‘আলী, তাখরীজুল আহাদীসি ওয়াল আছার: ৮৩; ইমাম সুয়ূতী, আল-খাসায়েসুল কুবরা।]
এছাড়াও নবীজীর সুরাত বা আকৃতির ব্যাপারে শায়খ ইসমাইল হাক্কী ‘সূরা মারিয়াম’-এর كهيعص এর ব্যাখ্যায় ইমাম কাশেফীর একটি বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন। তিনি বলেন, শায়খ রুকুনুদ্দীন আলাউদ্দৌলা সিমনানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ফরমান-
‘আমার আম্মাজান দেখলেন যে তাঁর পেটে নূর অবস্থান করছে। তিনি বলেন, অতঃপর নূরের দিকে আমি চক্ষু ফিরালাম, নূরের প্রখরতা আমার চোখের দৃষ্টিকে ম্লান করে দিচ্ছিল। এমনকি ঐ নূরের আলোতে পৃথিবীর পূর্ব-পশ্চিম তথা সারা দুনিয়া আমার নিকট আলোকিত ও প্রকাশিত হয়ে গেল।’
[সূত্রঃ ইমাম যায়‘আলী, তাখরীজুল আহাদীসি ওয়াল আছার: ৮৩; ইমাম সুয়ূতী, আল-খাসায়েসুল কুবরা।]
এছাড়াও নবীজীর সুরাত বা আকৃতির ব্যাপারে শায়খ ইসমাইল হাক্কী ‘সূরা মারিয়াম’-এর كهيعص এর ব্যাখ্যায় ইমাম কাশেফীর একটি বর্ণনা উদ্ধৃত করেছেন। তিনি বলেন, শায়খ রুকুনুদ্দীন আলাউদ্দৌলা সিমনানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ফরমান-
حضرت
رسالت را صلی الله عليه وسلم سہ صورتست يكی بشری كقوله تعالی قل انما انا بشر
مثلكم (الكهف: ١١٠)دوم ملكی چناكہ فرمودست (لست كأحد ابيت عندی ربی)سيوم حقی كما
قال :(لی مع الله وقت لا يسعنی فيه ملك مقرب ولا نبي مرسل)وازين وروشنتر (من رأنی
فقد رأي الحق))
অর্থাৎঃ
‘রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তিনটি সুরাত রয়েছে। একটি, বাশারী বা মানবীয় সুরাত। যেমন, আল্লাহর বাণী- قل انما انا بشر مثلكم (আপনি বলুন, নিশ্চয় আমি তোমাদের ন্যায় বাহ্যিক আকৃতিতে একজন মানুষ)। দ্বিতীয়টি হলো, ফেরেশতার সুরাত। যেমন, আল্লাহর হাবীব নিজেই ফরমান- لست كأحد ابيت عندی ربی (আমি তোমাদের কারো মতো নই, আমি আমার রবের নিকট রাত্রি যাপন করি)। তৃতীয়টি হলো, সুরাতে হাক্কী বা প্রকৃত সুরাত। যেমন, হাদীস শরীফে রয়েছে, নবীজী ইরশাদ করেন- لی مع الله وقت لا يسعنی فيه ملك مقرب ولا نبي مرسل (আল্লাহর সাথে আমার এমন একটি বিশেষ সময় রয়েছে যাতে নৈকট্যপ্রাপ্ত কোন ফেরেশতা এবং কোন নবী-রাসূল পৌঁছতে পারেনি)। এর চেয়েও স্পষ্ট বর্ণনা হাদীসে রয়েছে যে, নবীজী বলেন- من رأنی فقد رأي الحق (যে আমাকে দেখল, সে যেন হককেই দেখল) অর্থাৎ তিনি আল্লাহ দেখার আয়না স্বরূপ।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৫/৩১৪।]
নূরে মুহাম্মদীকে সৃষ্টির পর আকৃতি প্রদানের ব্যাপারে আল্লামা ইমাম যারকানী বলেন-
‘রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তিনটি সুরাত রয়েছে। একটি, বাশারী বা মানবীয় সুরাত। যেমন, আল্লাহর বাণী- قل انما انا بشر مثلكم (আপনি বলুন, নিশ্চয় আমি তোমাদের ন্যায় বাহ্যিক আকৃতিতে একজন মানুষ)। দ্বিতীয়টি হলো, ফেরেশতার সুরাত। যেমন, আল্লাহর হাবীব নিজেই ফরমান- لست كأحد ابيت عندی ربی (আমি তোমাদের কারো মতো নই, আমি আমার রবের নিকট রাত্রি যাপন করি)। তৃতীয়টি হলো, সুরাতে হাক্কী বা প্রকৃত সুরাত। যেমন, হাদীস শরীফে রয়েছে, নবীজী ইরশাদ করেন- لی مع الله وقت لا يسعنی فيه ملك مقرب ولا نبي مرسل (আল্লাহর সাথে আমার এমন একটি বিশেষ সময় রয়েছে যাতে নৈকট্যপ্রাপ্ত কোন ফেরেশতা এবং কোন নবী-রাসূল পৌঁছতে পারেনি)। এর চেয়েও স্পষ্ট বর্ণনা হাদীসে রয়েছে যে, নবীজী বলেন- من رأنی فقد رأي الحق (যে আমাকে দেখল, সে যেন হককেই দেখল) অর্থাৎ তিনি আল্লাহ দেখার আয়না স্বরূপ।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৫/৩১৪।]
নূরে মুহাম্মদীকে সৃষ্টির পর আকৃতি প্রদানের ব্যাপারে আল্লামা ইমাম যারকানী বলেন-
ثم
جسم صورته علي شكل اخص من ذلك النور
অর্থাৎঃ
‘অতঃপর নূরে মুহমাম্মদীকে বিশেষ আকৃতিতে মুজাসসাম (শরীর বিশিষ্ট) করা হয়।’
[সূত্রঃ ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ১/৯৫।]
আর আহলে সুন্নাতের সকলেই এ ব্যাপারে একমত যে হুযুর পাকের যে সুরাতই হোক, সব ক’টিই নূরের; এমনকি মানব আকৃতিও নূরে মুজাসসাম (নূরের শরীর বিশিষ্ট)।
হাফিজুল হাদীস ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী বর্ণনা করেন-
‘অতঃপর নূরে মুহমাম্মদীকে বিশেষ আকৃতিতে মুজাসসাম (শরীর বিশিষ্ট) করা হয়।’
[সূত্রঃ ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ১/৯৫।]
আর আহলে সুন্নাতের সকলেই এ ব্যাপারে একমত যে হুযুর পাকের যে সুরাতই হোক, সব ক’টিই নূরের; এমনকি মানব আকৃতিও নূরে মুজাসসাম (নূরের শরীর বিশিষ্ট)।
হাফিজুল হাদীস ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী বর্ণনা করেন-
اخرج
الحكيم الترمذى عن ذكوان ان رسول الله صلى الله عليه وسلم لم يكن يرى له ظل فى شمس
ولاقمر قال ابن سبع: من خصائصه ان ظله كان لا يقع على الارض وانه كان نورا فكان
اذا مشى فى الشمس او القمر لا ينظر له ظل- قال بعضهم: ويشهد له
حديث قوله صلى الله عليه فى دعائه- واجعلى نورا-
অর্থাৎঃ ‘হাকিম তিরমিযী হযরত যাকওয়ান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম হতে বর্ণনা করেছেন, নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ছায়া না সূর্যের আলোতে দেখা যেত, আর না চন্দ্রের আলোতে। ইবনু সাবা‘
রাদ্বিয়াল্লাহু
আনহু বলেছেন- রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এর বৈশিষ্ট্য এ যে, নিশ্চয় তাঁর ছায়া জমিনে পতিত হতো না, কেননা তিনি ছিলেন নূর। অতএব, তিনি যখন সূর্যের আলোতে অথবা চন্দ্রের আলোতে চলতেন,
তখন তাঁর ছায়া
দেখা যেত না। কেউ কেউ বলেন,
রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামার ছায়া না থাকার
বিষয়টি ঐ হাদীস
শরীফ দ্বারা প্রমাণিত, যা হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর দু‘আয় বলেছেন- হে আল্লাহ! আমাকে নূর করে দাও।’
[সূত্রঃ ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী, আল-খাসায়েসুল কুবরা: ১/১১৬।]
ইমাম যারকানী বলেন-
[সূত্রঃ ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী, আল-খাসায়েসুল কুবরা: ১/১১৬।]
ইমাম যারকানী বলেন-
لم
يكن له صلى الله عليه وسلم ظل فى شمس ولاقمر لانه كان نورا
অর্থাৎঃ ‘সূর্য চন্দ্রের আলোতে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দেহ মুবারকের ছায়া পড়ত না। কেননা তিনি
ছিলেন অপাদমস্তক নূর।’
[সূত্রঃ ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ৪/২২০।]
অনুরূপ বর্ণনা ইমাম কাদ্বী আয়াদ্ব তার ‘কিতাবুশ শিফা বি তা‘রীফি হুকুকিল মুস্তফা’য়ও বর্ণনা করেছেন।
জ্ঞাতব্য যে, মানুষের সৃষ্টিগত ধাতু বা মাদ্দা সৃষ্টি হয় তাদের বাবা-মা’র মধ্যে। তাদের বাবা-মা যখন অপ্রাপ্ত বয়স্ক থাকেন তখনও এই মূল উপাদান তাদের মধ্যে থাকেনা বরং প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর তা তৈরি হয়।
আর দাদা থেকে পূর্ব পুরুষদের মধ্যে কোন কালেই নিম্ন পুরুষদের সৃষ্টি মাদ্দা বা ধাতু থাকে না এবং স্থানান্তরিতও হয় না। তাদের মাদ্দা যখন পিতা হতে মায়ের গর্ভে যায় তখন এতে একটি আকৃতি প্রদান করা হয় এবং তাতে কিছুদিন পর রূহ্ দেওয়া হয়। আর মানুষের মাদ্দা মা-বাবার মিলিত মনি বা বীর্য। যেমন, ইরশাদ হয়েছে-
[সূত্রঃ ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ৪/২২০।]
অনুরূপ বর্ণনা ইমাম কাদ্বী আয়াদ্ব তার ‘কিতাবুশ শিফা বি তা‘রীফি হুকুকিল মুস্তফা’য়ও বর্ণনা করেছেন।
জ্ঞাতব্য যে, মানুষের সৃষ্টিগত ধাতু বা মাদ্দা সৃষ্টি হয় তাদের বাবা-মা’র মধ্যে। তাদের বাবা-মা যখন অপ্রাপ্ত বয়স্ক থাকেন তখনও এই মূল উপাদান তাদের মধ্যে থাকেনা বরং প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর তা তৈরি হয়।
আর দাদা থেকে পূর্ব পুরুষদের মধ্যে কোন কালেই নিম্ন পুরুষদের সৃষ্টি মাদ্দা বা ধাতু থাকে না এবং স্থানান্তরিতও হয় না। তাদের মাদ্দা যখন পিতা হতে মায়ের গর্ভে যায় তখন এতে একটি আকৃতি প্রদান করা হয় এবং তাতে কিছুদিন পর রূহ্ দেওয়া হয়। আর মানুষের মাদ্দা মা-বাবার মিলিত মনি বা বীর্য। যেমন, ইরশাদ হয়েছে-
فَلْيَنظُرِ
الْإِنسَانُ مِمَّ خُلِقَ خُلِقَ مِن مَّاء دَافِقٍ يَخْرُجُ مِن بَيْنِ الصُّلْبِ
وَالتَّرَائِبِ
অর্থাৎঃ
‘মানুষের দেখা উচিত কি বস্তু থেকে সে সৃজিত হয়েছে। সে সৃষ্টি হয়েছে সবেগে সংখলিত পানি থেকে। এটা নির্গত হয় মেরুদন্ড ও বক্ষ পাজরের মধ্যে থেকে।’
[সূরা তারিক: ৫-৭।]
অনুরূপ আরও ইরশাদ হয়েছে-
‘মানুষের দেখা উচিত কি বস্তু থেকে সে সৃজিত হয়েছে। সে সৃষ্টি হয়েছে সবেগে সংখলিত পানি থেকে। এটা নির্গত হয় মেরুদন্ড ও বক্ষ পাজরের মধ্যে থেকে।’
[সূরা তারিক: ৫-৭।]
অনুরূপ আরও ইরশাদ হয়েছে-
مِنْ
أَيِّ شَيْءٍ خَلَقَهُ مِنْ نُطْفَةٍ خَلَقَهُ فَقَدَّرَهُ
অর্থাৎঃ
‘তিনি তাকে কি বস্তু হতে সৃষ্টি করেছেন? শুক্র থেকে তাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর সুপরিমিত করেছেন।’
[সূরা আবাছা: ১৮-১৯।]
অনুরূপ অন্য আয়াতে এসেছে-
‘তিনি তাকে কি বস্তু হতে সৃষ্টি করেছেন? শুক্র থেকে তাকে সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর সুপরিমিত করেছেন।’
[সূরা আবাছা: ১৮-১৯।]
অনুরূপ অন্য আয়াতে এসেছে-
فَإِنَّا
خَلَقْنَاكُمْ مِنْ تُرَابٍ ثُمَّ مِنْ نُطْفَةٍ
অর্থাৎঃ
‘আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি মাটি হতে অতঃপর বীর্য হতে।’
[সূরা হাজ্জ্ব: ৫।]
