News: MAHFIL ROUTINE: 1. Yearly Mahfil a. Eid E Miladunnabi (Sallallahu Alaihi Wa Sallam)11Rabiul Aeull b. Eid E Miladul Wajeeh (Radhiallahu Anhu) 11jilkad 2. Monthly Mahfil a.The Holy Ashura b. The Akheri Chahar Somba c. Mi’rajunnabi (Sallahu Alaihi Wa Sallam)Night d. Lailatul Barat e. Lailatul Qadr f. 18th ramadan- Iftar Mahfil (Darbar’s) g. 18th Ramadan- Iftar Mahfil (RANI MA’s) h. 29th Zilhajj- (night) Khandakar Qari Mohammad AbulHashem (radhiallahu Anhu)’s Isal ESawab Mahfil i. 11th Rabius Sani (night)Fateha E Iyazdahm And Umme Hani (RANI MA) (RadiallahuAnha)’s Isal E Sawab Mahfil 3.Weekly Mahfil Every Thursday after ‘Isha- Zikr, Milad And Qiyam Mahfil Other Mahfils a. Salatul Jum’a b. Eid ul Fitr c. Eid ul Azha d. Afarafa Day Mahfils For Bangladesh Affairs Routine: a. Independence Day of Bangladesh, 26th March b. Victory Day of Bangladesh, 16th December c. International Mother Language Day and National Shaheed Day, 21th February d. Death Anniversary of Shahid President Ziaur Rahman, 30th May d. National Mourning Day and Death Anniversary of Father of the Nation Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, 15th August

Monday, September 14, 2020

‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ উদযাপন সুন্নাতে ইলাহী নবী করিম ﷺ 'র বিলাদতসহ তাঁর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করাই হলো ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ উদযাপনের মূল উদ্দেশ্য। আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআন মজীদে বিভিন্ন স্থানে নবী করিম এর বিলাদত সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন। ১.كَما أَرسَلنا فيكُم رَسولًا مِنكُم এভাবে আমি তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের জন্য একজন মহান রাসূল প্রেরণ করেছি। (সুরা বাকারাঃ ১৫১ নং আয়াত) ২.لَقَد مَنَّ اللَّهُ عَلَى المُؤمِنينَ إِذ بَعَثَ فيهِم رَسولًا مِن أَنفُسِهِم নিশ্চয়ই আল্লাহ তা'আলা মু'মিনদের উপর বড়ই ইহসান করেছেন যে, তাদেরই মধ্য থেকে একজন মহানরাসূল ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ প্রেরণ করেছেন। (সুরা আলে ইমরানঃ ১৬৪ নং আয়াত) ৩.يٰأَيُّهَا النّاسُ قَد جاءَكُمُ الرَّسولُ بِالحَقِّ مِن رَبِّكُم فَـٔامِنوا خَيرًا لَكُم ( হে লোক সকল! নিশ্চয় তোমাদের নিকট এই রাসূল তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে সত্য সহকারে আগমন করেছেন। অতএব তোমরা তোমাদের কল্যাণের জন্য তাঁর উপর ঈমান আন। (সুরা নিসাঃ আয়াত- ১৭০) ৪.