কিন্তু হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সৃষ্টি তথ্য সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম এবং স্বতন্ত্র। কেননা তিনি না মাটি হতে, না বীর্য হতে, বরং তাঁর মাদ্দা হল নূর যা প্রথমে আদম আলাইহিস সালামের মাঝে আমানত রাখা হয়েছিল। অতঃপর তাঁর থেকেই স্থানান্তর হতে হতে শেষ পর্যন্ত মা আমেনার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। সুতরাং তিনি আদম আলাইহিস সালামের মাঝে স্থাপন করার পূর্বেও বিদ্যমান ছিলেন- কখনও তারকার আকৃতিতে, কখনও বা ময়ূরের আকৃতিতে, কখনও অন্যকোন আকৃতিতে; এমনকি সর্ব প্রথম সৃষ্টি হয়েই তিনি সেজদা করে মাথা উত্তোলন করেছিলেন। অবশেষে বাবা আব্দুল্লাহ এবং মা আমেনার মাধ্যম হয়ে মানব আকৃতিতে মানবীয় পূর্ণ গুণাবলীসহ আগমন করেন। তাঁর মাদ্দাও পিতা-মাতার মনি ছিলনা, ছিল নূর তা-ই পূর্বোক্ত সকল বর্ণনা হতে প্রমাণিত হয়।
এখন উপর্যুক্ত সকল আলোচনা হতে যে বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, তা হলো-
১/
হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ই হলেন আল্লাহ তা‘আলার সর্বপ্রথম সৃষ্টি। এমনকি ফেরেশতা জিব্রাঈল ও মানব জাতীর প্রথম মানব হযরত আদম আলাইহিস সালাম এরও অনেক পূর্বে নবীজীর সৃষ্টি।
২/
হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিঃসন্দেহে আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা এর যাতী নূর থেকে সৃষ্টি। আর ‘যাতী নূর’ বলার দ্বারা আল্লাহর যাতের অংশ বা আইনে যাত কিংবা টুকরা হওয়াও আবশ্যক হয় না। (আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা)
৩/
নূরে মুহাম্মদী সৃষ্টি হয়েই বিশেষ আকৃতি নিয়ে সিজদা করেছেন এবং সিজদা হতেই মাথা উত্তোলন করে ‘আল-হামদু লিল্লাহ’ বলেছেন। আর সে নূরের নামই আল্লাহ ‘মুহাম্মদ’ রেখেছেন।
৪/
অতঃপর সে নূর কখনো ময়ূর আকৃতিতে, কখনো তারকার আকৃতিতে ছিলেন, আবার তা কখনো ফেরেশতার রূপেও ছিলেন এবং সর্বশেষ সে নূরই মানব আকৃতিতে এ পৃথিবীতে আগমন করেছেন। আর কুরআনের আয়াত قل انما انا بشرمثلكم (বলুন, আমি তোমাদের মত / তোমাদের আকৃতিতে মানুষ) এর অর্থও তাই যেমনটি রুহুল বায়ানে বলা হয়েছে।
৫/
কুরআন প্রমান করে মানবজাতী সৃষ্টির মাদ্দাহ বা ধাতু পিতা-মাতার মিলিত মনী এবং তা পিতা-মাতার শরীরেই তৈরী হয়, পূর্বে এর অস্তিত্ব থাকেনা এবং পূর্ব পুরুষ হতেও স্থানান্তরিত হয়ে আসেনা।
৬/
আর হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সৃষ্টির মাদ্দাহ বা উপাদান হল নূর। সে নূর আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করতঃ তাঁর মধ্যে আমানত রাখা হয়েছে এবং পরবর্তীতে তা পবিত্র নসলে স্থানান্তরিত হয়ে সর্বশেষ মানব রূপে পৃথীবিতে বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
এখন, কুরআন প্রমান করে মানব জাতী (জিনসে বাশার) সৃষ্টির ধাতু হলো পিতা মাতার মিলিত বীর্য এবং তা পিতা মাতার শরীরেই অনস্তিত্ব (عدم) থেকে অস্তিত্বে (وجود) আসে।
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রকৃত যাত বা সত্ত্বাও যদি মূলতঃ ‘জাতীতে মানুষ তথা জিনসে বাশার’ হয় তাহলে কুরআন অনুযায়ী নবীজীর সৃষ্টির ধাতুও পিতা-মাতার মিশ্রিত নাপাক মনী ধরতে হবে এবং তাঁর ‘হযরত আদম থেকে মা আমেনা পর্যন্ত স্থানান্তর হওয়া’কে অস্বীকার করতে হবে। (নাউযুবিল্লাহ!) আর এখানে ঈসা আলাইহিস সালাম এর সৃষ্টির স্বতন্ত্র বিষয়টিকে এক্ষেত্রে কিয়াস করার অবকাশ নাই এজন্য যে, তাঁর পবিত্র শরীরও সৃষ্টি হয়েছে মা মরিয়মের গর্ভেই জিব্রাইলের ফুৎকারের মাধ্যমে, পূর্ব পুরুষ হতে স্থানান্তর বা প্রত্যাবর্তন হয়ে আসেনি। এটি আল্লাহ তা‘আলার বিশেষ এক কুদরতের প্রমান এবং বিশেষ কিছু বিরোদ্ধবাদীদেরকে আল্লাহ প্রদত্ত জবাব মাত্র।
অতএব একথা নির্দিধায় মানতে হবে যে, নবীজীর হাকীকত বা প্রকৃত সত্ত্বা মানব জাতীর অর্ন্তভূক্ত নয় তথা হাকীকতে মুহাম্মদী ‘জাতীতে মানুষ (জিনসে বাশার)’ নন। তাঁর প্রকৃত সত্ত্বা কি, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না । যেমন নবীজী হযরত আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে লক্ষ্য করে ইরশাদ করেন-
‘আর আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি মাটি হতে অতঃপর বীর্য হতে।’
[সূরা হাজ্জ্ব: ৫।]
কিন্তু হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সৃষ্টি তথ্য সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম এবং স্বতন্ত্র। কেননা তিনি না মাটি হতে, না বীর্য হতে, বরং তাঁর মাদ্দা হল নূর যা প্রথমে আদম আলাইহিস সালামের মাঝে আমানত রাখা হয়েছিল। অতঃপর তাঁর থেকেই স্থানান্তর হতে হতে শেষ পর্যন্ত মা আমেনার মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। সুতরাং তিনি আদম আলাইহিস সালামের মাঝে স্থাপন করার পূর্বেও বিদ্যমান ছিলেন- কখনও তারকার আকৃতিতে, কখনও বা ময়ূরের আকৃতিতে, কখনও অন্যকোন আকৃতিতে; এমনকি সর্ব প্রথম সৃষ্টি হয়েই তিনি সেজদা করে মাথা উত্তোলন করেছিলেন। অবশেষে বাবা আব্দুল্লাহ এবং মা আমেনার মাধ্যম হয়ে মানব আকৃতিতে মানবীয় পূর্ণ গুণাবলীসহ আগমন করেন। তাঁর মাদ্দাও পিতা-মাতার মনি ছিলনা, ছিল নূর তা-ই পূর্বোক্ত সকল বর্ণনা হতে প্রমাণিত হয়।
এখন উপর্যুক্ত সকল আলোচনা হতে যে বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়, তা হলো-
১/
হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ই হলেন আল্লাহ তা‘আলার সর্বপ্রথম সৃষ্টি। এমনকি ফেরেশতা জিব্রাঈল ও মানব জাতীর প্রথম মানব হযরত আদম আলাইহিস সালাম এরও অনেক পূর্বে নবীজীর সৃষ্টি।
২/
হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিঃসন্দেহে আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লা এর যাতী নূর থেকে সৃষ্টি। আর ‘যাতী নূর’ বলার দ্বারা আল্লাহর যাতের অংশ বা আইনে যাত কিংবা টুকরা হওয়াও আবশ্যক হয় না। (আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা)
৩/
নূরে মুহাম্মদী সৃষ্টি হয়েই বিশেষ আকৃতি নিয়ে সিজদা করেছেন এবং সিজদা হতেই মাথা উত্তোলন করে ‘আল-হামদু লিল্লাহ’ বলেছেন। আর সে নূরের নামই আল্লাহ ‘মুহাম্মদ’ রেখেছেন।
৪/
অতঃপর সে নূর কখনো ময়ূর আকৃতিতে, কখনো তারকার আকৃতিতে ছিলেন, আবার তা কখনো ফেরেশতার রূপেও ছিলেন এবং সর্বশেষ সে নূরই মানব আকৃতিতে এ পৃথিবীতে আগমন করেছেন। আর কুরআনের আয়াত قل انما انا بشرمثلكم (বলুন, আমি তোমাদের মত / তোমাদের আকৃতিতে মানুষ) এর অর্থও তাই যেমনটি রুহুল বায়ানে বলা হয়েছে।
৫/
কুরআন প্রমান করে মানবজাতী সৃষ্টির মাদ্দাহ বা ধাতু পিতা-মাতার মিলিত মনী এবং তা পিতা-মাতার শরীরেই তৈরী হয়, পূর্বে এর অস্তিত্ব থাকেনা এবং পূর্ব পুরুষ হতেও স্থানান্তরিত হয়ে আসেনা।
৬/
আর হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সৃষ্টির মাদ্দাহ বা উপাদান হল নূর। সে নূর আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করতঃ তাঁর মধ্যে আমানত রাখা হয়েছে এবং পরবর্তীতে তা পবিত্র নসলে স্থানান্তরিত হয়ে সর্বশেষ মানব রূপে পৃথীবিতে বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
এখন, কুরআন প্রমান করে মানব জাতী (জিনসে বাশার) সৃষ্টির ধাতু হলো পিতা মাতার মিলিত বীর্য এবং তা পিতা মাতার শরীরেই অনস্তিত্ব (عدم) থেকে অস্তিত্বে (وجود) আসে।
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রকৃত যাত বা সত্ত্বাও যদি মূলতঃ ‘জাতীতে মানুষ তথা জিনসে বাশার’ হয় তাহলে কুরআন অনুযায়ী নবীজীর সৃষ্টির ধাতুও পিতা-মাতার মিশ্রিত নাপাক মনী ধরতে হবে এবং তাঁর ‘হযরত আদম থেকে মা আমেনা পর্যন্ত স্থানান্তর হওয়া’কে অস্বীকার করতে হবে। (নাউযুবিল্লাহ!) আর এখানে ঈসা আলাইহিস সালাম এর সৃষ্টির স্বতন্ত্র বিষয়টিকে এক্ষেত্রে কিয়াস করার অবকাশ নাই এজন্য যে, তাঁর পবিত্র শরীরও সৃষ্টি হয়েছে মা মরিয়মের গর্ভেই জিব্রাইলের ফুৎকারের মাধ্যমে, পূর্ব পুরুষ হতে স্থানান্তর বা প্রত্যাবর্তন হয়ে আসেনি। এটি আল্লাহ তা‘আলার বিশেষ এক কুদরতের প্রমান এবং বিশেষ কিছু বিরোদ্ধবাদীদেরকে আল্লাহ প্রদত্ত জবাব মাত্র।
অতএব একথা নির্দিধায় মানতে হবে যে, নবীজীর হাকীকত বা প্রকৃত সত্ত্বা মানব জাতীর অর্ন্তভূক্ত নয় তথা হাকীকতে মুহাম্মদী ‘জাতীতে মানুষ (জিনসে বাশার)’ নন। তাঁর প্রকৃত সত্ত্বা কি, তা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না । যেমন নবীজী হযরত আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে লক্ষ্য করে ইরশাদ করেন-
يا
ابا بكر والذي بعثني بالحق لم يعلمني حقيقة غير ربي
অর্থাৎঃ ‘হে আবু বকর, ঐ সত্ত্বার কসম! যিনি আমাকে সত্যসহ
প্রেরণ করেছেন, আমার হাকীকত (আমার প্রকৃত জাত-جنس এবং সত্ত্বা-ذات) আল্লাহ ছাড়া কেউ
জানে না।
[সূত্রঃ ইমাম ফাসী, মাতালিউল মাসরাত: ১২৯; আল্লামা ইউসূফ নাবহানী, জাওয়াহিরুল বিহার: ২/১৫; শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দেছে দেহলভী, শারহু ফাতহিল গায়ব: ১/৩৪০, আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা: ৯।]
যেখানে নবীজীর প্রকৃত সত্ত্বা সর্ম্পকে হযরত আবু বকরকে নবীজী বলেন যে- আল্লাহ ছাড়া কেহ জানেন না, সেখানে আমরা কে যে- নবীজীর হাকীকী জিনস বা জাত কে মানুষ বলতে পারব?
চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আ‘লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান বলেন-
[সূত্রঃ ইমাম ফাসী, মাতালিউল মাসরাত: ১২৯; আল্লামা ইউসূফ নাবহানী, জাওয়াহিরুল বিহার: ২/১৫; শায়খ আবদুল হক মুহাদ্দেছে দেহলভী, শারহু ফাতহিল গায়ব: ১/৩৪০, আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা: ৯।]
যেখানে নবীজীর প্রকৃত সত্ত্বা সর্ম্পকে হযরত আবু বকরকে নবীজী বলেন যে- আল্লাহ ছাড়া কেহ জানেন না, সেখানে আমরা কে যে- নবীজীর হাকীকী জিনস বা জাত কে মানুষ বলতে পারব?
চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আ‘লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান বলেন-
ﻋﺎﻟﻢ
ﻣﯿﮟ ﺫﺍﺕ ﺭﺳﻮﻝ ﮐﻮ ﺗﻮ ﮐﻮئى ﭘﮩﭽﺎﻧﺘﺎ ﻧﮩﯿﮟ
অর্থাৎঃ
‘সৃষ্টিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামার সত্ত্বা বা যাতকে তো কেউই চিনে না।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা।]
এখন, আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
لقد جاء كم من انفسكم
অর্থাৎঃ নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট আগমন করেছেন তোমাদের মধ্যে থেকেই সম্মানিত একজন রাসূল।
[সূরা তাওবা: ১২৮।]
অর্থাৎঃ
‘সৃষ্টিতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামার সত্ত্বা বা যাতকে তো কেউই চিনে না।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, সালাতুস সফা ফী নূরিল মুস্তফা।]
এখন, আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
لقد جاء كم من انفسكم
অর্থাৎঃ নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট আগমন করেছেন তোমাদের মধ্যে থেকেই সম্মানিত একজন রাসূল।
[সূরা তাওবা: ১২৮।]
তাফসীরঃ
এ আয়াতে من انفسكم (তোমাদের মধ্যে থেকে) এর ব্যাখ্যায় আল্লামা মাহমুদ আলুসী বাগদাদী তদ্বীয় তাফসীর গ্রন্থ ‘রুহুল মা‘আনী’তে দু’টি মত রেওয়ায়াত করেছেন।
প্রথমত, যদি لقد جاء كم (তোমাদের মধ্যে এসেছেন) এর দ্বারা আরববাসীকে উদ্দেশ্য করা হয়, তবে এর অর্থ من جنسكم ومن نسبكم عربي مثلكم (তোমাদের জাতী হতে তোমরা যেমন আরব বংশের তোমাদের মতো আরব হতে নবীজী এসেছেন)।
দ্বিতীয়ত, যদি لقد جاء كم এর উদ্দেশ্য সাধারনভাবে সকল মানব জাতী হয়, তবে এর অর্থ হবে انه من جنس البشر (নিশ্চয়ই তিনি মানব জাতী হতে)।
প্রথম মতটি ইবনু আব্বাস থেকে বর্ণিত এবং দ্বিতীয় মতটির সনদ নেই قيل (কথিত আছে) শব্দ দ্বারা বর্ণিত।
আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী বর্ণনা করেন-
এ আয়াতে من انفسكم (তোমাদের মধ্যে থেকে) এর ব্যাখ্যায় আল্লামা মাহমুদ আলুসী বাগদাদী তদ্বীয় তাফসীর গ্রন্থ ‘রুহুল মা‘আনী’তে দু’টি মত রেওয়ায়াত করেছেন।
প্রথমত, যদি لقد جاء كم (তোমাদের মধ্যে এসেছেন) এর দ্বারা আরববাসীকে উদ্দেশ্য করা হয়, তবে এর অর্থ من جنسكم ومن نسبكم عربي مثلكم (তোমাদের জাতী হতে তোমরা যেমন আরব বংশের তোমাদের মতো আরব হতে নবীজী এসেছেন)।
দ্বিতীয়ত, যদি لقد جاء كم এর উদ্দেশ্য সাধারনভাবে সকল মানব জাতী হয়, তবে এর অর্থ হবে انه من جنس البشر (নিশ্চয়ই তিনি মানব জাতী হতে)।
প্রথম মতটি ইবনু আব্বাস থেকে বর্ণিত এবং দ্বিতীয় মতটির সনদ নেই قيل (কথিত আছে) শব্দ দ্বারা বর্ণিত।
আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী বর্ণনা করেন-
لقد
جاء كم من انفسكم (من انفسكم) اى من جنسكم ادمى مثلكم لا من الملائكة ولا من غيرهم
অর্থাৎঃ
‘নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য থেকে একজন সম্মানিত রাসূল আগমন করেছেন। من انفسكم (তোমাদের মধ্য থেকে) অর্থ- من جنسكم তথা তোমাদের জাতী থেকে তোমাদের মত মানব রূপে; না তিনি ফিরিশতাদের থেকে এসেছেন, আর না অন্য কোন জাতী থেকে।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৩/৫৪২।]
আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী আলাইহি রাহমাতুল বারী বলেন-
‘নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য থেকে একজন সম্মানিত রাসূল আগমন করেছেন। من انفسكم (তোমাদের মধ্য থেকে) অর্থ- من جنسكم তথা তোমাদের জাতী থেকে তোমাদের মত মানব রূপে; না তিনি ফিরিশতাদের থেকে এসেছেন, আর না অন্য কোন জাতী থেকে।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৩/৫৪২।]
আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী আলাইহি রাহমাতুল বারী বলেন-
الحاصل
ان مجئ الرسول نعمة جسيمة وكونه من جنس البشر منحة عظيمة وقال بعضهم قوله من
انفسكم اى جنس العرب وهو لا ينافى ما سبق
অর্থাৎঃ ‘সারকথা, নিশ্চয় রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম এর শুভাগমন এক মহান নিয়ামত বা বড় অনুগ্রহ
এবং তিনি মানব জাতীতে আগমন করাটা
মানব জাতীর জন্য
এক মহান দান। কেউ বলেন, আল্লাহর বাণী- من انفسكم (তোমাদের মধ্য থেকে) অর্থ হল, আরব জাতী থেকে। এটিও পূর্বোক্ত বর্ণনার (মানব জাতী থেকে) বিপরীত নয়।’
[সূত্রঃ আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী, আল মাওরিদুর রাভী ফি মাওলিদিন নাবভী: ৫৭।]
(নোট: বিভিন্ন পুস্তিকা ও লিখায় বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে, উল্লেখিত ইবারতে وكونه من جنس البشر منحة عظيمة এর অর্থ- ‘তিনি হচ্ছেনجنس البشر বা জাতীতে মানব’ করা হয়েছে। অথচ এর অর্থ হবে- ‘তিনি মানব জাতীতে আগমন করাটা মানব জাতীর জন্য এক মহান দান’। যার ফলে ইবারতের মূল উদ্দেশ্য ব্যহত হয়েছে। অনুরূপ আরো অনেক স্থানে من جنس البشر (মানব জাতী হতে) এর من হরফ (অব্যয়)-এর অর্থ ছেড়ে দিয়ে শুধু جنس البشر এর অর্থ করা হয়েছে। ফারসী ইবারতেও از অব্যয়টির অর্থ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতেও ইবারতের মূল উদ্দেশ্য অস্পষ্ট হয়ে যায়। বিষয়টি জরুরীভাবে লক্ষ্যনীয়।)
সূরা আলে ইমরানের ১৬৪ নং আয়াতে কারীমা- لقد من الله على المؤمنين اذ بعث فيهم رسولا من انفسهم (মুমিনগণের উপর আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন যে, তাঁদের মাঝে তাঁদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন)– এর ব্যাখ্যায় আল্লামা মাহমুদ আলুসী বাগদাদী বলেন-
[সূত্রঃ আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী, আল মাওরিদুর রাভী ফি মাওলিদিন নাবভী: ৫৭।]
(নোট: বিভিন্ন পুস্তিকা ও লিখায় বিষয়টি দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে, উল্লেখিত ইবারতে وكونه من جنس البشر منحة عظيمة এর অর্থ- ‘তিনি হচ্ছেনجنس البشر বা জাতীতে মানব’ করা হয়েছে। অথচ এর অর্থ হবে- ‘তিনি মানব জাতীতে আগমন করাটা মানব জাতীর জন্য এক মহান দান’। যার ফলে ইবারতের মূল উদ্দেশ্য ব্যহত হয়েছে। অনুরূপ আরো অনেক স্থানে من جنس البشر (মানব জাতী হতে) এর من হরফ (অব্যয়)-এর অর্থ ছেড়ে দিয়ে শুধু جنس البشر এর অর্থ করা হয়েছে। ফারসী ইবারতেও از অব্যয়টির অর্থ ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এতেও ইবারতের মূল উদ্দেশ্য অস্পষ্ট হয়ে যায়। বিষয়টি জরুরীভাবে লক্ষ্যনীয়।)
সূরা আলে ইমরানের ১৬৪ নং আয়াতে কারীমা- لقد من الله على المؤمنين اذ بعث فيهم رسولا من انفسهم (মুমিনগণের উপর আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন যে, তাঁদের মাঝে তাঁদের মধ্য থেকেই একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন)– এর ব্যাখ্যায় আল্লামা মাহমুদ আলুসী বাগদাদী বলেন-
(رسولا)
عظيم القدر جليل الشان (من انفسهم) اى من نسبهم او من جنسهم عربيا مثلهم او من بنى
ادم لاملكا ولا جنيا الخ
‘رسولا
তথা অতি সম্মানিত ও মহান শানের অধিকারী রাসূল (প্রেরিত হয়েছেন) তাঁদের মধ্য থেকে তথা তাঁদের নসব বা বংশ থেকে অথবা তাঁদের জাতী থেকে তাঁদের মতই আরবীয়দের থেকে কিংবা বনী আদম থেকে, না ফেরেশতাদের থেকে আর না জিনদের থেকে।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা আলুসী, রুহুল মা‘আনী: ২/১১২।]
অনুরূপ সূরা ইউনুসে এসেছে-
তথা অতি সম্মানিত ও মহান শানের অধিকারী রাসূল (প্রেরিত হয়েছেন) তাঁদের মধ্য থেকে তথা তাঁদের নসব বা বংশ থেকে অথবা তাঁদের জাতী থেকে তাঁদের মতই আরবীয়দের থেকে কিংবা বনী আদম থেকে, না ফেরেশতাদের থেকে আর না জিনদের থেকে।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা আলুসী, রুহুল মা‘আনী: ২/১১২।]
অনুরূপ সূরা ইউনুসে এসেছে-
أَكَانَ
لِلنَّاسِ عَجَبًا أَنْ أَوْحَيْنَا إِلَىٰ رَجُلٍ مِنْهُمْ
অর্থাৎঃ ‘মানুষের জন্য এটা আশ্চর্য নয় যে,
আমি তাঁদেরই মধ্য
থেকে একজন পুরুষকে ওহী প্রেরণ করেছি তথা নবী হিসেবে মনোনীত করেছি।’
[সূরা ইউনুস: ২।]
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে-
[সূরা ইউনুস: ২।]
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে-
اللَّهُ
يَصْطَفِي مِنَ الْمَلَائِكَةِ رُسُلًا وَمِنَ النَّاسِ
অর্থাৎঃ
‘আল্লাহ মনোনীত করে নেন রাসূলগণকে ফেরেশতাদের থেকে এবং মানুষের মধ্য থেকেও।’
[সূরা হাজ্জ্ব: ৭৫।]
অর্থাৎঃ
‘আল্লাহ মনোনীত করে নেন রাসূলগণকে ফেরেশতাদের থেকে এবং মানুষের মধ্য থেকেও।’
[সূরা হাজ্জ্ব: ৭৫।]
তাফসীরঃ
হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী الا من ارتضى من رسول-এ আয়াতের তাফসীরে উল্লেখ করেন-
হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী الا من ارتضى من رسول-এ আয়াতের তাফসীরে উল্লেখ করেন-
یعنی
مگر کسے کہ پسند میکند وآں کس رسول میبا شد خواہ ازجنس ملک باشد مثل حضرت جبریل
علیہ السلام وخواہ ازجنس بشر مثل حضرت محمد صلی اللہ علیہ وسلم
অর্থাৎঃ
‘তবে হ্যাঁ, যাদেরকে আল্লাহর পছন্দ সে রাসূলদের নিকট ‘গায়ব’ প্রকাশ করেন। চাই সে রাসূল ফেরেশতা জাতী থেকে হোক, যেমন হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম অথবা মানব জাতী থেকে, যেমন হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
[তাফসীর সূত্রঃ শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী, তাফসীরে আযীযী: ২১৪।]
হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-
‘তবে হ্যাঁ, যাদেরকে আল্লাহর পছন্দ সে রাসূলদের নিকট ‘গায়ব’ প্রকাশ করেন। চাই সে রাসূল ফেরেশতা জাতী থেকে হোক, যেমন হযরত জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম অথবা মানব জাতী থেকে, যেমন হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
[তাফসীর সূত্রঃ শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী, তাফসীরে আযীযী: ২১৪।]
হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-
عن
عائشة قالت كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يخصف نعله ويخيط ثوبه ويعمل فى بيته
كما يعمل احدكم فى بيته وقالت كان بشرا من البشر يغلى ثوبه ويحلب شاته ويخدم نفسه
رواه الترمذى
অর্থাৎঃ
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই জুতা মুবারকের ফিতা লাগাতেন, নিজের কাপড় সেলাই করতেন, নিজ গৃহের কাজ নিজেই সম্পন্ন করতেন। যেমন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ করে থাকে। তিনি আরো বলেন- তিনি মানব জাতীর মধ্য থেকে একজন মানব হিসেবেই ছিলেন। নিজ কাপড় পরিচ্ছন্ন রাখতেন, নিজ হাতে দুধ দোহন করতেন, নিজে নিজের কাজ আঞ্জাম দিতেন।’
[সূত্রঃ ইমাম তিরমিযী, আস-সুনান; খতীব তিবরিযী, মিশকাতুল মাসাবীহ: ৫২০।]