يٰأَهلَ الكِتٰبِ قَد جاءَكُم رَسولُنا يُبَيِّنُ لَكُم كَثيرًا مِمّا كُنتُم تُخفونَ مِنَ الكِتٰبِ وَيَعفوا عَن كَثيرٍ قَد جاءَكُم مِنَ اللَّهِ نورٌ وَكِتٰبٌ مُبينٌ হে আহলে কিতাবগণ! নিশ্চয় তোমাদের নিকট আমার রাসূল ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ তাশরীফ নিয়েছেন, যিনি তোমাদের জন্য এমন অনেক কিছু প্রকাশ করবেন যা তোমরা কিতাব থেকে গােপন করে রেখেছ এবং অনেক বিষয়ে তিনি মার্জনা করবেন। তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি নূর এসেছে। এবং একটি সমুজ্জ্বল কিতাব এসেছে।(সুরা মায়েদা, আয়াতঃ১৫) ৫.يٰأَهلَ الكِتٰبِ قَد جاءَكُم رَسولُنا يُبَيِّنُ لَكُم عَلىٰ فَترَةٍ مِنَ الرُّسُلِ أَن تَقولوا ما جاءَنا مِن بَشيرٍ وَلا نَذيرٍ فَقَد جاءَكُم بَشيرٌ وَنَذيرٌ وَاللَّهُ عَلىٰ كُلِّ شَيءٍ قَديرٌ এ হে আহলে কিতাবগণ! তোমাদের কাছে আমার রাসূল : আগমন করেছেন। যিনি পয়গম্বরদের বিরতির পর তোমাদের কাছে পুঙ্খানুপুঙ্খ (বিধান) বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা একথা বলতে না পার যে, আমাদের কাছে কোন সুসংবাদদাতা ও ভীতিপ্রদর্শক আগমন করেন নি। অতএব তোমাদের কাছে সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শক এসে গেছেন। আল্লাহ সর্বময় শক্তির অধিকারী।(সুরা মায়েদা, আয়াত : ১৯) ৬.لَقَد جاءَكُم رَسولٌ مِن أَنفُسِكُم عَزيزٌ عَلَيهِ ما عَنِتُّم حَريصٌ عَلَيكُم بِالمُؤمِنينَ رَءوفٌ رَحيمٌ নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট তোমাদের মধ্য থেকে একজন মহান রাসূল আগমন করেছেন। তোমাদের দুঃখ কষ্ট তার কাছে দুঃসহ। তিনি তোমাদের মঙ্গলকামী,মুমিনদের প্রতি স্নেহশীল, দয়াময় ।(সুরা তাওবা,আয়াত:১২৮) ৭. وَما أَرسَلنٰكَ إِلّا رَحمَةً لِلعٰلَمينَ এ হে সম্মানিত রাসূল! আমি আপনাকে সমগ্র পৃথিবীবাসীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি।(সুরা আম্বিয়া, আয়াতঃ১০৭) ৮.هُوَ الَّذى بَعَثَ فِى الأُمِّيّۦنَ رَسولًا مِنهُم يَتلوا عَلَيهِم ءايٰتِهِ وَيُزَكّيهِم وَيُعَلِّمُهُمُ الكِتٰبَ وَالحِكمَةَ وَإِن كانوا مِن قَبلُ لَفى ضَلٰلٍ مُبينٍ তিনিই (আল্লাহ) যিনি উম্মীদের মধ্য থেকে একজন মহান রাসূল প্রেরণ করেছেন। যিনি তাদের নিকট পাঠ করেন তাঁর আয়াতসমূহ তাদেরকে পবিত্র করেন এবং শিক্ষা দেন কিতাব ও হেকমত। ইতিপূর্বে তারা ছিলঘোর পথভ্রষ্টতায় লিপ্ত।(সুরা জু'মা, আয়াত:০২) ৯. إِنّا أَرسَلنا إِلَيكُم رَسولًا شٰهِدًا عَلَيكُم كَما أَرسَلنا إِلىٰ فِرعَونَ رَسولًا হে মক্কাবাসীরা! আমি তোমাদের নিকট একজন মহান রাসূল প্রেরণ করেছি। (সুরা মুযাম্মিল, আয়াতঃ১৫) উপরোক্ত আয়াতসমূহে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা নবী করিম 'র মীলাদ তথা । শুভাগমনের আলোচনা করেছেন। আর তাঁর শুভাগমনের আলোচনাই হলো ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’। উদযাপনের কেন্দ্রবিন্দু। শবে ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ শবে কদর থেকে উত্তম ================ উস্তাযুল মুহাদ্দিসিন আল্লামা শেখ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী (রাঃ) তদীয় ‘মাসাবাতা মিনাসসুন্নাহ’ নামক কিতাবের ৭৭/৭৮ পৃষ্ঠায় লিখেন- اذا قلنا انه ولد ليلا فتلك الليلة افضل من ليلة القدر بلاشبهة لان ليلة المولودة ليلة ظهوره صلى الله عليه وسلم وليلة القدر