এ সকল বর্ণনার দ্বারা মূলতঃ নবীজীর ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে এবং নবীগণ যে উত্তম বংশেই আসেন, তাঁদের নসব যে উচ্চ বংশের হয়ে থাকে তা স্পষ্ট করা হয়েছে। অর্থাৎ নবী পাক যাদের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়ে পৃথিবীতে মানবরূপে আগমন করেছেন তাঁদের সকলেই ছিলেন উচ্চ বংশীয়, আর এ বর্ণনাসমূহে এটিই আলোকপাত করা হয়েছে। যেমন ইমাম বুখারী তাঁর ‘আস-সহীহ’ গ্রন্থের প্রথম খন্ডের শুরুতে বর্ণনা করেন- “রোম সম্রাট হীরাকলের নিকট হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুমহান ফরমান- أسلم تسلم (ইসলাম গ্রহন করুন, শান্তিতে থাকবেন) পৌঁছার পর তিনি আবু সুফিয়ানকে ডেকে হুযুর পাক সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করলেন। এর মধ্যে প্রথম প্রশ্নটিই ছিল- كيف نسبه فيكم (আপনাদের মধ্যে তাঁর নসব তথা বংশ মর্যাদা কেমন?)। কারণ এটা স্বতঃসিদ্ধ যে, নবীগণ উচ্চ বংশেই আগমন করেন। আর এখানে এ বিষয়টিকেই তুলে ধরা হয়েছে।
তাফসীরে রুহুল মা‘আনীতে لقد جاء كم من انفسكم এ আয়াতের তাফসীরে এটাও বলা হয়েছে, والمراد الشرف فهو صلي الله عليه وسلم من اشرف العرب (এ انفسكم এর উদ্দেশ্য হলো উচ্চ মর্যাদা, অতএব তিনি আরবদের মধ্যে সর্বোচ্চ সম্মানিত)। এর পরই ইমাম তিরমিযী এবং নাসাঈ থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করা হয়েছে, যাতে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই নিজের নসব নামা বর্ণনা করেছেন। অতএব এখানে এ আয়াতসমূহ বা তাফসীর দ্বারা একথা বলা যাবে না যে, নবীজীর প্রকৃত সত্ত্বা বা হাকীকতে মুহাম্মদী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জাতীতে মানব (জিনসে বাশার)।
তদুপরি আয়াতে لقد جاءكم (তোমাদের নিকট আগমন করেছেন) শব্দটি এসেছে, لقد خلقناكم (তোমাদের মাঝে আমি সৃষ্টি করেছি) বলা হয়নি। কারণ তাঁর সৃষ্টিতো মানব জাতী সৃষ্টিরও সহস্রগুণ পূর্বে।
আর নবী পাকের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে এবং বিভিন্ন ইবারতে যেমনি من انفسكم (তোমাদের মধ্য থেকে), من جنس البشر (মানব জাতী থেকে), من جنس العرب (আরব জাতী থেকে), من البشر (মানব থেকে), من الناس (মানুষ থেকে), ফারসীতে از جنس بشر (মানব জাতী থেকে) প্রভৃতি শব্দাবলী ব্যবহার হয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে من الله (আল্লাহ হতে)-ও বলা হয়েছে। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই জুতা মুবারকের ফিতা লাগাতেন, নিজের কাপড় সেলাই করতেন, নিজ গৃহের কাজ নিজেই সম্পন্ন করতেন। যেমন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ করে থাকে। তিনি আরো বলেন- তিনি মানব জাতীর মধ্য থেকে একজন মানব হিসেবেই ছিলেন। নিজ কাপড় পরিচ্ছন্ন রাখতেন, নিজ হাতে দুধ দোহন করতেন, নিজে নিজের কাজ আঞ্জাম দিতেন।’
[সূত্রঃ ইমাম তিরমিযী, আস-সুনান; খতীব তিবরিযী, মিশকাতুল মাসাবীহ: ৫২০।]
এ সকল বর্ণনার দ্বারা মূলতঃ নবীজীর ফযীলত বর্ণনা করা হয়েছে এবং নবীগণ যে উত্তম বংশেই আসেন, তাঁদের নসব যে উচ্চ বংশের হয়ে থাকে তা স্পষ্ট করা হয়েছে। অর্থাৎ নবী পাক যাদের মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়ে পৃথিবীতে মানবরূপে আগমন করেছেন তাঁদের সকলেই ছিলেন উচ্চ বংশীয়, আর এ বর্ণনাসমূহে এটিই আলোকপাত করা হয়েছে। যেমন ইমাম বুখারী তাঁর ‘আস-সহীহ’ গ্রন্থের প্রথম খন্ডের শুরুতে বর্ণনা করেন- “রোম সম্রাট হীরাকলের নিকট হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুমহান ফরমান- أسلم تسلم (ইসলাম গ্রহন করুন, শান্তিতে থাকবেন) পৌঁছার পর তিনি আবু সুফিয়ানকে ডেকে হুযুর পাক সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করলেন। এর মধ্যে প্রথম প্রশ্নটিই ছিল- كيف نسبه فيكم (আপনাদের মধ্যে তাঁর নসব তথা বংশ মর্যাদা কেমন?)। কারণ এটা স্বতঃসিদ্ধ যে, নবীগণ উচ্চ বংশেই আগমন করেন। আর এখানে এ বিষয়টিকেই তুলে ধরা হয়েছে।
তাফসীরে রুহুল মা‘আনীতে لقد جاء كم من انفسكم এ আয়াতের তাফসীরে এটাও বলা হয়েছে, والمراد الشرف فهو صلي الله عليه وسلم من اشرف العرب (এ انفسكم এর উদ্দেশ্য হলো উচ্চ মর্যাদা, অতএব তিনি আরবদের মধ্যে সর্বোচ্চ সম্মানিত)। এর পরই ইমাম তিরমিযী এবং নাসাঈ থেকে একটি হাদীস বর্ণনা করা হয়েছে, যাতে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই নিজের নসব নামা বর্ণনা করেছেন। অতএব এখানে এ আয়াতসমূহ বা তাফসীর দ্বারা একথা বলা যাবে না যে, নবীজীর প্রকৃত সত্ত্বা বা হাকীকতে মুহাম্মদী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জাতীতে মানব (জিনসে বাশার)।
তদুপরি আয়াতে لقد جاءكم (তোমাদের নিকট আগমন করেছেন) শব্দটি এসেছে, لقد خلقناكم (তোমাদের মাঝে আমি সৃষ্টি করেছি) বলা হয়নি। কারণ তাঁর সৃষ্টিতো মানব জাতী সৃষ্টিরও সহস্রগুণ পূর্বে।
আর নবী পাকের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে এবং বিভিন্ন ইবারতে যেমনি من انفسكم (তোমাদের মধ্য থেকে), من جنس البشر (মানব জাতী থেকে), من جنس العرب (আরব জাতী থেকে), من البشر (মানব থেকে), من الناس (মানুষ থেকে), ফারসীতে از جنس بشر (মানব জাতী থেকে) প্রভৃতি শব্দাবলী ব্যবহার হয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে من الله (আল্লাহ হতে)-ও বলা হয়েছে। যেমন, আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
قد
جاءكم من الله نور وكتاب مبين
অর্থাৎঃ তোমাদের
নিকট ‘আল্লাহ হতে’ নূর এসেছে এবং স্পষ্ট কিতাব।
[সূরা মায়েদা: ১৫।]
এ ব্যাপারে সকল মুফাসসিরগণ একমত যে, আয়াতে ‘নূর’ দ্বারা হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেই বুঝানো হয়েছে। আর ‘নূর’ এবং ‘কিতাব’ দ্বারা যে একই জিনিস বুঝানো হয়নি তাও ইমাম রাযী তাঁর ‘তাফসীরে কাবীর’ এ স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
হাদীস শরীফে من نوره (আল্লাহর নূর হতে) বলা হয়েছে, যেমনটি পূর্বোল্লেখিত উদৃতিসমূহে আলোকপাত করা হয়েছে। আবার من نوره اي هو ذاته (আল্লাহর যাতী নূর হতে) শব্দটিও ব্যবহার হয়েছে, যেমন শারহুল মাওয়াহেব থেকে পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে। কাজেই من انفسكم (তোমাদের মধ্য থেকে), من جنس البشر (মানব জাতী থেকে), من البشر (মানব থেকে), من الناس (মানুষ থেকে) প্রভৃতি শব্দাবলী দ্বারা যদি নবীজীকে ‘জাতীতে মানুষ’ বুঝায়, তাহলে من الله (আল্লাহ হতে), من نوره (আল্লাহর নূর হতে), من نوره اي هو ذاته (আল্লাহর যাতী নূর হতে) প্রভৃতি শব্দাবলী দ্বারা কেন নবীজীকে ‘জাতীতে আল্লাহ’ বুঝাবে না? (নাউযু বিল্লাহ!) সুতরাং من الله (আল্লাহ হতে), من نوره (আল্লাহর নূর হতে), من نوره اي هو ذاته (আল্লাহর যাতী নূর হতে) প্রভৃতি শব্দাবলী দ্বারা যেমনি নবীজীকে ‘জাতীতে আল্লাহ’ বুঝায় না, ঠিক তেমনি-ই من انفسكم (তোমাদের মধ্য থেকে), من جنس البشر (মানব জাতী থেকে), من البشر (মানব থেকে), من الناس (মানুষ থেকে) প্রভৃতি শব্দাবলী দ্বারাও নবীজীকে মূলতঃ ‘জাতীতে মানব’ বুঝায় না।
অনুরূপ, بشر مثلكم (তোমাদের মত মানুষ), اکمل بشر (মানবের পূর্ণতা),افضل النوع الانسان- كما قال الفخر الرازى (মানব জাতীর শ্রেষ্ঠতম) এবং سيد ولد ادم كما قال النبى صلى الله عليه وسلم (আদম সন্তানের সায়্যিদ) প্রভৃতি শব্দাবলী দ্বারাও নবীজীকে মূলতঃ ‘মানুষ’ বা ‘জাতীতে মানব’ বুঝায় না। যেমন, হযরত জিব্রাইলকে পবিত্র কুরআনে- فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا (একজন পরিপূর্ণ বা সুঠাম মানুষের মত-সূরা মরিয়ম: ১৭) বলা হয়েছে। এর দ্বারা হযরত জিব্রাইল ‘জাতীতে মানব’ হয়ে যায়নি।
স্বয়ং হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
[সূরা মায়েদা: ১৫।]
এ ব্যাপারে সকল মুফাসসিরগণ একমত যে, আয়াতে ‘নূর’ দ্বারা হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেই বুঝানো হয়েছে। আর ‘নূর’ এবং ‘কিতাব’ দ্বারা যে একই জিনিস বুঝানো হয়নি তাও ইমাম রাযী তাঁর ‘তাফসীরে কাবীর’ এ স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
হাদীস শরীফে من نوره (আল্লাহর নূর হতে) বলা হয়েছে, যেমনটি পূর্বোল্লেখিত উদৃতিসমূহে আলোকপাত করা হয়েছে। আবার من نوره اي هو ذاته (আল্লাহর যাতী নূর হতে) শব্দটিও ব্যবহার হয়েছে, যেমন শারহুল মাওয়াহেব থেকে পূর্বে বর্ণনা করা হয়েছে। কাজেই من انفسكم (তোমাদের মধ্য থেকে), من جنس البشر (মানব জাতী থেকে), من البشر (মানব থেকে), من الناس (মানুষ থেকে) প্রভৃতি শব্দাবলী দ্বারা যদি নবীজীকে ‘জাতীতে মানুষ’ বুঝায়, তাহলে من الله (আল্লাহ হতে), من نوره (আল্লাহর নূর হতে), من نوره اي هو ذاته (আল্লাহর যাতী নূর হতে) প্রভৃতি শব্দাবলী দ্বারা কেন নবীজীকে ‘জাতীতে আল্লাহ’ বুঝাবে না? (নাউযু বিল্লাহ!) সুতরাং من الله (আল্লাহ হতে), من نوره (আল্লাহর নূর হতে), من نوره اي هو ذاته (আল্লাহর যাতী নূর হতে) প্রভৃতি শব্দাবলী দ্বারা যেমনি নবীজীকে ‘জাতীতে আল্লাহ’ বুঝায় না, ঠিক তেমনি-ই من انفسكم (তোমাদের মধ্য থেকে), من جنس البشر (মানব জাতী থেকে), من البشر (মানব থেকে), من الناس (মানুষ থেকে) প্রভৃতি শব্দাবলী দ্বারাও নবীজীকে মূলতঃ ‘জাতীতে মানব’ বুঝায় না।
অনুরূপ, بشر مثلكم (তোমাদের মত মানুষ), اکمل بشر (মানবের পূর্ণতা),افضل النوع الانسان- كما قال الفخر الرازى (মানব জাতীর শ্রেষ্ঠতম) এবং سيد ولد ادم كما قال النبى صلى الله عليه وسلم (আদম সন্তানের সায়্যিদ) প্রভৃতি শব্দাবলী দ্বারাও নবীজীকে মূলতঃ ‘মানুষ’ বা ‘জাতীতে মানব’ বুঝায় না। যেমন, হযরত জিব্রাইলকে পবিত্র কুরআনে- فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا (একজন পরিপূর্ণ বা সুঠাম মানুষের মত-সূরা মরিয়ম: ১৭) বলা হয়েছে। এর দ্বারা হযরত জিব্রাইল ‘জাতীতে মানব’ হয়ে যায়নি।
স্বয়ং হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
من
راني فقد راي الحق
অর্থাৎঃ
‘যে আমাকে দেখল, সে হককে তথা আল্লাহকেই দেখল।’
ইমাম ওয়াসেতী বলেন-
‘যে আমাকে দেখল, সে হককে তথা আল্লাহকেই দেখল।’
ইমাম ওয়াসেতী বলেন-
أن
البشرية في نبيه عارية واضافة لاحقيقة يعني فظاهره مخلوق وباطنه حق
অর্থাৎঃ
‘নিশ্চয় আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাশারিয়াত বা মানবত্ব ক্ষণস্থায়ী এবং তা (পোষাক স্বরূপ) সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এটা (বাশারিয়াত) তাঁর মূল নয়। অর্থাৎ বাহ্যত তিনি মাখলুক, আর বাতেনে তিনি হক তথা আল্লাহর তাজাল্লিয়াতের আয়না স্বরূপ।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৯/২১।]
যদি بشر (বাশার) বা انسان (ইনসান) প্রভৃতি শব্দাবলী দ্বারা নবীজীকে ‘জাতীতে মানুষ’ বলে সাব্যস্ত করা হয়, তাহলে উল্লেখিত ইবারত দু’টি দ্বারা কেন নবীজীকে ‘জাতীতে আল্লাহ’ বলে সাব্যস্ত করা হবে না? (নাউযু বিল্লাহ!)