معطاةله০ অর্থাৎ মীলাদ শরীফের রাত্রি শবে কদর হতে যে উত্তম তাতে সন্দেহের অবকাশ মাত্র নেই। কেননা মীলাদ শরীফের রাত আল্লাহর হাবিবের দুনিয়াতে আবির্ভূত হওয়ার রাত্রি এবং শবে কদর হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে আল্লাহ তা’য়ালা দান করেছেন। ইমাম কাস্তালানী ‘মাওয়াহিবে লাদুনিয়া’ নামক কিতাবের ১ম জিলদের ২৬/২৭ পৃষ্ঠায় শবে কদর হতে শবে ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ যে উত্তম এর তিনটি দলিল পেশ করেছেন- احدها ان ليلة المولود ليلة ظهو ره صلى الله عليه وسلم وليلة القدر معطاة له وما شرف بظهور ذات المشرف من اجله اشرف مما شرف بسبب ما اعطيه ولا نزاع فى ذلك فكانت ليلة المولودبهذا الاعتبار افضل০ الثانى ان ليلة القدر شرفت بنزول الملائكة فيها وليلة المولود شرفت بظهوره صلى الله عليه وسلم فيها ومن شرفت به ليلة المولود افضل ممن شرفت بهم ليلة القدر على الاصح المرتضى فتكون ليلة المولود افضل০ الثالث ان ليلة القدر وقع التفضل فيها على امة محمد صلى الله عليه وسلم وليلة المولود الشريف وقع التفضل فيها على سائر الموجودات فهو الذى بعثه الله عز وجل رحمة للعالمين فعمت به النعمة على جميع الخلائق০ অর্থাৎ ১ম দলিল- ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’এর রাতে আল্লাহর হাবিব এই পৃথিবীতে শুভাগমন করেছেন এবং কদরের রাত তাঁকে দান করা হয়েছে। আর ঐ বিষয়ে কোন বিতর্ক নেই, যে রাত তাঁকে দান করার কারণে সম্মানিত হয়েছে, সে রাত হতে ঐ রাত উত্তম যে রাতে স্বয়ং তিনি আগমন করার কারণে সম্মানিত হয়েছে। সুতরাং এই দৃষ্টিকোণ থেকে শবে ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ শবে কদর হতে উত্তম। ২য় দলিল- নিশ্চয় কদরের রাত সম্মানিত হয়েছে, ফেরেশতাগণ এই রাতে জমিনে অবতীর্ণ হওয়ার কারণে এবং ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’এর রাত সম্মানিত হয়েছে, এ রাতে স্বয়ং হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথিবীতে আগমন করার কারণে। যে রাত আল্লাহর হাবিবের আগমনের কারণে সম্মানিত হয়েছে, তা উত্তম ঐ রাত হতে, যে রাতে সম্মানিত হয়েছে ফেরেশতাগণ জমিনে অবতীর্ণ হওয়ার কারণে। এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত যে ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’এর রাত উত্তম। ৩য় দলিল- নিশ্চয় শবে কদরের ফজিলত শুধুমাত্র উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য খাস পান্তরে শবে মিলাদের ফজিলত সমস্ত মাখলুকাতের জন্য আম বা ব্যাপক। কেননা মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে আল্লাহ তা’য়ালা রাহমাতুল্লিল আলামিন (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ করে প্রেরণ করছেন। সবিস্তার আলোচনা (ক) সরকারে কায়েনাত আমার ও আমাদের প্রাণের আকা সাইয়্যিদুল মুরসালীন খাতামুন্নাবিয়্যিন রহমাতুল্লিল আলামীন শাফীউল মুজনিবীন শামসুল আরিফীন সিরাজুমমুনীর সাইয়্যিদুসসাকালাইন সাইয়্যিদুল কাওনাইন হাবীবুল্লাহ মাশুকুল্লাহ মাহবুবুল্লাহ তাজিদার-ই-মদীনাহ সরকার-ই-দূ’আলম নূর-ই-মুজাছছাম হাবীব-ই-কিবরিয়া নুরুন আলা নুর মোস্তাফ মুক্তাদা মুসাল্লা আহমদুল্লাহ মুন্তাহা মুজতাবা মাকরুনুন নুরুল হুদা মুবতাদা মুবাশ্শির বাশীর নাজীর মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাইয়্যিদিনা নাবীয়িনা শাফীয়িনা হাবীবিনা হুজুরে পরনুর (সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা দায়িমান আবাদা) যে রাতে হযরত আব্দুল্লাহ এবং হযরত আমিনা (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা)এর উসিলায় দুনিয়াতে তাশরিফ আনয়ন করেছিলেন সে রাতের নামই হলো ‘শবে মিলাদ’ বা মীলাদ শরীফের রাত এবং শবে মীলাদ আল্লাহর হাবিবের দুনিয়াতে তাশরিফ আনয়ন করার বদৌলতে সম্মানিত হয়েছে। পান্তারে ‘শবে কদর’ বা মহামূল্যবান রাত আল্লাহ পাক সরকারে কায়েনাত (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে দান করেছেন। প্রকাশ থাকে যে, ‘দানকৃত বস্তু’ যাকে দান করা হয়েছে, সে ব্যক্তি হতে উত্তম হতে পারে না বরং যাকে দান করা হয়েছে সে ব্যক্তিই ‘দানকৃত বস্তু’ হতে উত্তম হয়ে থাকেন। যেহেতু ‘শবে কদর’ আল্লাহর হাবিবকে দান করা হয়েছে, সেহেতু শবে কদর হল ‘দানকৃত’ এবং দানকৃত বস্তু (শবে কদর) হতে যাকে দান করা হয়েছে। (হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তিনি যে উত্তম তাতে সন্দেহের অবকাশ থাকতে পারে না। উত্তম জিনিসের প্রকাশ যেখানে হয় সে জায়গাই প্রকাশিত জিনিসের মর্যাদা অনুযায়ী সম্মান লাভ করে থাকে। যেমন পরশমণি। পরশমণি যেখানে ষ্পর্শ করে সেখানেই তো স্বর্ণরূপে পরিগণিত হয়ে যায়। সুতরাং ‘শবে মিলাদ’(যে রাত্রিতে স্বয়ং আমার ও আমাদের প্রাণের আকা সাইয়্যিদুল মুরসালীন খাতামুন্নাবিয়্যিন রহমাতুল্লিল আলামীন শাফীউল মুজনিবীন শামসুল আরিফীন সিরাজুমমুনীর সাইয়্যিদুসসাকালাইন সাইয়্যিদুল কাওনাইন হাবীবুল্লাহ মাশুকুল্লাহ মাহবুবুল্লাহ তাজিদার-ই-মদীনাহ সরকার-ই-দূ’আলম নূর-ই-মুজাছছাম হাবীব-ই-কিবরিয়া নুরুন আলা নুর মোস্তাফ মুক্তাদা মুসাল্লা আহমদুল্লাহ মুন্তাহা মুজতাবা মাকরুনুন নুরুল হুদা মুবতাদা মুবাশ্শির বাশীর নাজীর মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাইয়্যিদিনা নাবীয়িনা শাফীয়িনা হাবীবিনা হুজুরে পরনুর (সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা দায়িমান আবাদা) দুনিয়াতে আবির্ভূত হয়েছেন) শবে কদর (যে রাত্রিতে হুজুরকে দান করা হয়েছে) হতে উত্তম বলে প্রমাণিত হল। (খ) অসংখ্য ফেরেশতা জমিনে অবতীর্ণ হওয়ার দরুণ ‘শবে কদর’ সম্মান লাভ করেছে। পান্তরে সরকারে কায়েনাত (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দুনিয়াতে আবির্ভূত হওয়ার তোফায়েলে ‘মিলাদ শরীফের’ রাত সম্মানিত হয়েছে। দেখুন, জমিনে নূরনবীর আবির্ভাব ও ফেরেশতাগণের অবতরণ উভয়ের মধ্যে কত ব্যবধান! আল্লাহর হাবিব স্বশরীরে জীবিতাবস্থায় মদীনা তৈয়্যবাতে রওজা পাকে শায়িত আছেন, স্বশরীরে বিশ্বের সর্বত্র পরিভ্রমণ করে থাকেন, তাঁর শরীর মোবারকের সঙ্গে যে মাটি লাগান আছে সে মাটির মর্তবা (সম্মান) আল্লাহ পাকের আরশ হতেও অনেক গুণে বেশি। সুতরাং