উদৃত ইবারতসমূহে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ই ‘হক’ এর দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে? এ ব্যাপারে আল্লামা ইসমাইল হাক্কী বলেন-
‘নিশ্চয় আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাশারিয়াত বা মানবত্ব ক্ষণস্থায়ী এবং তা (পোষাক স্বরূপ) সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এটা (বাশারিয়াত) তাঁর মূল নয়। অর্থাৎ বাহ্যত তিনি মাখলুক, আর বাতেনে তিনি হক তথা আল্লাহর তাজাল্লিয়াতের আয়না স্বরূপ।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৯/২১।]
যদি بشر (বাশার) বা انسان (ইনসান) প্রভৃতি শব্দাবলী দ্বারা নবীজীকে ‘জাতীতে মানুষ’ বলে সাব্যস্ত করা হয়, তাহলে উল্লেখিত ইবারত দু’টি দ্বারা কেন নবীজীকে ‘জাতীতে আল্লাহ’ বলে সাব্যস্ত করা হবে না? (নাউযু বিল্লাহ!)
উদৃত ইবারতসমূহে নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ই ‘হক’ এর দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে? এ ব্যাপারে আল্লামা ইসমাইল হাক্কী বলেন-
الحاصل
ان الله تعالى جعل نبيه صلي الله عليه وسلم مظهرا لكمالاته ومرأة لتجلياته ولذا
قال عليه السلام من راني فقد راي الحق
অর্থাৎঃ
‘সারকথা হল, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বীয় কামালতের প্রকাশস্থল এবং তাঁর তাজাল্লিয়াতের আয়না করেছেন। আর এ জন্যই নবীজী ইরশাদ করেন- যে আমাকে দেখল, সে হক বা আল্লাহকেই দেখল।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৯/২১।]
এখানে ‘হক’ বলতে আল্লাহর কামালতের প্রকাশস্থল এবং তাঁর তাজাল্লিয়াতের আয়না উদ্দেশ্য।
তদ্রুপ, بشر مثلكم (তোমাদের মত মানুষ) দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে? এ ব্যাপারেও আল্লামা ইসমাইল হাক্কী বলেন-
‘সারকথা হল, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে স্বীয় কামালতের প্রকাশস্থল এবং তাঁর তাজাল্লিয়াতের আয়না করেছেন। আর এ জন্যই নবীজী ইরশাদ করেন- যে আমাকে দেখল, সে হক বা আল্লাহকেই দেখল।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৯/২১।]
এখানে ‘হক’ বলতে আল্লাহর কামালতের প্রকাশস্থল এবং তাঁর তাজাল্লিয়াতের আয়না উদ্দেশ্য।
তদ্রুপ, بشر مثلكم (তোমাদের মত মানুষ) দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে? এ ব্যাপারেও আল্লামা ইসমাইল হাক্কী বলেন-
أدمى
مثلكم فى الصورة ومساويكم فى بعض الصفات البشرية
অর্থাৎঃ
‘আকৃতিতে তোমাদের মত মানুষ আর কতেক মানবীয় বৈশিষ্ট্যে তোমাদের সমান।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৫/৩৫৩।]
এখানে ‘ بشر (মানুষ)’ বলতে আকৃতিতে মানুষ উদ্দেশ্য, জাতীতে মানব নয়। অর্থাৎ তিনি কখনো সুরতে মালাকীতে ছিলেন, কখনো ময়ুর রূপে, কখনো তারকা রূপে ছিলেন। তদ্রূপ তিনি একসময় মানব জাতীর (জিনসে বাশার) মধ্য থেকে মানব সুরতে এসেছেন। তবে তাঁর জাত (জিনস) না তারকা, না ময়ূর, না ফেরেশতা, আর না মানব। ফেরেশতা সুরতে থাকার কারনে যেমনি তিনি জাতীতে ফেরেশতা নন, ময়ুর রূপে থাকার কারণে যেমনি তিনি জাতীতে ময়ুর নন, তারকার আকৃতিতে থাকার কারণে যেমনি তিনি জাতীতে তারকা নন, ঠিক তেমনি মানব জাতীর মধ্য থেকে মানব আকৃতিতে আসার কারণেও তিনি জাতীতে মানব নন। তাঁর জাত বা প্রকৃত সত্ত্বা কি আল্লাহই ভাল জানেন, যেমনটি রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আবু বকর সিদ্দিককে লক্ষ্য করে বলেছিলেন। আল্লামা ইমাম যারকানীও বলেন-
‘আকৃতিতে তোমাদের মত মানুষ আর কতেক মানবীয় বৈশিষ্ট্যে তোমাদের সমান।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৫/৩৫৩।]
এখানে ‘ بشر (মানুষ)’ বলতে আকৃতিতে মানুষ উদ্দেশ্য, জাতীতে মানব নয়। অর্থাৎ তিনি কখনো সুরতে মালাকীতে ছিলেন, কখনো ময়ুর রূপে, কখনো তারকা রূপে ছিলেন। তদ্রূপ তিনি একসময় মানব জাতীর (জিনসে বাশার) মধ্য থেকে মানব সুরতে এসেছেন। তবে তাঁর জাত (জিনস) না তারকা, না ময়ূর, না ফেরেশতা, আর না মানব। ফেরেশতা সুরতে থাকার কারনে যেমনি তিনি জাতীতে ফেরেশতা নন, ময়ুর রূপে থাকার কারণে যেমনি তিনি জাতীতে ময়ুর নন, তারকার আকৃতিতে থাকার কারণে যেমনি তিনি জাতীতে তারকা নন, ঠিক তেমনি মানব জাতীর মধ্য থেকে মানব আকৃতিতে আসার কারণেও তিনি জাতীতে মানব নন। তাঁর জাত বা প্রকৃত সত্ত্বা কি আল্লাহই ভাল জানেন, যেমনটি রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আবু বকর সিদ্দিককে লক্ষ্য করে বলেছিলেন। আল্লামা ইমাম যারকানীও বলেন-
والباطن
حقيقة ذاته فلا يعرف أصلا
অর্থাৎঃ
‘আর নবী পাকের যাতের প্রকৃত অবস্থা হল বাতেন, কাজেই মূলতঃ তা জানা যায় না।’
[সূত্রঃ ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ১/৫৫।]
এ সকল আয়াত বা উদ্ধৃতিসমূহের উদ্দেশ্যও তা-ই।
আর এ সকল বর্ণনা দ্বারা কাফের মুশরিকদের ঐ আপত্তির জবাব দেয়াও উদ্দেশ্য যে, তারা বলত- রাসূল হিসেবে কেন ফেরেশতা অবতীর্ণ হয়না কিংবা অনেকে মনে করে মহিলাদের থেকে নবী-রাসূল হবে।
সুতরাং এর জবাব দেয়া হয়েছে যে- নবী মানব জাতী থেকেই হয়, ফেরেশতাদের থেকে হয় না। তবে রাসূল মানুষ এবং ফেরেশতাগণের থেকে হতে পারে। আবার কোন মহিলাও নবী বা রাসূল হয় না। (খাযাইনুল ইরফান দ্রষ্টব্য)
আর এ কথাও স্পষ্ট যে, আমাদের নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বশেষে মানব জাতীর মধ্যে আরবীয়দের থেকেই প্রকাশ হয়েছেন, ফেরেশতা কিংবা জিন জাতী থেকে নয়।
সুতরাং কেউ যদি নবী পাক মানব জাতীর মধ্য থেকে এবং আরববাসীদের মধ্য থেকে প্রকাশ হওয়াকে অস্বীকার করে তাহলে কুরআন অস্বীকার হবে।
তবে এর দ্বারা উদ্দেশ্য এটা নয় যে, নবী পাকের হাকীকী জাত মানুষ বা তিনি জাতীতে মানুষ। বরং মানব জাতী থেকে নবী পাকের আগমনকে মানব জাতী আশরাফুল মাখলুকাত হওয়া এবং এ পৃথিবীতে তাঁকে পাঠানোর একটি মাধ্যম করা হয়েছে মাত্র।
আল্লামা মাহমুদ আলুসী বলেন-
অর্থাৎঃ
‘আর নবী পাকের যাতের প্রকৃত অবস্থা হল বাতেন, কাজেই মূলতঃ তা জানা যায় না।’
[সূত্রঃ ইমাম যারকানী, শারহুল মাওয়াহেব: ১/৫৫।]
এ সকল আয়াত বা উদ্ধৃতিসমূহের উদ্দেশ্যও তা-ই।
আর এ সকল বর্ণনা দ্বারা কাফের মুশরিকদের ঐ আপত্তির জবাব দেয়াও উদ্দেশ্য যে, তারা বলত- রাসূল হিসেবে কেন ফেরেশতা অবতীর্ণ হয়না কিংবা অনেকে মনে করে মহিলাদের থেকে নবী-রাসূল হবে।
সুতরাং এর জবাব দেয়া হয়েছে যে- নবী মানব জাতী থেকেই হয়, ফেরেশতাদের থেকে হয় না। তবে রাসূল মানুষ এবং ফেরেশতাগণের থেকে হতে পারে। আবার কোন মহিলাও নবী বা রাসূল হয় না। (খাযাইনুল ইরফান দ্রষ্টব্য)
আর এ কথাও স্পষ্ট যে, আমাদের নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বশেষে মানব জাতীর মধ্যে আরবীয়দের থেকেই প্রকাশ হয়েছেন, ফেরেশতা কিংবা জিন জাতী থেকে নয়।
সুতরাং কেউ যদি নবী পাক মানব জাতীর মধ্য থেকে এবং আরববাসীদের মধ্য থেকে প্রকাশ হওয়াকে অস্বীকার করে তাহলে কুরআন অস্বীকার হবে।
তবে এর দ্বারা উদ্দেশ্য এটা নয় যে, নবী পাকের হাকীকী জাত মানুষ বা তিনি জাতীতে মানুষ। বরং মানব জাতী থেকে নবী পাকের আগমনকে মানব জাতী আশরাফুল মাখলুকাত হওয়া এবং এ পৃথিবীতে তাঁকে পাঠানোর একটি মাধ্যম করা হয়েছে মাত্র।
আল্লামা মাহমুদ আলুসী বলেন-
وقد
سئل الشيخ ولى الدين العراقى هل العلم بكونه صلى الله عليه وسلم بشرا ومن العرب
شرط فى صحة الايمان او من فروض الكفاية؟ فاجاب بانه شرط فى صحة الايمان- ثم قال:
فلو قال شخص: او من برسالة محمد صلى الله عليه وسلم الى جميع الخلق لكن لا ادرى هل
هو من البشر او من الملائكة او من الجن اولا ادرى هل هو من العرب او العجم؟ فلا شك
فى كفره لتكذيبه القران
অর্থাৎঃ শায়খ
ওয়ালিউদ্দিন ইরাকীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে,
‘রাসূল পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানব
হওয়া এবং আরবদের থেকে হওয়া’ সম্পর্কে জ্ঞান রাখা কি ঈমান বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত অথবা তা কি ফরযে কিফায়া? তদোত্তরে তিনি বলেন- নিশ্চয় ‘তিনি মানব হওয়া এবং আরবদের থেকে হওয়া’ সম্পর্কে জ্ঞান রাখা বিশুদ্ধ ঈমানের শর্ত। অতঃপর তিনি বলেন- যদি কোন ব্যক্তি বলে যে, আমি বিশ্বাস করি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রিসালাত সমগ্র সৃষ্টির জন্য। কিন্তু আমি জানি না যে- তাঁর প্রকাশ কি মানবদের থেকে, না ফেরেশতাদের থেকে, না জ্বিনদের থেকে অথবা আমি জানি না তিনি কি আরবীয় না অনারবীয়? ঐ ব্যক্তির কুফরী সম্পর্কে কোন সন্দেহ
নেই, কেননা সে কুরআনকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে।
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা আলুসী, রুহুল মা‘আনী: ২/১১৩।]
(নোট: উল্লেখিত এ ইবারতের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন পুস্তিকা ও লিখায় বিষয়টি দেখা যায় অর্থকে বিকৃত করা হয়েছে। এখানেও শুধু ‘মানব হওয়া’ অর্থের পরিবর্তে ‘জাতীতে মানব’ লিখা হয়েছে। আবার নবীজীর প্রকাশ ‘মানবদের থেকে, না ফেরেশতাদের থেকে হয়েছে’ এর অর্থ লিখা হয়েছে ‘মানব জাতী না ফেরেশতা জাতীয়’। যা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং মূলভাবকে পরিবর্তন করা।)
কারন, কুরআনে এসেছে- নবীজী মানব জাতীর মধ্যে এবং আরবে এসেছেন। আবার কুরআনে তাও এসেছে যে, নবীগণ মানবদের থেকেই হয়ে থাকেন। শারহুল আকাঈদ, আরবাইন, বাহারে শরীয়ত কিতাবসমূহে নবীর সংজ্ঞায় এসেছে- “নবী হচ্ছেন সে সব পুরুষ মানুষ, যাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা শরীয়তের বিধি-নিষেধ প্রচার করার জন্য পাঠিয়েছেন। অতএব নবী মানুষ ভিন্ন অন্যকেহ নন, আর মহিলাও নন।”
[সূত্রঃ মুফতী আহমাদ ইয়ার খান নঈমী, জা-আল হক, প্রথম খন্ড।]
হাকীমুল উম্মত মুফতী আহমাদ ইয়ার খান নঈমী এ বিষয়টির সুন্দর ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন-
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা আলুসী, রুহুল মা‘আনী: ২/১১৩।]
(নোট: উল্লেখিত এ ইবারতের ক্ষেত্রেও বিভিন্ন পুস্তিকা ও লিখায় বিষয়টি দেখা যায় অর্থকে বিকৃত করা হয়েছে। এখানেও শুধু ‘মানব হওয়া’ অর্থের পরিবর্তে ‘জাতীতে মানব’ লিখা হয়েছে। আবার নবীজীর প্রকাশ ‘মানবদের থেকে, না ফেরেশতাদের থেকে হয়েছে’ এর অর্থ লিখা হয়েছে ‘মানব জাতী না ফেরেশতা জাতীয়’। যা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং মূলভাবকে পরিবর্তন করা।)
কারন, কুরআনে এসেছে- নবীজী মানব জাতীর মধ্যে এবং আরবে এসেছেন। আবার কুরআনে তাও এসেছে যে, নবীগণ মানবদের থেকেই হয়ে থাকেন। শারহুল আকাঈদ, আরবাইন, বাহারে শরীয়ত কিতাবসমূহে নবীর সংজ্ঞায় এসেছে- “নবী হচ্ছেন সে সব পুরুষ মানুষ, যাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা শরীয়তের বিধি-নিষেধ প্রচার করার জন্য পাঠিয়েছেন। অতএব নবী মানুষ ভিন্ন অন্যকেহ নন, আর মহিলাও নন।”
[সূত্রঃ মুফতী আহমাদ ইয়ার খান নঈমী, জা-আল হক, প্রথম খন্ড।]
হাকীমুল উম্মত মুফতী আহমাদ ইয়ার খান নঈমী এ বিষয়টির সুন্দর ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন-
نبی
جنس بشر مين آتے ہین اور انسان ہی ہوتے ہین جن يا فرشتہ نہین ہوتے یہ دنياوی
احكام ہین ورنہ بشریت کی ابتداء آدم عليه السلام سے ہوتی کیونکہ وہ ہی ابو البشر
ہین اور حضور عليه الصلاة والسلام اس وقت نبی ہین جبکہ آدم عليه السلام آب وگل
مین ہین
অর্থাৎঃ
‘নবী মানব জাতীর মধ্যেই এসে থাকেন এবং মানুষই হন জিন কিংবা ফেরেশতা নন। এটাতো দুনিয়াবী একটি বিধান মাত্র। অন্যথায় মানব জাতীর শুরুই হয়েছে আদম আলাইহিস সালাম থেকে। কেননা তিনি আবুল বাশার (মানব জাতীর পিতা)। আর হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামতো ঐ সময় থেকেই নবী হিসেবে ছিলেন যখন আদম আলাইহিস সালাম মাটি ও পানিতে একাকার ছিলেন।’
[সূত্রঃ মুফতী আহমাদ ইয়ার খান নঈমী, জা-আল হক, প্রথম খন্ড।]
নবী পাকের সৃষ্টি যে মানব জাতী সৃষ্টিরও অনেক আগে, এমনকি সর্ব প্রথম সৃষ্টিই তিনি এ ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই। এখন তিনি সৃষ্টি হিসেবে সর্বপ্রথম প্রমাণিত, আর নবী হিসেবে কখন থেকে মনোনীত- এ ব্যাপারে হাকীমুল উম্মত মুফতী আহমদ ইয়ার খান নঈমী এর পূর্বোক্ত বর্ণানাটিই আমাদের জন্য যথেষ্ট তদুপরি নিম্নে হাদীস শরীফ থেকে প্রমাণ পেশ করা হলো।
হযরত ইবনু আব্বাস ও আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম হতে বর্ণিত রয়েছে, তাঁরা বলেন- ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার জন্য নবুয়্যত কখন অবধারিত হয়েছে? জবাবে নবীজী ইরশাদ করেন-
‘নবী মানব জাতীর মধ্যেই এসে থাকেন এবং মানুষই হন জিন কিংবা ফেরেশতা নন। এটাতো দুনিয়াবী একটি বিধান মাত্র। অন্যথায় মানব জাতীর শুরুই হয়েছে আদম আলাইহিস সালাম থেকে। কেননা তিনি আবুল বাশার (মানব জাতীর পিতা)। আর হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামতো ঐ সময় থেকেই নবী হিসেবে ছিলেন যখন আদম আলাইহিস সালাম মাটি ও পানিতে একাকার ছিলেন।’
[সূত্রঃ মুফতী আহমাদ ইয়ার খান নঈমী, জা-আল হক, প্রথম খন্ড।]
নবী পাকের সৃষ্টি যে মানব জাতী সৃষ্টিরও অনেক আগে, এমনকি সর্ব প্রথম সৃষ্টিই তিনি এ ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই। এখন তিনি সৃষ্টি হিসেবে সর্বপ্রথম প্রমাণিত, আর নবী হিসেবে কখন থেকে মনোনীত- এ ব্যাপারে হাকীমুল উম্মত মুফতী আহমদ ইয়ার খান নঈমী এর পূর্বোক্ত বর্ণানাটিই আমাদের জন্য যথেষ্ট তদুপরি নিম্নে হাদীস শরীফ থেকে প্রমাণ পেশ করা হলো।
হযরত ইবনু আব্বাস ও আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুম হতে বর্ণিত রয়েছে, তাঁরা বলেন- ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার জন্য নবুয়্যত কখন অবধারিত হয়েছে? জবাবে নবীজী ইরশাদ করেন-
كنت
نبيا وادم بين الروح والجسد
অর্থাৎঃ
‘আমি তখন নবী ছিলাম যখন আদম আলাইহিস সালাম দেহ ও রূহের মধ্যে ছিলেন।’
[সূত্রঃ ইমাম তিরমিযী, আস-সুনান; ইমাম বুখারী, তারীখুল কাবীর; খতিব তিবরিযী, মিশকাত: ৫১৩, ইমাম সুয়ূতী, খাছায়েছুল কুবরা: ১/৩।]
হযরত আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত, নবীজী ইরশাদ করেন-
‘আমি তখন নবী ছিলাম যখন আদম আলাইহিস সালাম দেহ ও রূহের মধ্যে ছিলেন।’
[সূত্রঃ ইমাম তিরমিযী, আস-সুনান; ইমাম বুখারী, তারীখুল কাবীর; খতিব তিবরিযী, মিশকাত: ৫১৩, ইমাম সুয়ূতী, খাছায়েছুল কুবরা: ১/৩।]
হযরত আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত, নবীজী ইরশাদ করেন-
كنت
اول النبيين في الخلق واخرهم في البعث
অর্থাৎঃ
‘আমি হলাম সৃষ্টিতে নবীদের প্রথম এবং প্রেরণের দিক থেকে নবীদের শেষ।’
[সূত্রঃ ইমাম দায়লামী, আল-ফিরদাউস: ৩/২৮২; ইমাম সুয়ূতী, খাছায়েছুল কুবরা: ১/৫; ইবনু কাছীর, তাফসীরে ইবনে কাছির: ৩/৪৭০; ইমাম ইবনে আদি, তারীখুল কামেল: ৩/৩৭৩।]
সুতরাং যার সৃষ্টি মানব জাতীর সহস্র-কোটি বছর পূর্বে, যার নবুয়্যত মানব জাতীর সর্ব প্রথম মানব আদম আলাইহিস সালাম এর পূর্বে, তিনি কি করে ‘জাতীতে মানব’ হতে পারেন? শুধু মাত্র মানব জাতীর মধ্য থেকে বহিঃপ্রকাশ ঘটার কারণেই কি করে তাঁকে ‘জাতীতে মানব’ বলা যাবে?
তবে হ্যাঁ, যেহেতু তিনি মানব আকৃতিতে এসেছেন, পূর্ণাঙ্গ মানবীয় গুণে তিনি ভূষিত এবং মানবের পূর্ণতা (اکمل بشر), তাই এ দৃষ্টিকোন থেকে তাঁকে মানুষ বা বাশার, মানব জাতীর শ্রেষ্ঠতম (افضل النوع الانسان- كما قال الفخر الرازى), এবং আদম সন্তানের সায়্যিদ (سيد ولد ادم كما قال النبى صلى الله عليه وسلم) বলে মানতে হবে। আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী বলেন-
‘আমি হলাম সৃষ্টিতে নবীদের প্রথম এবং প্রেরণের দিক থেকে নবীদের শেষ।’
[সূত্রঃ ইমাম দায়লামী, আল-ফিরদাউস: ৩/২৮২; ইমাম সুয়ূতী, খাছায়েছুল কুবরা: ১/৫; ইবনু কাছীর, তাফসীরে ইবনে কাছির: ৩/৪৭০; ইমাম ইবনে আদি, তারীখুল কামেল: ৩/৩৭৩।]
সুতরাং যার সৃষ্টি মানব জাতীর সহস্র-কোটি বছর পূর্বে, যার নবুয়্যত মানব জাতীর সর্ব প্রথম মানব আদম আলাইহিস সালাম এর পূর্বে, তিনি কি করে ‘জাতীতে মানব’ হতে পারেন? শুধু মাত্র মানব জাতীর মধ্য থেকে বহিঃপ্রকাশ ঘটার কারণেই কি করে তাঁকে ‘জাতীতে মানব’ বলা যাবে?