আমার ও আমাদের প্রাণের আকা সাইয়্যিদুল মুরসালীন খাতামুন্নাবিয়্যিন রহমাতুল্লিল আলামীন শাফীউল মুজনিবীন শামসুল আরিফীন সিরাজুমমুনীর সাইয়্যিদুসসাকালাইন সাইয়্যিদুল কাওনাইন হাবীবুল্লাহ মাশুকুল্লাহ মাহবুবুল্লাহ তাজিদার-ই-মদীনাহ সরকার-ই-দূ’আলম নূর-ই-মুজাছছাম হাবীব-ই-কিবরিয়া নুরুন আলা নুর মোস্তাফ মুক্তাদা মুসাল্লা আহমদুল্লাহ মুন্তাহা মুজতাবা মাকরুনুন নুরুল হুদা মুবতাদা মুবাশ্শির বাশীর নাজীর মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাইয়্যিদিনা নাবীয়িনা শাফীয়িনা হাবীবিনা হুজুরে পরনুর (সল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা দায়িমান আবাদা) যে রাতে আবির্ভূত হয়েছেন সে রাতের ফজিলত যে বেশি হবে, এতে কি সন্দেহের অবকাশ থাকতে পারে? কখনই না। (গ) আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর হাবিব (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে ‘কদরের রাত’ দান করেছেন, শুধুমাত্র উম্মতে মুহাম্মদীর উপর এহসান করার মানসে, সকল সৃষ্ট জীবের উপর নয়। পান্তরে মিলাদ শরীফের রাত্রিতে শুধু উম্মতে মুহাম্মদীর উপরই নয় বরং সমস্ত সৃষ্ট জীবের উপর এহসান করেছেন, কেননা হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)এর সিফত বা গুণ ‘রাহমাতুল্লিল আলামিন’ অর্থাৎ আল্লাহর হাবিব সমস্ত সৃষ্টির জন্য রহমত, এ কারণেই আল্লাহর নিয়ামত আসমান ও জমিনের সমস্ত সৃষ্টির উপর আম (একরূপ) হয়ে গিয়েছে। সুতরাং মীলাদ শরীফেল রাতে আল্লাহ পাক আম রহমত করেছেন, সেহেতু শবে মিলাদ শবে কদর হতে উত্তম বলে বিবেচিত হয়েছে। আশরাফ আলী থানবী তার কিতাব হেকায়াতে আউলিয়াতে লিখেছে ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ না হলে কালিমা শরীফই হতো না। দেওবন্দ সিলসিলার অন্যতম আশরাফ আলী থানবীর অন্যতম সংকলন কিতাব হচ্ছে এই কিতাবে ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ পাঠ বিষয়ে একখানা ঘটনা আছে যাদ্বারা স্পষ্ট বুঝতে পারবেন মূল দেওবন্দ সিলসিলার লোকেরা ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ সর্ম্পকে কি ধারনা রাখতো। উক্ত কিতাবে কি উল্লেখ আছে নিজেরাই দেখে নিন, “এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলো, আপনাদের ওখানে কি মীলাদ শরীফ পাঠ করা হয়?তিনি বললেন, প্রতিদিনই পাঠ করা হয়। তিনি কালেমা শরীফ পাঠ করে বললেন,যদি মীলাদ শরীফ না হয়, তাহলে এ কালেমা শরীফ হলো কিভাবে। তিনি বললেন, যদি আউলিয়ায়ে কিরাম উনাদের আলোচনা করলে রহমত বর্ষণ হয়, তাহলে ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ পাঠ করলে কি হবে? সুবহানাল্লাহ বর্তমানে যারা দেওবন্দী পরিচয় দেয় তারা কি মূলত দেওবন্দী? যদি হতো তবে আকাবীরদের বিরোধী কেন? তবে কি ছদ্মবেশে বর্তমানে কেউ বা কারা দেওবন্দ সিলসিলা হিসাবে নিজেদের পরিচয় দিচ্ছে?মূলত তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন কিছু প্রমাণ করা বা মুরুব্বীদের বির্তকিত করা? ইবনে বতুতার কিতাবে পবিত্র মক্কা মদিনায় ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ পালন ঐতিহাসিক ও বিশ্বপরিব্রাজক ইবনে বতুতা (জন্ম ৭০৩ হিজরী- ৭৭৯ হিজরী) তিনি স্বীয় চোখে পবিত্র মক্কা শরীফে মহাসমারোহে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পালন হতে দেখেছেন। তিনি বর্ণনা করেন, قاضى مكة العالم الصالح العابد نجم الدين محمد الامام العالم محيى الدين الطبرى رحمة الله عليه وهو فاضل كثير الصدقات والمواساة للمجاورين حسن الأخلاق كثير الطواف والمشاهدة للكعبة الشريفة يطعم الطعام الكثير فى المواسم المعظمة وخصوصاً فى مولد رسول الله صلى الله عليه وسلـم فانه يطعم فيه شرفاء مكة وكبراءها وفقراءها وخدام الحرم الشريف وجميع المجاورين وكان سلطان مصر الملك الناصر رحمة الله عليه يعظمه كثيراً وجميع صدقاته وصدقات امرائه تجرى على يديه অর্থ: পবিত্র মক্কা শরীফ উনার সম্মানিত কাজী বা বিচারক নাজমুদ্দীন মুহম্মদ ইবনে ইমামুল আলম মুহিউদ্দীন আত্ব-ত্বিবরী (রহমতুল্লাহি আলাইহি) তিনি হলেন একজন নেককার, ইবাদতগুজার আলিম। তিনি হলেন সম্মানিত, অধিক দানশীল, প্রতিবেশীদের জন্য সমব্যাথী বা সাহায্যকারী, উত্তম চরিত্রের অধিকারী, সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার অধিক তাওয়াফকারী ও পর্যবেক্ষণকারী। তিনি (উক্ত কাজী বা বিচারক) বিভিন্ন মওসুমে, বিশেষ করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উনার সুমহান বিলাদত শরীফ এর সময় তিনি (মানুষকে) প্রচুর পরিমাণে খাদ্য খাওয়াতেন। এ বরকতময় সময়ে তিনি পবিত্র মক্কা শরীফ উনার সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ, নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, ফক্বীর-ফুক্বারা, সম্মানিত হেরেম শরীফের খাদিমবর্গ এবং পবিত্র মক্কা শরীফের অধিবাসী ও অসহায় ব্যক্তিদের প্রচুর পরিমাণে খাদ্য খাওয়াতেন। আর মিশরের সুলতান মালিক নাছিরুদ্দীন (রহমতুল্লাহি আলাইহি) তিনি পবিত্র মক্কা শরীফের উক্ত সম্মানিত কাযীকে অধিক সম্মান করতেন এবং তিনি সমস্ত দান-সদক্বা ও অধীনস্থ আমীর-উমারাগণের সমস্ত দান-সদক্বা উনার হাতে অর্পণ করতেন। (রিহলাতু ইবনে বতুতা: ১৬৯ পৃষ্ঠা) যারা আজ বলে থাকে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পালন নতুন আমল। তারা মক্কা শরীফে পালনের এ দলীলকে কি বলবে? ঐ সময়ে পবিত্র মক্কা শরীফের অধিবাসীদের বিদয়াতী বলবে? ‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’ সম্পর্কে ইবনে কাসীরের অভিমত ইসলাম নতুন নয়; পুরাতন। মীলাদ উন নাবী (صلى الله عليه و آله وسلم) সম্পর্কে কতিপয় অভিমত : ইমাম ইবনে কাসীর রহমতুল্লাহি আলাইহি’র দৃষ্টিতে আরবলের বাদশাহ সুলতান সালাউদ্দিন আইয়্যুবীর ভগ্নিপতি হযরত মুজাফফর (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)। ইবনে কাসীর (রহমতুল্লাহি আলাইহি), যাকে সালাফী / ওহাবীরা তাফসীর ও ইতিহাস শাস্ত্রে সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা করে থাকে। ______________________ প্রকৃতপক্ষে ইবনে কাসীর লিখেন: অর্থ: “বাদশা হযরত মুজাফফরুদ্দীন ইবনে যাইনুদ্দীন আবু সাঈদ (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) তিনি