তবে হ্যাঁ, যেহেতু তিনি মানব আকৃতিতে এসেছেন, পূর্ণাঙ্গ মানবীয় গুণে তিনি ভূষিত এবং মানবের পূর্ণতা (اکمل بشر), তাই এ দৃষ্টিকোন থেকে তাঁকে মানুষ বা বাশার, মানব জাতীর শ্রেষ্ঠতম (افضل النوع الانسان- كما قال الفخر الرازى), এবং আদম সন্তানের সায়্যিদ (سيد ولد ادم كما قال النبى صلى الله عليه وسلم) বলে মানতে হবে। আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী বলেন-
واین
کمال ست کہ جز اکمل بشر وسید رسل را صلوات اللہ وسلامہ میسر نیست
অর্থাৎঃ
‘এটা এমন পরিপূর্ণতা যে, যা মানবের পূর্ণতা (اکمل بشر) ও সকল রাসূলের সরদার হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যতীত আর কেউই লাভ করতে পারেনি।’
[সূত্রঃ আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী, মাদারেজুন নবুয়্যত: ১/২০৪।]
আ‘লা হযরত কিবলা বলেন-
‘এটা এমন পরিপূর্ণতা যে, যা মানবের পূর্ণতা (اکمل بشر) ও সকল রাসূলের সরদার হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যতীত আর কেউই লাভ করতে পারেনি।’
[সূত্রঃ আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী, মাদারেজুন নবুয়্যত: ১/২০৪।]
আ‘লা হযরত কিবলা বলেন-
وه
بشر ہين مگر عالم علوى سے لاكھ درجہ اشرف واحسن وه انسان ہين مگر ارواح وملائكہ سے
ہزار درجہ الطف وه خود فرماتے ہين لست مثلكم مين تم جيسا نہين رواه الشيخان ويروي
لست لهيئتكم مين تمہارے ہيئت پر نہين ويروي ايكم مثلي تم مين كون مجھ جيساہے
অর্থাৎঃ
‘তিনি বাশার কিন্তু আলমে উলভী থেকে লক্ষ্যগুণ শ্রেষ্ঠ এবং সৌন্দর্যমন্ডিত। তিনি মানবীয় দেহ রাখেন কিন্তু রূহসমূহ এবং ফেরেশতাগণ হতে হাজারগুণ সুক্ষ্ম। নবীজী নিজেই ইরশাদ করেন- لست كمثلكم (আমি তোমাদের মত নই)। (বুখারী ও মুসলিম) আরো বর্ণিত আছে- لست كهيئتكم (আমি তোমাদের সত্ত্বার মত নই)। আরো বর্ণিত আছে- ايكم مثلى (তোমাদের মধ্যে কে আমার মত?)।
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, নাফিউল ফাই: ১৮।]
আ‘লা হযরত কিবলা আরো বলেন-
‘তিনি বাশার কিন্তু আলমে উলভী থেকে লক্ষ্যগুণ শ্রেষ্ঠ এবং সৌন্দর্যমন্ডিত। তিনি মানবীয় দেহ রাখেন কিন্তু রূহসমূহ এবং ফেরেশতাগণ হতে হাজারগুণ সুক্ষ্ম। নবীজী নিজেই ইরশাদ করেন- لست كمثلكم (আমি তোমাদের মত নই)। (বুখারী ও মুসলিম) আরো বর্ণিত আছে- لست كهيئتكم (আমি তোমাদের সত্ত্বার মত নই)। আরো বর্ণিত আছে- ايكم مثلى (তোমাদের মধ্যে কে আমার মত?)।
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, নাফিউল ফাই: ১৮।]
আ‘লা হযরত কিবলা আরো বলেন-
جو
مطلقا حضور سے بشریت کی نفی کرے وہ کافر ہے قال اللہ تعالي قل سبحان ربي هل كنت
الا بشرا رسولا
অর্থাৎঃ
‘যে ব্যক্তি হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাধারণভাবে বাশারীয়াতকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করবে (যে তিনি মানব আকৃতির ছিলেন না বা মানব নন), সে কাফের। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন- قل سبحان ربي هل كنت الا بشرا رسولا অর্থাৎ আপনি বলুন, আমার রবের পবিত্রতা! আমি নই কিন্তু বাশার, রাসূল-সূরা বনি ইসরাইল: ৯৩।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়া: ৬/৬৭।]
মুজাদ্দিদে আলফেসানী বলেন-
‘যে ব্যক্তি হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাধারণভাবে বাশারীয়াতকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করবে (যে তিনি মানব আকৃতির ছিলেন না বা মানব নন), সে কাফের। আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন- قل سبحان ربي هل كنت الا بشرا رسولا অর্থাৎ আপনি বলুন, আমার রবের পবিত্রতা! আমি নই কিন্তু বাশার, রাসূল-সূরা বনি ইসরাইল: ৯৩।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়া: ৬/৬৭।]
মুজাদ্দিদে আলফেসানী বলেন-
چنانکہ
كفار انبياء را عليهم الصلوات والتسليمات در رنگ سائر بشر دانستہ از کمالات نبوت
انكار نموده اند
অর্থাৎঃ
‘সুতরাং কাফিররা সম্মানিত নবীগণ আলাইহিমুস সালামকে অন্যান্য মানুষের মত জেনে তাঁদের পূর্ণতাসমূহকে অস্বীকার করেছে।’
[অর্থাৎঃ মুজাদ্দিদে আলফেসানী, মাকতুবাত, দফতরে আউয়াল: ২/১১৪।]
অতএব নবীগণকে আমাদের মত সাধারান মানুষ বলেও হেয় প্রতিপন্ন করা যাবে না এবং মানুষ নবী হতে পারে না বলেও তাঁদেরকে অস্বীকার করা যাবে না। আবার আমাদের নবীর প্রকৃত সত্ত্বাকে জাতীতে মানবও বলা যাবে না। শায়খ আবুল মাওয়াহেব শাযেলী তাঁর কবিতায় সুন্দর বলেছেন-
‘সুতরাং কাফিররা সম্মানিত নবীগণ আলাইহিমুস সালামকে অন্যান্য মানুষের মত জেনে তাঁদের পূর্ণতাসমূহকে অস্বীকার করেছে।’
[অর্থাৎঃ মুজাদ্দিদে আলফেসানী, মাকতুবাত, দফতরে আউয়াল: ২/১১৪।]
অতএব নবীগণকে আমাদের মত সাধারান মানুষ বলেও হেয় প্রতিপন্ন করা যাবে না এবং মানুষ নবী হতে পারে না বলেও তাঁদেরকে অস্বীকার করা যাবে না। আবার আমাদের নবীর প্রকৃত সত্ত্বাকে জাতীতে মানবও বলা যাবে না। শায়খ আবুল মাওয়াহেব শাযেলী তাঁর কবিতায় সুন্দর বলেছেন-
محمد
بشر لا كالبشر.. بل هو ياقوت بين الحجر
অর্থাৎঃ
‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (আকৃতিতে) মানুষ হলেও অন্যান্য মানুষের মতো নন (অর্থাৎ তাঁর মানবীয় সুরতও অন্যান্যদের থেকে স্বতন্ত্র), ইয়াকুত একটি মূল্যবান পাথর যা অন্যসব পাথরের মত নয়।’
সূরা কাহাফের ১১০ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
‘মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (আকৃতিতে) মানুষ হলেও অন্যান্য মানুষের মতো নন (অর্থাৎ তাঁর মানবীয় সুরতও অন্যান্যদের থেকে স্বতন্ত্র), ইয়াকুত একটি মূল্যবান পাথর যা অন্যসব পাথরের মত নয়।’
সূরা কাহাফের ১১০ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
قل
انما انا بشر مثلكم يوحي الي
আ‘লা হযরত কিবলা এ আয়াতের অনুবাদ এভাবে করেছেন যে-
تم
فرماٶ ظاہرى صورت بشرى مين تو مين تم جيساہون مجهے وحى أتى ہے
অর্থাৎঃ
“(হে নবী!) আপনি বলুন, প্রকাশ্য মানবীয় আকৃতিতে তো আমি তোমাদের মত, আমার নিকট ওহী আসে)।”
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, কানযুল ঈমান।]
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরে রুহুল বায়ানে বলা হয়েছে-
“(হে নবী!) আপনি বলুন, প্রকাশ্য মানবীয় আকৃতিতে তো আমি তোমাদের মত, আমার নিকট ওহী আসে)।”
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, কানযুল ঈমান।]
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরে রুহুল বায়ানে বলা হয়েছে-
قل
يا محمد ما انا الا أدمى مثلكم فى الصورة ومساويكم فى بعض الصفات البشرية
অর্থাৎঃ
‘বলুন হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আমিতো আকৃতিতে তোমাদের মতই মানুষ, আর কতেক মানবীয় বৈশিষ্ট্যে তোমাদের সমান।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৫/৩৫৩।]
কাজেই তিনি বাশারও এবং নূরও। আর বাশার হওয়া নূর হওয়ার প্রতিবন্ধকও নয়। নূর ও বাশার এই দুই বৈশিষ্ট্য যে একই সত্ত্বার মধ্যে একত্রিত হতে পারে তা নিম্নোক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। হযরত জিব্রাইল নূর হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে এ আয়াতে বাশার বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে-
‘বলুন হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম), আমিতো আকৃতিতে তোমাদের মতই মানুষ, আর কতেক মানবীয় বৈশিষ্ট্যে তোমাদের সমান।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৫/৩৫৩।]
কাজেই তিনি বাশারও এবং নূরও। আর বাশার হওয়া নূর হওয়ার প্রতিবন্ধকও নয়। নূর ও বাশার এই দুই বৈশিষ্ট্য যে একই সত্ত্বার মধ্যে একত্রিত হতে পারে তা নিম্নোক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। হযরত জিব্রাইল নূর হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে এ আয়াতে বাশার বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে-
فَأَرْسَلْنَا
إِلَيْهَا رُوحَنَا فَتَمَثَّلَ لَهَا بَشَرًا سَوِيًّا
অর্থাৎঃ ‘অতঃপর তাঁর (মরিয়ম) প্রতি আমি আমার রূহানী সত্ত্বাকে প্রেরণ করেছি। সে তাঁর সামনে একজন সুঠাম মানুষের
(বাশার) রূপে আত্মপ্রকাশ করেন।’
[সূরা মরিয়ম: ১৭।]
কিন্তু এ মানবীয়তা তাঁর বিশেষ গুণ (صفات), যাত (ذات) নয়। আর নবীজীর জাত (জিনস) বা হাকীকতও মানুষ নয়, এ মানবীয়তা তাঁর একটা পোষাক মাত্র। আর এটাই আমাদের আকাবেরদের আক্বীদা।
যেমন, আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী বলেন-
[সূরা মরিয়ম: ১৭।]
কিন্তু এ মানবীয়তা তাঁর বিশেষ গুণ (صفات), যাত (ذات) নয়। আর নবীজীর জাত (জিনস) বা হাকীকতও মানুষ নয়, এ মানবীয়তা তাঁর একটা পোষাক মাত্র। আর এটাই আমাদের আকাবেরদের আক্বীদা।
যেমন, আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী বলেন-
آنحضرت
بتمام از فرق تا قدم ہمہ نور بود کہ دیدۂ حیرت در جمال باکمال وی خیرہ میشد مثل
ماہ وآفتاب تابان وروشن بود واگر نہ نقاب بشریت پوشیدہ بودی ہیچکس را مجال نظر
وادراک حسن او ممکن نبودی وہمیشہ جوہر وى نوری بود کہ انتقال کرد از اصلاب آباوا
رحام امھات اززمن آدم تا انتقال بصلب عبد اللہ ورحم آمنہ سلام اللہ عليهم اجمعين
অর্থাৎঃ
‘হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপদমস্তক ছিলেন নূর। তাঁর নূর বা সৌন্দর্য প্রভায় দৃষ্টিশক্তি উল্টো যেন ফিরে আসত। তিনি যদি মানবীয় পোশাক পরিধান না করতেন, তবে কারো জন্য তাঁর সৌন্দর্য প্রভা উপলব্ধি করা সম্ভব হত না। তাঁর جوهر نورى ‘জাওহারে নূরী’ বা নূরানী জাওহার হযরত আদম আলাইহিস সালাম হতে শুরু করে হযরত আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু পর্যন্ত পবিত্র ঔরসে ও পবিত্র রেহেমে স্থানান্তরিত হয়ে চলে আসছিল।’
[সূত্রঃ আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী, মাদারেজুন নবুয়্যত: ১/১৩৭।]
আল্লামা ইসমাইল হাক্কী হানাফী বারুসাভী সূরা ফাতহের ১০ নং আয়াত- ان الذين يبايعونك انما يبايعون الله (হে হাবীব! নিশ্চয় যারা আপনার নিকট বায়‘আত হয়েছে, নিঃসন্দেহে তাঁরা আল্লাহরই নিকট বায়‘আত হয়েছে) এর তাফসীর করতে গিয়ে ইমাম ওয়াসেতী থেকে বর্ণনা করেন-
‘হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপদমস্তক ছিলেন নূর। তাঁর নূর বা সৌন্দর্য প্রভায় দৃষ্টিশক্তি উল্টো যেন ফিরে আসত। তিনি যদি মানবীয় পোশাক পরিধান না করতেন, তবে কারো জন্য তাঁর সৌন্দর্য প্রভা উপলব্ধি করা সম্ভব হত না। তাঁর جوهر نورى ‘জাওহারে নূরী’ বা নূরানী জাওহার হযরত আদম আলাইহিস সালাম হতে শুরু করে হযরত আব্দুল্লাহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু পর্যন্ত পবিত্র ঔরসে ও পবিত্র রেহেমে স্থানান্তরিত হয়ে চলে আসছিল।’
[সূত্রঃ আল্লামা শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী, মাদারেজুন নবুয়্যত: ১/১৩৭।]