দানশীল ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের অন্যতম ছিলেন। সাথে সাথে তিনি সম্মানিত বাদশাও ছিলেন। উনার বহু পূন্যময় কাজের আলামত এখনও বিদ্যমান রয়েছে।” গ্রন্থ সূত্র : *_* আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১৩ তম, খন্ড ১৩৬ পৃষ্ঠা। তিনি আরো লিখেন : অর্থ: আরবলের বাদশা হযরত মালিক মুজাফফরুদ্দীন ইবনে যাইনুদ্দীন (রহমতুল্লাহি আলাইহি) তিনি প্রতি বছর পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উপলক্ষে তিন লক্ষ দিনার ব্যায় করতেন।” গ্রন্থ সূত্র : *_* আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ১৩ তম, খন্ড ১৩৭ পৃষ্ঠা। তিনি লিখেন : أحد الاجواد والسادات الكبراء والملوك الامجاد له آثار حسنة وقد عمر الجامع المظفري بسفح قاسيون وكان قدهم بسياقه الماء إليه من ماء بذيرة فمنعه المعظم من ذلك واعتل بأنه قد يمر على مقابر المسلمين بالسفوح وكان يعمل المولد الشريف في ربيع الاول ويحتفل به احتفالا هائلا وكان مع ذلك شهما شجاعا فاتكا بطلا عاقلا عالما عادلا رحمه الله وأكرم مثواه وقد صنف الشيخ أبو الخطاب ابن دحية له مجلدا في المولد النبوي سماه التنوير في مولد البشير النذير فأجازه على ذلك بألف دينار وقد طالت مدته في الملك في زمان الدولة الصلاحية وقد كان محاصر عكا وإلى هذه السنة محمودالسيرة والسريرة قال السبط حكى بعض من حضر سماط المظفر في بعض الموالد كان يمد في ذلك السماط خمسة آلاف راس مشوى وعشرة آلاف دجاجة ومائة ألف زبدية وثلاثين ألف صحن حلوى অর্থঃ “(মুযাফফর শাহ) ছিলেন একজন উদার/সহৃদয় ও প্রতাপশালী এবং মহিমান্বিত শাসক, যাঁর সকল কাজ ছিল অতি উত্তম। তিনি কাসিইউন-এর কাছে জামেয়া আল-মুযাফফরী নির্মাণ করেন…..(প্রতি) রবিউল আউয়াল মাসে তিনি জাঁকজমকের সাথে মীলাদ শরীফ (‘পুতপবিত্র ঈদ-ই-মীলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)’) উদযাপন করতেন। উপরন্তু, তিনি ছিলেন দয়ালু, সাহসী, জ্ঞানী, বিদ্বান ও ন্যায়পরায়ণ শাসক – রাহিমুহুল্লাহ ওয়া একরাম – শায়খ আবুল খাত্তাব (রহমতুল্লাহি আলাইহি) সুলতানের জন্যে মওলিদুন্ নববী সম্পর্কে একখানি বই লিখেন এবং নাম দেন ‘আত্ তানভির ফী মওলিদ আল-বাশির আন্ নাযীর’। এ কাজের পুরস্কারস্বরূপ সুলতান তাঁকে ১০০০ দিনার দান করেন। সালাহিয়া আমল পর্যন্ত তাঁর শাসন স্থায়ী হয় এবং তিনি ’আকা’ জয় করেন। তিনি সবার শ্রদ্ধার পাত্র থেকে যান।” আস্ সাবত্ এক ব্যক্তির কথা উদ্ধৃত করেন-যিনি সুলতানের আয়োজিত মওলিদ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন; ওই ব্যক্তি বলেন: ‘অনুষ্ঠানে সুলতান ভালভাবে রান্নাকৃত ৫০০০ ছাগল, ১০,০০০ মোরগ, ১ লক্ষ বৌল-ভর্তি দুধ এবং ৩০,০০০ ট্রে মিষ্টির আয়োজন করতেন’।” গ্রন্থ সূত্র : *_* ’তারিখে ইবনে কাসীর’, ‘আল-বেদায়াহ ওয়ান্ নেহায়া’ ১৩তম খণ্ড, ১৭৪ পৃষ্ঠা। অনুরূপ বিবরণ জগৎ বিখ্যাত পূর্বেকার উম্মতের ইমামগনের বিখ্যাত যত গ্রন্থ “সীরাতে শামী, সীরাতে হালবীয়া, সীরাতে নববীয়া ও যুরকানী” ইত্যাদিতে ও বিদ্যমান আছে।

No comments:

Post a Comment