আল্লামা ইসমাইল হাক্কী হানাফী বারুসাভী সূরা ফাতহের ১০ নং আয়াত- ان الذين يبايعونك انما يبايعون الله (হে হাবীব! নিশ্চয় যারা আপনার নিকট বায়‘আত হয়েছে, নিঃসন্দেহে তাঁরা আল্লাহরই নিকট বায়‘আত হয়েছে) এর তাফসীর করতে গিয়ে ইমাম ওয়াসেতী থেকে বর্ণনা করেন-
قال
الواسطي: أخبر الله بهذه الاية أن البشرية في نبيه عارية واضافة لاحقيقة
অর্থাৎঃ
‘ইমাম ওয়াসেতী বলেন, আল্লাহ পাক এ আয়াতে কারীমা দ্বারা জানিয়ে দিচ্ছেন যে, নিশ্চয় তাঁর নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাশারিয়াত বা মানবত্ব ক্ষণস্থায়ী এবং তা (পোষাক স্বরূপ) সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এটা (বাশারিয়াত) তাঁর মূল নয়।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৯/২১।]
আল্লামা ইসমাইল হাক্কী হানাফী বারুসাভী সূরা ‘আনকাবুতের ৪৮ নং আয়াত এর তাফসীর করতে গিয়ে আরো বর্ণনা করেন-
‘ইমাম ওয়াসেতী বলেন, আল্লাহ পাক এ আয়াতে কারীমা দ্বারা জানিয়ে দিচ্ছেন যে, নিশ্চয় তাঁর নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাশারিয়াত বা মানবত্ব ক্ষণস্থায়ী এবং তা (পোষাক স্বরূপ) সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এটা (বাশারিয়াত) তাঁর মূল নয়।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৯/২১।]
আল্লামা ইসমাইল হাক্কী হানাফী বারুসাভী সূরা ‘আনকাবুতের ৪৮ নং আয়াত এর তাফসীর করতে গিয়ে আরো বর্ণনা করেন-
انه
نور محض وليس للنور ظل وفيه اشارة الى انه افنى الوجود الكونى الظلى وهو نور متجسد
فى صورة البشر
অর্থাৎঃ
‘নিশ্চয় নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধুই নূর, আর নূরের ছায়া হয় না। এতে এদিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, নিশ্চয় তিনি কুনী ও যিল্লীর অস্তিত্ব ফানা করে দিয়েছেন। আর তিনি মানুষের আকৃতিতে নূরের শরীর বিশিষ্ট।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৬/৪৮০।]
আ‘লা হযরত শাহ্ ইমাম আহমাদ রেযা খান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-
‘নিশ্চয় নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুধুই নূর, আর নূরের ছায়া হয় না। এতে এদিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, নিশ্চয় তিনি কুনী ও যিল্লীর অস্তিত্ব ফানা করে দিয়েছেন। আর তিনি মানুষের আকৃতিতে নূরের শরীর বিশিষ্ট।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ৬/৪৮০।]
আ‘লা হযরত শাহ্ ইমাম আহমাদ রেযা খান রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-
اور
جو يہ كہے كہ رسول الله صلى الله عليه وسلم كى صورت ظاهرى بشرى ہے حقيقت باطنى
بشريت سے ارفع واعلى ہے يا كہ حضور اورون كى مثل بشر نہين وه سچے كہتاہے
অর্থাৎঃ
‘আর যে এটা বলবে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাহ্যিক সুরত বাশারী বা মানবীয় এবং বাতেনী হাকীকত হলো মানুষের চেয়ে অনেক উচ্চে-অতি উর্ধ্বে অথবা হুযুর অন্যান্যদের মত মানুষ নন, সে সত্য বলেছে।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়া: ৬/৬৭।]
‘মাকতুবাতে ইমামে রাব্বানী’ কিতাবে রয়েছে-
‘আর যে এটা বলবে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাহ্যিক সুরত বাশারী বা মানবীয় এবং বাতেনী হাকীকত হলো মানুষের চেয়ে অনেক উচ্চে-অতি উর্ধ্বে অথবা হুযুর অন্যান্যদের মত মানুষ নন, সে সত্য বলেছে।’
[সূত্রঃ আ‘লা হযরত, ফাতাওয়ায়ে রেজভীয়া: ৬/৬৭।]
‘মাকতুবাতে ইমামে রাব্বানী’ কিতাবে রয়েছে-
باید
دانست کہ خلق محمدی صلی اللہ علیہ وسلم دررنگ خلق سائر افراد انسانی نیست بلکہ
بخلقے ھیچے فردے از افراد عالم مناسبت نہ دارد کہ اوصلی اللہ علیہ وسلم باوجود
نشاء عنصری از نور حق جل واعل مخلوق گشتہ است کما قال علیہ الصلوۃ والسلام خلقت من
نور اللہ
অর্থাৎঃ
‘জেনে রাখা অতীব প্রয়োজন যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সৃষ্টি অপরাপর মানুষের মত নয়। এমনকি কুলকায়েনাত বা সমগ্র সৃষ্টি জগতের কেহই সৃষ্টির মধ্যে তাঁর সাথে কোন প্রকার সাদৃশ্য রাখে না। কেননা তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানবীয় দেহ বিশিষ্ট হয়ে জন্মগ্রহণ করলেও আল্লাহ জাল্লা শানুহুর নূর থেকে সৃষ্টি হয়েছেন। আল্লাহর হাবীব নিজেই ইরশাদ করেছেন- আমি আল্লাহর নূর থেকে সৃষ্টি হয়েছি।’
[সূত্রঃ মুজাদ্দিদে আলফেসানী, মাকতুবাত, মাকতুব নং- ১০০।]
মূল কথাতো এই যে, হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জাত (জিন্স) অন্যান্য সকল জাতী থেকে উচ্চ, এমনকি তিনি মানব জাতীরও মহান পিতা।
যেমন ইমাম কাসতালানী বলেন-
‘জেনে রাখা অতীব প্রয়োজন যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সৃষ্টি অপরাপর মানুষের মত নয়। এমনকি কুলকায়েনাত বা সমগ্র সৃষ্টি জগতের কেহই সৃষ্টির মধ্যে তাঁর সাথে কোন প্রকার সাদৃশ্য রাখে না। কেননা তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মানবীয় দেহ বিশিষ্ট হয়ে জন্মগ্রহণ করলেও আল্লাহ জাল্লা শানুহুর নূর থেকে সৃষ্টি হয়েছেন। আল্লাহর হাবীব নিজেই ইরশাদ করেছেন- আমি আল্লাহর নূর থেকে সৃষ্টি হয়েছি।’
[সূত্রঃ মুজাদ্দিদে আলফেসানী, মাকতুবাত, মাকতুব নং- ১০০।]
মূল কথাতো এই যে, হুযুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জাত (জিন্স) অন্যান্য সকল জাতী থেকে উচ্চ, এমনকি তিনি মানব জাতীরও মহান পিতা।
যেমন ইমাম কাসতালানী বলেন-
فهو
صلي الله عليه وسلم الجنس العالي علي جميع الأجناس والأب الأكبر لجميع الموجودات
والناس
অর্থাৎঃ
‘অতএব নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকল জাতী হতে (সকল জাতীর মধ্যে মানব জাতীও অন্তর্ভূক্ত) উচ্চ জাতী এবং সকল সৃষ্টি এমনকি মানুষেরও মহান পিতা।’
[সূত্রঃ ইমাম কাসতালানী, আল-মাওয়াহেবুল লাদুনিয়াহ: ১/৫৫।]
আর হুযুর পাকের মানবীয়তা (বশরীয়াত) স্থায়ীও নয়। যেমন পবিত্র মি‘রাজ রজনীতে আল্লাহর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাশারিয়াত ফানা হয়ে নূরের ওজুদ বিদ্যমান ছিল। আল্লামা ইসমাইল হাক্কী বলেন-
‘অতএব নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকল জাতী হতে (সকল জাতীর মধ্যে মানব জাতীও অন্তর্ভূক্ত) উচ্চ জাতী এবং সকল সৃষ্টি এমনকি মানুষেরও মহান পিতা।’
[সূত্রঃ ইমাম কাসতালানী, আল-মাওয়াহেবুল লাদুনিয়াহ: ১/৫৫।]
আর হুযুর পাকের মানবীয়তা (বশরীয়াত) স্থায়ীও নয়। যেমন পবিত্র মি‘রাজ রজনীতে আল্লাহর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাশারিয়াত ফানা হয়ে নূরের ওজুদ বিদ্যমান ছিল। আল্লামা ইসমাইল হাক্কী বলেন-
فانه
صلى الله عليه وسلم ما بقي مكان ولا في الامكان لانه كان فانيا عن ظلمة وجوده
باقيا بنور وجوده
অর্থাৎঃ
‘নিশ্চয় তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (মি‘রাজ রজনীতে) কোন স্থান বা সৃষ্টি জগতে সীমাবদ্ধ ছিলেন না। কেননা তিনি তখন তাঁর (মানব) অস্তিত্বের অন্ধকার অতিক্রম করে তাঁর নূরী অস্তিত্বে বিদ্যমান ছিলেন।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ১/৩৯৫।]
পরকালেও তাঁর বাশারীয়াত মোটেই থাকবে না। যেমন শাহ্ আবদুল আযীয মুহাদ্দিছে দেহলভী সূরা দ্বোহার وللاخرة خير لك من الاولى এ আয়াতে কারীমার তাফসীরে লিখেন-
‘নিশ্চয় তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (মি‘রাজ রজনীতে) কোন স্থান বা সৃষ্টি জগতে সীমাবদ্ধ ছিলেন না। কেননা তিনি তখন তাঁর (মানব) অস্তিত্বের অন্ধকার অতিক্রম করে তাঁর নূরী অস্তিত্বে বিদ্যমান ছিলেন।’
[তাফসীর সূত্রঃ আল্লামা হাক্কী, রুহুল বায়ান: ১/৩৯৫।]
পরকালেও তাঁর বাশারীয়াত মোটেই থাকবে না। যেমন শাহ্ আবদুল আযীয মুহাদ্দিছে দেহলভী সূরা দ্বোহার وللاخرة خير لك من الاولى এ আয়াতে কারীমার তাফসীরে লিখেন-
یعنی
والبتہ ہر حالت آخر بہتر باشد ترا از معاملت اول تا آنکہ بشریت ترا اصلا وجود
نماند وغلبۂ نور حق برتو علی سبیل الدوام حاصل شود
অর্থাৎঃ
‘আপনার জন্য ইহকাল থেকে পরকাল উত্তম। এমনকি পরকালে আপনার বাশারীয়াত বা মানবত্বের অস্তিত্ব (ওজুদ) বাকি থাকবে না বরং সদা সর্বদা আপনার উপর নূরে হকের প্রাধান্য থাকবে।’
[তাফসীর সূত্রঃ শাহ্ আবদুল আযীয মুহাদ্দিছে দেহলভী, তাফসীরে আযীযী: ২১৭।]
পরিশেষে বলব, আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অন্তভূর্ক্ত কারো পক্ষে এটা শোভা পায়না যে, হুযুর পাককে শুধু ‘বাশার-বাশার’ বলে সম্বোধন করবে, আর ‘জাতীতে মানব’ প্রমাণে পেরেশান হবে। বরং পবিত্র কুরআনে নবীগণকে বাশার বলে সম্বোধন করার চিরাচরিত অভ্যাসটা কাফেরদের বলে চিত্রায়ন করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে-
‘আপনার জন্য ইহকাল থেকে পরকাল উত্তম। এমনকি পরকালে আপনার বাশারীয়াত বা মানবত্বের অস্তিত্ব (ওজুদ) বাকি থাকবে না বরং সদা সর্বদা আপনার উপর নূরে হকের প্রাধান্য থাকবে।’
[তাফসীর সূত্রঃ শাহ্ আবদুল আযীয মুহাদ্দিছে দেহলভী, তাফসীরে আযীযী: ২১৭।]
পরিশেষে বলব, আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের অন্তভূর্ক্ত কারো পক্ষে এটা শোভা পায়না যে, হুযুর পাককে শুধু ‘বাশার-বাশার’ বলে সম্বোধন করবে, আর ‘জাতীতে মানব’ প্রমাণে পেরেশান হবে। বরং পবিত্র কুরআনে নবীগণকে বাশার বলে সম্বোধন করার চিরাচরিত অভ্যাসটা কাফেরদের বলে চিত্রায়ন করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে-
قالوا
ما انتم الا بشر مثلنا
অর্থাৎঃ ‘কাফেররা বলতো তোমরাতো আমাদেরই মতো মানুষ ভিন্ন অন্যকিছু নও।’
[সূরা ইয়াসিন: ১৫।]
আল্লাহ বিবেককে রাসূল প্রেমে স্থির রাখুন এবং রাসূলের শান অনুধাবনের তৌফিক দিন। আমিন! বিজা-হি ত্ব-হা- ওয়া ইয়া-সীন।
[সূরা ইয়াসিন: ১৫।]
আল্লাহ বিবেককে রাসূল প্রেমে স্থির রাখুন এবং রাসূলের শান অনুধাবনের তৌফিক দিন। আমিন! বিজা-হি ত্ব-হা- ওয়া ইয়া-সীন।
বুঝলাম। মিলাদকে অস্বীকার তো করা যাবে না, তার মানে এই না
যে মুসলমানের ঈদ তিনটা, আর তাকে আবার সকল ঈদের সেরা ঈদ বলে উম্মতের
মধ্যে বিবেধ সৃষ্টি করবে। হুজুর (সঃ) জীবনের প্রত্যেকটা মুহুর্ত আমাদের জন্য
শিক্ষা, কিন্তু আজকে আমরা হুজুর সঃএর জন্ম
নিয়েই তর্ক বিতর্ক করি। আসল উদ্দেশ্য
আমরা ভুলে গেছি। হুজুর (সঃ)এর জন্ম আরব দেশে, তবে কেন বাংলাদেশে হাজার হাজার পাকিস্তানের পতাকা
লাগিয়ে মিলাদুন্নবী পালন করা হয়? চাঁদা তুলে গরু মহিষ জবাই করে ডাকঢোল পিটিয়ে
মিলাদুন্নবী পালন করা হয়? দিনের বেলা বাদ দিয়ে রাত বারোটা থেকে মানুষের
আরামের ক্ষতি করে সারারাত ওয়াজ নসিহত করে
ওয়াহাবির মা বোন ধরে গালিগালাজ করে, ওয়াজ নসিহত রাতের বেলায় কেন, দিনের বেলায় করলে
ক্ষতি কি? সুস্ত মস্তিস্কে চিন্তা করলেই হয়, হাদিসের দলিল
লাগে না। ইসলামে কখনোই এগুলার বিধান দেবে না, স্বাভাবিক।